বুধবার ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ

পান্না কুমার রায় রজত   |   বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই ২০২২   |   প্রিন্ট   |   253 বার পঠিত

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ

গত ৩০ জুন ২০২২ কেন্দ্রিয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন বিদায়ী গভর্নর ফজলে কবির। করোনা পরবর্তী চাহিদা ও ডলারের দাম বৃদ্ধি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় সব পণ্যের দামই উর্ধ্বমূখী থাকায় দেশেও মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে। আর উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রার কষ্ট বাড়ছে।
মুদ্রানীতি অনেক পুরনো বিষয় হলেও অনেকেই প্রশ্ন করে মুদ্রানীতির মাধ্যমে আসলে কী হয়। মুদ্রানীতির কাজটাই বা কী? মুদ্রানীতি দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে মুদ্রানীতির আরেকটা কাজ হলো দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা। মূলত, বাংলাদেশ ব্যাংক পরিস্থিতি মুল্যায়ণ করে খোলাবাজার কার্যক্রম, সংবিধিবদ্ধ জমার অনুপাত পরিবর্তনসহ ব্যাংক রেট পরিবর্তনের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। মুদ্রানীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে। প্রবৃদ্ধি বাড়লে সাধারণ মানুষের আয় রোজগার বাড়বে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি যদি বেশি হয় তাহলে সাধারণ মানুষের প্রকৃত ব্যয় বেড়ে যাবে। অর্থনীতির ভাষায় মুদ্রানীতির মূল লক্ষ্য দুটি। তা হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং জিডিপির প্রবৃদ্ধিকে তরান্বিত করা বা এগিয়ে নিতে সহায়তা করা। বাজারে অতিরিক্ত মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে গেলে মুদ্রাস্ফীতি হয়, প্রথমত মুদ্রার মান কমে যায় এবং মুদ্রা দূর্বল হয়ে পড়ে। মুদ্রার যোগান নিয়ন্ত্রণ করাকেই মুদ্রানীতির মূল শর্ত। মূল্যস্ফীতির প্রধান কারণই হচ্ছে মুদ্রা বা অর্থের যোগান তাই অর্থের যোগান নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই অনেকাংশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

অর্থনীতিবিদদের মতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাই এবারের মুদ্রানীতির মূল কাজ। বৈশি^ক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বর্তমানে আমেরিকায় ৯ দশমিক ১ শতাংশ, রাশিয়ায় ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ, ব্রিটেনে ৮ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৩ শতাংশ মূল্যস্ফীতি রয়েছে। প্রতিবেশী ভারত ও নেপালের মূল্যস্ফীতিও আমাদের প্রায় কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে। যে কারণে বলা যায় বাংলাদেশ অনেকটাই নিরাপদ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, চলতি বছরের মে মাসে খাদ্য পণ্যের মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ছিল ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ । নানা কারণে মুদ্রানীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ করা।

২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য জাতীয় বাজেটে সরকার জিডিপিতে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ ধরে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে। নতুন মুদ্রানীতিতে তিনটি নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এগুলো হলো চাহিদাজনিত মূল্যস্ফীতির চাপ প্রশমনের পাশাপাশি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্ঠিকারী খাতে ঋণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে নীতি সুদহার বা রেপোর রেট ৫ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সুরক্ষিত রাখতে আমদানি বিকল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নতুন পূনঃঅর্থায়ন স্কিম চালু করা এবং বিলাস দ্রব্য, বিদেশি ফল, অপ্রয়োজনীয় পণ্য যেমন-অশস্য খাদ্যপণ্য, টিনজাত ও প্রক্রিয়াজাত পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে এগুলোর এলসি মার্জিন উল্লেখ্যযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা।

