শুক্রবার ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সবাই দায়িত্ববান হলে অগ্নি দুর্ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব : তাজুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ০৪ মে ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   66 বার পঠিত

সবাই দায়িত্ববান হলে অগ্নি দুর্ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব : তাজুল ইসলাম

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, অতিরিক্ত জনসংখ্যা ও পর্যাপ্ত নাগরিক সুবিধার অভাবে ঢাকা বসবাসের যোগ্যতার মাপকাঠিতে নিম্নগামী। তিনি বলেন, বসবাসযোগ্য ঢাকা নির্মাণে এই শহরের জনসংখ্যা এবং তাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করতে হবে।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন,‘ আমরা চাইলে মুহুর্তেই একটা আইন তৈরি করতে পারি, কিন্তু এটি করার আগে অনেকবার ভাবতে হয়। তাছাড়া এটি প্রয়োগ করতে হবে। আমরা যদি প্রত্যেকে যার যার অবস্থান থেকে কার কী দায়িত্ব সেটা বুঝে নিয়ে কাজ করি, তাহলে অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে।’

বৃহস্পতিবার (৪ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ‘বারবার অগ্নি দুর্ঘটনার কারণ : প্রতিকারে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পালের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল মামুনের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, ঢাকা ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী কামরুল হাসান, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক লে. কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক মো. রাজু আহমেদ ,জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ।

স্থানীয় সরকার বলেন, অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনা ইংল্যান্ড আর সিঙ্গাপুরেও হয়। কিন্তু তারা এগুলো মূল্যায়ন করে, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখে। ফলে এখন দুর্ঘটনা কমে আসছে। আমাদের সমস্যা হলো বিল্ডিং ভেঙে পড়লে মালিককে জেলে দেওয়া হয়, এটা কেন? সে তো দোষী নয়। সে তো একজন ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে কাজটি করেছে। সে তো তার দায় দায়িত্ব ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়ে দিয়েছে। একটা ভবন করতে গেলে অনেক ব্যক্তির সম্পৃক্ততা থাকে। তাদের প্রত্যেকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। অভিযোগ উঠেছে ভবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রাংশ অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী। এই প্রোডাক্ট কারা তৈরি করে আর সেগুলোর রেগুলেটর বিএসটিআই কীভাবে দেয়, সেগুলো খতিয়ে দেখতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন পাঁচ হাজার লোক ঢাকায় আসছে উন্নত জীবনের জন্য। গ্রামে তাদের জন্য সুযোগ সুবিধা দিতে পারলে তারা ঢাকায় আসতেন না। এ দেশ আমাদের সকলের, তাই এ দেশটিকে বাসযোগ্য আরও উন্নত করতে সবাইকে কাজ করতে হবে।

রাজউকের চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, আর্বান রি-জেনারেশন প্রজেক্টটি পুরান ঢাকায় করতে চাই। বুড়িগঙ্গার পাড়ে যেকোনো স্থানে ৩০০ একর জায়গায় একটা পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলা হবে। সেখানে পার্ক, লেক, সড়ক, পুকুর, খেলার মাঠসহ সবকিছু থাকবে। তাছাড়া পূর্বাচলে ৪৫০ বিঘার একটা বন আছে, এটি রক্ষা করতে আমরা চেষ্টা করছি। ১ জুন থেকে ভবনের নকশা জমা দেওয়ার সময় আর্কিটেকচারাল নকশা, ইলেক্ট্রিক্যাল নকশা অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থার নকশাসহ জমা দিতে হবে।
ঢাকা ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, ঢাকায় আমাদের ৪১টি ওয়াটার হাইড্রেন আছে। যার কাজ শুধু লরিতে পানি সরবরাহ করা। পানি ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করার জন্য আমরা বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভির ডিফেন্স পরিচালক লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী, অগ্নিকাণ্ড ঘটে মূলত অসচেতনতার কারণে। এজন্য ব্যবসায়ী ও মালিক সবাইকে পদক্ষেপ নিতে হবে। অগ্নি নিরোধকের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ আছে আর বিভিন্ন প্রক্রিয়া আছে। বিভিন্ন অটোমেশন ব্যবস্থা আছে। যথাযথ প্রক্রিয়ায় অনুসরণ করলে অগ্নিকাণ্ড কমানো যাবে। তিনি বলেন, ঢাকায় জলাশয়ের সংখ্যা কমে গেছে। ২০১৮ সালে ঢাকা শহরে ১০০টি বড় পুকুর ছিল। এখন সেটি ২৯টিতে নেমে এসেছে। তাছাড়া বিদ্যুৎ রিলেটেড বিষয় থেকে অগ্নিকাণ্ড বেশি হয়। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ কম দামের পণ্যে আগ্রহী। এ নিম্নমানের বৈদ্যুতিক পণ্যের কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে।

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, মার্কেট ও বড় ভবনগুলো একটি বড় সার্ভের মাধ্যমে হওয়া দরকার। অগ্নিঝুঁকি কমানোর জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা করা যায়। আমরা চাইলেও রাতারাতি মার্কেটগুলো উচ্ছেদ করতে পারব না। ঢাকা শহরে পুকুরগুলোকে খনন করে উদ্ধার করতে হবে।
বুয়েটের অধ্যাপক মো. রাজু আহমেদ বলেন, আমাদের দেশের অগ্নিদুর্ঘটনার অন্যতম বড় কারণ বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট বা বৈদ্যুতিক সামগ্রী। কারণ আমাদের ভবন নির্মাণের সময় যারা বৈদ্যুতিক কাজ করেন তাদের জ্ঞান কম। তারা দেখে কাজ শেখা লোক। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রশিক্ষণ নেই। এছাড়া আমারা যেসব বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহার করি সেগুলোর মান কম। যার কারণে শর্ট সার্কিটের মতো ঘটনা ঘটছে এবং অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে। যেসব বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহার করা হয়, সেগুলো নিম্নমানের। যার কারণে শর্ট সার্কিটের মতো ঘটনা ঘটছে এবং অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৭:০১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৪ মে ২০২৩

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।