শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

করোনাত্তোর বাংলাদেশ : বীমা অর্থনীতি পুনর্গঠনে সমস্যা ও করণীয়

এস এম নুরুজ্জামান   |   বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল ২০২০   |   প্রিন্ট   |   578 বার পঠিত

করোনাত্তোর বাংলাদেশ : বীমা অর্থনীতি পুনর্গঠনে সমস্যা ও করণীয়

সারা বিশ্বের মতো করোনায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। করোনার বিস্তার ঠেকাতে সরকার ২৫ এপ্রিল (৫ মে সর্বশেষ) পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। হাতে গোনা কিছু শিল্পকারখানা ছাড়া বেশির ভাগেরই চাকা ঘুরছে না। কর্মহীন বিপুলসংখ্যক মানুষ এখন গৃহবন্দী। এরই মধ্যে অর্থনীতিতে তার নানামুখী প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তবে করোনায় অর্থনীতিতে কতটা ক্ষত তৈরি হবে, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে না পারলেও এ ক্ষত যে শিগগিরই কাটবে না, সে ব্যাপারে একমত অর্থনীতিবিদগণ ও ব্যবসায়ীরা।

করোনার প্রভাব শুরুর আগে প্রবাসী আয় ভালোই ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে এর বিস্তার ঘটতে থাকায় প্রবাসী আয় আসা কমে গেছে। ইতিমধ্যে অনেক শ্রমিক দেশে চলে আসছেন। যাঁরা বিদেশে আছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই কাজ হারাবেন। কারণ, করোনার কারণে সব দেশেই মন্দা আসবে। ফলে অর্থনীতির সব সূচক আরও খারাপ হয়ে পড়বে। করোনার কারণে চাহিদা ও সরবরাহ দুটোই সমস্যায় পড়েছে। মানুষের হাতে টাকা নেই, তাই তাঁরা বীমা কিনবেন কম। অতি প্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া কেউ কেনাকাটা করবে না। ফলে আমাদের যে রপ্তানি বাজার, তা আর স্বাভাবিক থাকবে না।

আগে দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ বেশ ভালো ছিল। কিন্তু করোনার প্রভাবে সেটা এখন কমে যেতে পারে। ফলে কর্মসংস্থানে একটা বড় চাপ সৃষ্টি হবে, যা ইতিমধ্যে তা শুরু হয়ে গেছে। দেশের প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। অর্থাৎ মোট বিনিয়োগের ৮৫ শতাংশই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। করোনার কারণে ব্যবসায়ীদের লভ্যাংশ কমে যাবে, অনেকে ব্যবসা ছোট করে আনবেন। ফলে অনেকেই চাকরি হারাবেন। এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, করোনা আক্রান্ত সব দেশে পরিস্থিতি একই হবে।

করোনার কারণে বীমার অর্থনীতির যে বিপর্যয়, সেটি কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে সারা পৃথিবীর দেশগুলোর তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লেগে যেতে পারে। আমরা অর্থনীতির চাকা যত দ্রুত সচল করতে পারব, ততই ভালো। এখানে অর্থনৈতিক ও সামাজিক দুটো বিষয় রয়েছে। যারা বীমা কমিশন কাজ করেন তাঁদের সরাসরি অর্থ প্রদান করতে হবে, যাতে তাঁরা খাবার ছাড়া অন্য জিনিস কিনতে পারেন। কিছুটা চাঙা হবে।

এসময় সরকার বীমা কোম্পানিগুলোতে প্রণোদনা দিলে তার একটা ইতিবাচক প্রভাব বীমাতে পড়বে। সব মিলিয়ে আমাদের বীমা অর্থনীতির সামষ্টিক ব্যবস্থাপনা ঠিক করতে হবে। বীমার অর্থনীতির পুনর্গঠন হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। মনে রাখতে হবে, এটা সিডর বা আইলার মতো সমস্যা নয়। অনেক বড় সংকটে আমরা। এই সংকটকালে সবাইকে সঙ্গে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।

সাধারণ ছুটি শেষে ক্ষতি পোষাতে যে সিদ্ধান্ত ইতিবাচক ফল আনতে পারে-

১। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা।
২। প্রতিদিন অতিরিক্ত এক ঘন্টা অফিস করা।
৩। শুধুমাত্র ঈদের দিন বন্ধ রাখা।
৪। কোন প্রকার ছুটি প্রদান না করা। যেমন সিএল, ইএল, মেডিকেল ইত্যাদি।
৫। অফিস ভাড়ার উপর ভ্যাট ও ট্যাক্স মওকুফ করা।
৬। এজেন্ট কমিশনের উপর ট্যাক্স মওকুফ করা।
৬। লাইসেন্স নবায়ন ফি মওকুফ করা।
৭। মুদ্রন সামগ্রী সরবরাহের উপর ভ্যাট ও ট্যাক্স মওকুফ করা।
৮। স্ট্যাম্প ফী হ্রাস করা।

যদি উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো নেয়া হয় তবে কিছুটা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে বীমা খাতে অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা কাটিয়ে উঠতে আরও সময় ও বৃহৎ পরিকল্পনার প্রয়োজন  হবে।

 

 

লেখক: মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা
জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:০৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।