শনিবার ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হুন্ডি ও অর্থপাচার রিজার্ভের জন্য অশনিসঙ্কেত

পান্না কুমার রায় রজত   |   বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২২   |   প্রিন্ট   |   220 বার পঠিত

হুন্ডি ও অর্থপাচার রিজার্ভের জন্য অশনিসঙ্কেত

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের একটি আলোচিত ইস্যু রিজার্ভ সংকট। রিজার্ভ সংকটের কারণে ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে। রিজার্ভ সংকটের জন্য রফতানি থেকে আমদানি বেশি হওয়ার পাশাপাশি আলোচিত হচ্ছে দেশ থেকে টাকা পাচার ও বিদেশ থেকে অবৈধ পথে দেশে টাকা পাঠানোর বিষয়টি। আর এই কর্মকাণ্ডের মধ্যে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে হুন্ডির নাম। বিদেশে টাকা পাচার এবং বিদেশ থেকে অবৈধভাবে দেশে রেমিট্যান্স ঢুকছে মূলত হুন্ডির মাধ্যমে। রেমিট্যান্স হচ্ছে একটি দেশের অর্থনীতির প্রাণ। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতির ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছে তা মোকাবিলার জন্য অত্যন্ত তৎপর সরকার। হুন্ডি সবসময় রিজার্ভের জন্য চ্যালেঞ্জ। অবৈধভাবে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার এবং দেশের বাইরে অবস্থানরত প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে স্থানীয় মুদ্রায় মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে একশ্রেণির ব্যক্তিরা মানিলন্ডারিং অপরাধ করে আসছে।

রিজার্ভ নিঃসন্দেহে একটি দেশের অর্থনীতির মাপকাঠির অন্যতম সূচক। যার মাধ্যমে একটি দেশ তার আমদানি ব্যয়, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ প্রভৃতি আনুষঙ্গিক ব্যয় মিটিয়ে থাকে। বাংলাদেশে রিজার্ভের পরিমাণ মূলত নির্ভর করে রফতানি আয় ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর। সে দিক থেকে বিবেচনা করলে রিজার্ভ ব্যবহার করে শেষ করা যতোটা সহজ, বৃদ্ধি করা ততোটাই কঠিন। প্রচলিত ব্যাংকিং চ্যানেলে বিদেশ থেকে ডলার আনলে বা ডলার এনে ঘোষণা দিলে সেটা বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারে যোগ হয়। কিন্তু অনুমোদিত চ্যানেলের বাইরে দেশে অর্থ আসলে রিজার্ভে জমা হয় না। আবার অবৈধ আয়, চাঁদাবাজি বা তদবিরে আয় করা অর্থ বা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ সাধারণত দেশ থেকে পাচার হয়। এ ছাড়া রফতানি মূল্য কম দেখিয়ে আমদানি মূল্য বেশি দেখিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করা হয়।

ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি বা জিএফআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় সোয়া ৪ লাখ কোটি টাকার মতো। গবেষণায় দেখা যায়, সংঘবদ্ধ চক্র প্রবাসে বাংলাদেশিদের উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে তা দেশে না পাঠিয়ে এর সমপরিমাণ অর্থ স্থানীয় মুদ্রায় পরিশোধ করে। অপরাধীরা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাজটি করে থাকে। প্রথম গ্রুপ বিদেশে অবস্থান করে প্রবাসীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে এবং দেশ থেকে যারা টাকা পাচার করতে চায় তাদের দেয়। দ্বিতীয় গ্রুপে আছে অর্থপাচারকারী ও তাদের সহযোগীরা। তারা দেশীয় মুদ্রায় উক্ত অর্থ এমএফএস এজেন্টদের প্রদান করে। তৃতীয় গ্রুপ তথা এমএফএস এজেন্টরা বিদেশে অবস্থানকারীর নিকট হতে প্রাপ্ত এমএফমএস নম্বরে দেশীয় মুদ্রায় মুল্য পরিশোধ করে। এসব চক্র প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে এমএফএস ব্যবহার করে ক্যাশ-ইনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হুন্ডি করছে। তাদের সহযোগিতায় পাচারকারীরা বিদেশে স্থায়ী সম্পদ অর্জনসহ অনলাইনে মাদক, ক্যাসিনো, স্বর্ণ চোরাচালানসহ প্রচুর অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছে। দেশে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের জন্য দেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক দেশের মানি এক্সচেঞ্জ বিদেশি ব্যাংক ও হুন্ডির রেট ভিন্ন ভিন্ন। ব্যাংকের বিনিময় হারের তুলনায় হুন্ডিতে ভালো বিনিময় মূল্য পান বলেই প্রবাসীরা হুন্ডিতে টাকা পাঠানোর দিকে আগ্রহী হন। এমনকি সরকার ঘোষিত প্রনোদনার পরও হুন্ডিতে অনেক বেশি বিনিময় মূল্য পেয়ে থাকেন প্রবাসীরা। এজন্যই ব্যাংকের বদলে হুন্ডির দিকে ঝুঁকছে তারা। আবার অগ্রিম আয়কর হুন্ডিকে উসকে দিচ্ছে। সরকার কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিয়ে রফতানি আয় দেশে আসলে অগ্রিম আয়কর বা এআইটি কেটে রাখে। ফলে রফতানি আয়ের একটা অংশ বিদেশে রাখতে কিংবা পরবর্তী আমদানির জন্য ডলার বা বৈদেশিক মুদ্রা না ভাঙানোর ঝোঁক দেখান ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ আছে অগ্রিম আয়কর বা এআইটি থেকে বাঁচতে ব্যবসায়ীরা বিদেশি ক্রেতাদের যোগসাজশে রফতানির এলসি মূল্যমান কম দেখিয়ে বাকি টাকাটা হুন্ডির মাধ্যমে দেশে আনেন। দেশে আসা বৈদেশিক মুদ্রাগুলো সরাসরি ডলার হিসেবে জমা হয় না। যখন বৈদেশিক মুদ্রা আসে, তখন এর বিপরীতে গ্রাহককে বাংলাদেশি মুদ্রা তথা টাকা সরবরাহ করা হয়। এ কারণে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে যায়। এই মুদ্রা সরবরাহ যদি দেশে উৎপাদিত পণ্যের চেয়ে বেশি হয় তখন মুদ্রাস্ফীতি ঘটে। রিজার্ভ পরিমাণ স্থিতিশীল রাখতে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ আবশ্যক।
রিজার্ভের জন্য আরেকটি বড় ধরনের ঝুঁকি হচ্ছে অর্থপাচার। টেন্ডার প্রক্রিয়া বা প্রকিউরমেন্টে বেশি দরে বিদেশ থেকে পণ্য কেনাকাটায় দুর্নীতি, অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে জিনিসপত্র আমদানির মাধ্যমে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা আবার বাইরে চলে যায়। তাই বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবহার যথাযথ হওয়া জরুরি। না হলে আমাদের অর্থনীতিতে কিছু লোক তাদের রিজার্ভ বৃদ্ধির সুযোগ নিবে। আমদানি খরচ বৃদ্ধি ও প্রবাসী আয় কমে যাওয়ায় দেশে মার্কিন ডলারের চরম সংকট তৈরি হয়েছে। গত বছরের তুলনায় রফতানি আয় কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও তা ডলারের সংকট মেটাতে পারছে না। