মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে তিনদিনের পৌষমেলা শুরু

বিবিএনিউজ.নেট   |   শনিবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২০   |   প্রিন্ট   |   285 বার পঠিত

রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে তিনদিনের পৌষমেলা শুরু

নতুন প্রজন্মের সঙ্গে বাঙালির কৃষ্টি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্প আর বাংলার বাহারি স্বাদের পিঠার পরিচয় করিয়ে দিতে রাজধানীতে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী পৌষমেলা।

আজ শনিবার সকালে যন্ত্রসংগীত বাদনের মধ্য দিয়ে বাংলা একাডেমির নজরুল চত্বরে মেলাটির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। মাটির ‘আইলা’ জ্বালিয়ে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। এসময় সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘প্রার্থী’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন রফিকুল ইসলাম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী আমাদের জীবনকে সহজ করতে গিয়ে সংস্কৃতিগুলোকে যেন হারিয়ে না ফেলি, তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের জীবন সহজ করতে গিয়ে বাসা-বাড়িতে পিঠা-পুলি বানানো অনেকটা ছেড়েই দিয়েছি। কিন্তু এগুলো আমাদের ঐতিহ্য। সেখান থেকে ফিরে আসলে আমাদের ছেলে-মেয়েরা ঐহিত্য-সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে না। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে, জীবন সহজ করতে গিয়ে আমরা আমাদের সংস্কৃতিগুলো যেন হারিয়ে না ফেলি।

বাঙালি জীবনে পৌষমেলার প্রভাব রয়েছে উল্লেখ করে মেলা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, সংস্কৃতি বাঙালির মেরুদণ্ডের মতো। হাজার বছরের এ ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে আমাদের এর পরিচর্যা করতে হবে। ঋতুভিত্তিক বিভিন্ন আয়োজন ও উৎসব সারাদেশে ছড়িয়ে দিলে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সঙ্গে আরও বেশি করে পরিচিত হবে আমাদের ছেলে-মেয়েরা। তাই আমাদের উচিত বাঙালির প্রকৃত মূল্যবোধ, চেতনা, জীবনবোধ নগরজীবনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিতে আয়োজনের মাধ্যমে তুলে ধরা। সেদিক থেকে এমন মেলার গুরুত্ব অনেক বেশি।

গ্রাম এবং শহর একই সুতোয় বাঁধা উল্লেখ করে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, আমাদের গ্রাম এবং শহরের মধ্যে আলাদা কিছু নেই। আমরা যেন সেখানে প্রভেদ না করি। আমাদের সন্তানেরা আজ যে স্ন্যাকস, স্যান্ডুইচ, বার্গারের ভিড়ে আমাদের পিঠা-পুলিগুলো ভুলতে বসেছে, এটা আমাদেরই দোষ। আমাদের উচিত তাদের সেগুলোর সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পৌষমেলা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি ঝুনা চৌধুরী, বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ফকির আলমগীর এবং বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘ঢেকি নাচে দাপুর-ধুপুর’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়। এরপরই ফেরদৌসি কাকলী গেয়ে শোনান ‘পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে, আয় আয় আয়’ গানটি।

এসময় আরও নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যম, স্পন্দন ও নৃত্যজন। দলীয় সংগীত পরিবেশনে ছিল উদীচী, নিবেদন, বহ্নিশিখা এবং সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী।

এছাড়া একক সংগীত পরিবেশন করেন বিশ্বজিৎ রায়, আবু বকর সিদ্দিক, শারমিন শখী ময়না, আবিদা রহমান সেতু এবং নবনীতা জাইদ চৌধুরী। আবৃত্তি করেন লায়লা আফরোজ এবং মুক্তধারা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র।

মেলা উপলক্ষে একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে চলছে দেশীয় পিঠা-পুলির প্রদর্শনীও। বিভিন্ন স্টলে রয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী পাটিসাপটা, তালবড়া, বিবিখানা, মেন্ডা, মোরা, ঝিনুক, দুধ চিতই, জামাই পিঠা, বউ পিঠা, ভাপা পিঠা, পুলি, পাকান, খেঁজুর পিঠা, মালপোয়াসহ নানা স্বাদের পিঠা। আছে পায়েস আর ফিরনিও।

প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলেব। সঙ্গে থাকবে থাকবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও। মেলা শেষ হবে সোমবার।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১২:৪৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।