কেন্দ্রিয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে যে হারে ঋণ দেয় তাকে ব্যাংক রেট বলে। ব্যাংক রেট বৃদ্ধি করলে বাণিজ্যিক ব্যাংক যে ঋণ প্রদান করে তার সুদ হারও বৃদ্ধি করে এতে বিনিয়োগ ঋণ ও ভোগ ঋণের পরিমাণ হ্রাস পেয়ে অর্থের যোগান হ্রাস পায়। আবার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তার মূলধনের একটি নির্দিষ্ঠ অনুপাত কেন্দ্রিয় ব্যাংকে জমা রাখে যা নগদ জমার অনুপাত বলে। কেন্দ্রিয় ব্যাংকের নির্দেশে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নগদ জমার অনুপাত বৃদ্ধি করলে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণদানের ক্ষমতা সংকুচিত হয়। ফলে অর্থের যোগান হ্রাস পায়। সরকার কেন্দ্রিয় ব্যাংকের মাধ্যমে খোলাবাজার কার্যক্রমের মাধ্যমে জনসাধারণ বা ব্যাংকগুলোর কাছে ঋণপত্র বিক্রয় করে বাজার থেকে নগদ অর্থ তুলে নেয়। ফলে অর্থের যোগান হ্রাস পায়। কেন্দ্রিয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণ দানের নির্দিষ্ট ক্ষেত্র স্থির করে দিতে পারে ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণ প্রদান সংকুচিত হয় এবং অর্থের যোগান হ্রাস পায়। তবে রেপো রেটের হার বাড়লে দেশের অর্থনীতির গতি কিছুটা মন্থর হয়ে য়ায়। মূলধন বিনিয়োগে ভাটা পড়ে ব্যবসার পরিধি প্রসারিত হয় না। নতুন উদ্যোক্তারা প্রজেক্ট শুরু করতে পারে না। কারণ, যে পরিমাণ অর্থের দরকার পড়ে সেই পরিমাণ অর্থ তখন বাজারে মজুদ থাকে না। এমতাবস্থায়, অর্ন্তভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। অর্ন্তভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি হলো এমন এক অর্থনৈতিক উন্নয়ন যা সমাজের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ন্যায়সঙ্গত সুযোগ করে দেয় এবং স্থানীয় ও সামগ্রিক পর্যায়ের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হয়। উদাহরণস্বরূপ-কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন অন্য দেশের চেয়ে বেশি কিন্তু এ ক্ষেত্রে নিম্নবিত্তের অবস্থার উন্নয়ন ঘটছে না তাই সেই দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলেও সমষ্টি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটেনি। আর তাই সমন্বিত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সরকারের কেন্দ্রিয় ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে।

চলমান কোভিড-১৯ অতিমহামারীর অভিঘাত রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট থেকে উদ্ভুত পরিস্থিতি ও বৈশি^ক সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়ায় আমদানিভিত্তিক মূল্যস্ফীতির কারণে দেশে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির যে উর্ধ্বগতি তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তাই আমাদের কৃষি জমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। দেশজ পণ্য ব্যবহারে বেশি উৎসাহিত করতে হবে। তবে মূল্যস্ফীতি যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে তার জন্য সরকার ইতোমধ্যে বিলাসবহুল পণ্য আমদানি যাতে কম হয় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
ব্যাংকে সঞ্চয়ের উপর সুদের হার বৃদ্ধি বা প্রচারাভিযান চালিয়ে জনসাধারণের সঞ্চয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে। কিংবা বাধ্যতামূলক সঞ্চয় চালু করতে পারে। যেমন-সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের মূলবেতনের একটি নির্দিষ্ঠ হারে অর্থাৎ বর্তমানে ২৫% আছে তা আরো বাড়ানো যেতে পারে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার দ্রব্যমূল্যের সর্বোচ্চসীমা বেঁধে দিতে পারে এবং ভোগ্যদ্রব্য সরবরাহ ও রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে পারে। যেমন-অনেক সময় খোলাবাজারে চাল বিক্রয় করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আমরা জানি, যোগানের চেয়ে চাহিদা বেশি হওয়াতে মূল্যস্ফীতি ঘটে। এই জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্যের উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে হবে। কম চাহিদাকৃত দ্রব্য উৎপাদন হ্রাস করে বেশি চাহিদাকৃত দ্রব্য উৎপাদনে উৎসাহিত করতে হবে। দেশকে টেকসই উন্নয়নের দিকে ধাবিত করে দেশের প্রবৃদ্ধির সুফল যেন সব শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে সমানভাবে ভাগ হয় তার ন্যায্য ও ন্যায় সঙ্গত বন্টন নিশ্চিত করতে হবে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার যে সর্বজনীন পেনশন চালুর ঘোষণা দিয়েছে তা অতি বাস্তবসম্মত। সংকোচনমূখী মুদ্রানীতিতে খুব সহায়ক হবে। কারণ এতে নাগরিকগণ সঞ্চয়ে সমৃদ্ধ হবে এবং দেশে পুঁজি সংঘটিত হবে। বিলাসদ্রব্য যেমন-বিদেশী ফল, অশস্য খাদ্যপণ্য, টিনজাত ও প্রক্রিয়াজাত পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে সরকার ৭৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত মার্জিন আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। এতে ডলারের ওপর চাপ কমবে যার প্রেক্ষিতে সুরক্ষিত থাকবে রিজার্ভ ও মুদ্রার বিনিময় হার।