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডলারের দাম। এ জন্য রিজার্ভ থেকে ডলার ছেড়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রিজার্ভের পরিমাণ হ্রাসের লাগাম টেনে ধরা নিঃসন্দেহে একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। সরকার এই বিষয়ে তৎপর। দেশের অর্থনীতির একমাত্র সূচক যে রিজার্ভের পরিমাণ তা নয় তথাপি এর পরিমাণ স্থিতিশীল রাখা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই বিষয়টি অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে। রিজার্ভের ক্ষেত্রে বড় ঝুঁকি হচ্ছে মূল্যস্ফীতি, অর্থপাচার এবং ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া। তাই ঝুঁকি মোকাবিলায় দরকার যথাযথ রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা। আবার অনেক ব্যবসায়ী ব্যাংকের সাহায্যে রফতানির নামে বিদেশ থেকে শুল্ক সুবিধায় কাঁচামাল এনে তা স্থানীয় বাজারে বিক্রির মাধ্যমে মুনাফা লুটে নেয়। শুল্ক রেয়াতি সুবিধাভুক্ত ব্যাক টু ব্যাক এলসির ক্ষেত্রে পণ্য রফতানির বাধ্যবাধকতা থাকলেও অনেক কোম্পানি কোনো পণ্যই রফতানি করেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে এ তথ্য প্রকাশ হয়েছে। এমনকি গ্রাহকের কারখানায় আমদানিকৃত কাঁচামাল বা তা থেকে প্রস্তুতকৃত পণ্যের মজুদ ও খুঁজে পায়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংক এলসির মাধ্যমে আমদানির দায়িত্ব নিয়ে থাকে। তবে এ জন্য আইন ও শর্ত মানতে হয়। ব্যাংকের প্রথম ও মৌলিক দায়িত্ব হলো কোনো প্রতিষ্ঠানের এলসি খোলার আগে প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, লাইসেন্স নবায়ন ও মেয়াদের হালনাগাদ অবস্থা প্রভৃতি যাচাই করা। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির কর, ভ্যাট ও ব্যবসা সনদ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জেনে নেয়া। আর বন্ডের ওয়্যারহাউজ হলে সেই সংক্রান্ত সনদ ও মেয়াদ, কারখানার অবস্থানের খোঁজ নেয়া ও উৎপাদিত পণ্য নিয়মিত তদারকি করা। ব্যাংকের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে এলসির পণ্য দেশে আসছে কিনা, নাকি শুধু টাকা বিদেশে যাচ্ছে অথচ কোনো পণ্য আসছে না। সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে। এর কারণ ও হুন্ডি। হুন্ডির প্রকোপে আমাদের দেশের রেমিট্যান্স আমরা হারিয়ে ফেলছি। বিষয়টা হচ্ছে যে, হুন্ডি এত জনপ্রিয় কেন? বা প্রবাসীরা হুন্ডিতে টাকা পাঠাতে এত আগ্রহী কেন? দেখা যায় যে, বিদেশ থেকে আনা মুদ্রা বিক্রি করতে গেলে ব্যাংকে অনেক সময়ই বিনিময় মূল্য কম পাওয়া যায়। ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কাগজপত্র চাওয়া হয়। বিপরীতে হুন্ডি এজেন্টরা প্রবাসীদের পাঠানো টাকা বাসায় পৌঁছে দেয়। শুধু তাই নয় হুন্ডি ছাড়া টাকা পাঠাতে পারেন না অবৈধভাবে অবস্থানরত প্রবাসীরা। বিদেশে বাংলাদেশের অনেক প্রবাসী শ্রমিকেরই বৈধ কাগজ নেই। ফলে তারা নিজেদের ডকুমেন্ট দিয়ে ব্যাংকে লেনদেন করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে দেশে টাকা পাঠাতে তাদের সহজ সমাধান হুন্ডি। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি সম্প্রতি জানিয়েছে, বিভিন্ন মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো অন্তত পাঁচ হাজার এজেন্ট অবৈধ উপায়ে বিদেশ থেকে অর্থ আনা ও বিদেশে অর্থ পাঠানোর সঙ্গে জড়িত। তাদের মাধ্যমে চার মাসে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার প্রবাসী আয় বিতরণ হয়। এভাবে দেশ বছরে প্রায় ৭৮০ কোটি মার্কিন ডলার বা ৭৫ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের মতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। ব্যবসা বাণিজ্য, শিল্প উৎপাদন, স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ, হাসপাতাল স্থাপনসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে এ অর্থ ব্যয় হয়। এছাড়া রেমিট্যান্স আয়ের প্রায় ৬৩ শতাংশ ব্যয় হয় দৈনন্দিন খরচের খাতে। এতে ওই পরিবারগুলোর দারিদ্র্য দূর হচ্ছে।