মূল্যস্ফীতির ফলে বিদেশীদের নিকট আমাদের দেশের পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে। ফলে রপ্তানি হ্রাস পাবে এবং আমদানি বৃদ্ধি পাবে। মূল্যস্ফীতির ফলে ভোক্তা সঞ্চয় হ্রাস করে ভোগ ব্যয় বৃদ্ধি করে। ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য ভোক্তা যে সঞ্চয় করে তার মূল্যমান হ্রাস পাওয়ায় ভোক্তাকে সঞ্চয় করতে নিরুৎসাহিত করে। আর্থিক বাজারের তহবিল বৃদ্ধির জন্য সঞ্চয় খুবই জরুরি। এর ফলে বিনিয়োগকারী মূলধনী দ্রব্য ও প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করার জন্য ঋণ গ্রহণে সাহায্য করে। প্রযুক্তি এবং মূলধনী দ্রব্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেলে দীর্ঘকালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটে। কিন্তু মূল্যস্ফীতি ভোগ ব্যয় বৃদ্ধি করে যা সঞ্চয়কে নিরুৎসাহিত করে। ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি হ্রাস পায়।

মানুষ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে অর্থ হাতে রাখে। কেউ দ্রব্য ও সেবা ক্রয়ের জন্য অর্থ হাতে ধরে রাখে কেউ ব্যাংকে সঞ্চয়ের জন্য হাতে ধরে রাখে। কেউ শেয়ার বা বন্ডে বিনিয়োগের জন্য অর্থ হাতে ধরে রাখে। একটি নির্দিষ্ট সময়ে দেশের জনগণ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে যে পরিমাণ নগদ অর্থ হাতে ধরে রাখতে চায় তাই হচ্ছে অর্থের চাহিদা। অর্থের চাহিদা বিভিন্ন বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয় । যেমন- আয় স্তর, সুদের হার, দাম স্তর, প্রভৃতি। আয় স্তর বাড়লে জনগণ লেনদেনের উদ্দেশ্যে বেশি অর্থ হাতে ধরে রাখে। সুদের হার বাড়লে জনগণ ব্যাংকে সঞ্চয় বাড়ায় ফলে হাতে কম টাকা ধরে রাখে। পণ্যের দাম বাড়লে নির্দিষ্ট জীবনযাত্রার মান ধরে রাখার জন্য বেশি অর্থ হাতে ধরে রাখতে হয়। তাই সরকারকে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ঘোষিত সরকারের লক্ষ্যমাত্রার ভিত্তিতে নতুন মুদ্রানীতিতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ঋণ যোগানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাতে সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ যা গতবার ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ ছিল। আর বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ যা গতবার ছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। সব মিলিয়ে মোট অভ্যন্তরীন ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ যা ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মানে হল নতুন অর্থবছরে সরকারি খাতের ওপর ভর করে অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি বিনিয়োগ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করতে আমদানির বিকল্প পণ্য দেশে উৎপাদনের জন্য সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত করার পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে মসলাজাতীয় পণ্য, তৈলবীজ, দুধ, কৃষিপণ্য উৎপাদনে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হচ্ছে।

বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার কমাতে হবে। অন্যান্য আমদানির চাপের কারণে বিনিময় হার বেড়ে গেছে যার প্রভাবও মুদ্রাস্ফীতির ওপর পড়েছে। সে জন্য আমদানি কিভাবে কমানো যায় তা ভাবতে হবে। বিবিএস তথ্য মোতাবেক, মূল্যস্ফীতি আমাদের গরিব মানুষদের জন্য স্বস্তিদায়ক না। দেশে মে মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে মূল্যস্ফীতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। যা বছর শেষে আমরা বুঝতে পারব।

সরকার বাজেটে যে নীতি ও উন্নয়ন কর্মসূচী ঠিক করে তা বাস্তবায়নের জন্য সহায়ক আর্থিক পরিবেশ সৃষ্টি এবং নির্দিষ্ট সময়ে বাজারে অর্থের প্রবাহ ঠিক রাখাই মুদ্রানীতির লক্ষ্য। এমনভাবে এই নীতি তৈরি হয় যা অর্ন্তভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণের পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব হয়। কেন্দ্রিয় ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে উৎপাদন ক্ষমতার কর্মসংস্থান সৃষ্টি। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। এতে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে টাকার অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক মান অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি ও বিনিময় হারকে স্থিতিশীল রাখাই হবে মুদ্রানীতির মূল চ্যালেঞ্জ।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:৩৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই ২০২২

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।