২০২১-২২ অর্থবছরের শুরুতে প্রবাসী আয় কিছুটা হ্রাস পেতে শুরু করায় বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোর উৎসাহ দিতে সরকার প্রণোদনার হার ০.৫ শতাংশ বাড়িয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২.৫ শতাংশ নির্ধারণ করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মোতাবেক, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৬৩৯ কোটি ডলার। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে খোলা হয় যথাক্রমে ৬৬২ কোটি ও ৬৫১ কোটি ডলারের এলসি। অক্টোবরে তা ৪৭৪ কোটি ডলারে নেমে আসে। চলতি নভেম্বর মাসে ১৬ দিনে (১ থেকে ১৬ নভেম্বর) ১৭০ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের এলসি খুলেছেন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ কম। তবে বর্তমানে অভ্যন্তরীন ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আমদানি কমাকে দেশের অর্থনীতির জন্য মঙ্গল হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা। আমদানি কমলে ডলারের বাজারও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

রিজার্ভের পরিমাণকে স্থিতিশীল রাখতে সরকারও যথেষ্ট তৎপর। উদাহরণস্বরূপ, বিলাসবহুল পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিতকরণ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ সফরের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ, পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ, বিদেশে দক্ষ জনশক্তি প্রেরণ, প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের তথ্য মোতাবেক ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ৯ লাখের মতো মানুষ বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছে যার সুফল হয় তো আমরা খুব দ্রুতই পাবো। নানা উদ্যোগ নেয়ার পরও প্রবাসী আয়ে গতি ফেরেনি। নভেম্বর ২০২২ মাসের প্রথম ২৫ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৪ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার। দেশীয় মূদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৬ টাকা ৫০ পয়সা ধরে) যার পরিমাণ ১৪ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ চিত্র পাওয়া যায়। বৈধভাবে প্রবাসী আয় ধারাবাহিকভাবে কমছে। অর্থনীতির অন্যতম এ সূচকটির নেতিবাচক গতি দেশের অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক। তবে রেমিট্যান্স বৈধ পথে আনতে আরও পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। এ জন্য সরকারের আরো আকর্ষনীয় উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। সে জন্য প্রবাসী মন্ত্রণালয়কে সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আরো বাড়বে। হুন্ডি প্রতিরোধে সরকার নানা সময়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সম্প্রতি সারাদেশের ব্যাংকগুলোর শাখায় শাখায় নগদ ডলারসহ বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ফলে গ্রাহকরা যে কোনো শাখায় গিয়ে চাহিদা অনুযায়ী ডলার কেনাবেচা করতে পারবেন। ডলার যদি বৈধপথে আসে, তাহলে দেশের ব্যাংকগুলো ডলার পায় রিজার্ভ বাড়ে। আমদানির ক্ষেত্রে সেই ডলার খরচ করা সম্ভব হয়। হুন্ডির কারণে রেমিট্যান্সের অর্থপ্রবাসীদের পরিবার পেলে ও দেশে আসে না ডলার। বরং উল্টো পাচার হয়ে যায় অর্থ। এখন যে সংকট চলছে সেটিও এতো প্রকট হয়ে উঠত না হুন্ডি প্রতিরোধ করা সম্ভব হলে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন টেকসই করার পথে বড় বাধা হলো হুন্ডি ও অর্থপাচার। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট ও আসন্ন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নানা পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের সকলকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্ব স্ব ক্ষেত্রে কাজের নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে হবে।

 

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:৪৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২২

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।