বিবিএনিউজ.নেট | ০৮ মে ২০১৯ | ১১:০২ পূর্বাহ্ণ
মাল্টিসোর্সিং লিমিটেডকে একীভূতকরণে হাইকোর্টের কাছ থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে কেঅ্যান্ডকিউ (বাংলাদেশ) লিমিটেড। একীভূতকরণ স্কিমটি অনুমোদন করে ১১ মার্চ হাইকোর্টের পক্ষ থেকে রায় দেয়া হলেও গতকাল কোম্পানির কাছে আদালতের আদেশের সার্টিফায়েড কপি এসে পৌঁছেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশনা অনুসারে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে কেঅ্যান্ডকিউ। একীভূতকরণ স্কিম অনুসারে মাল্টিসোর্সিংয়ের ১০০ টাকা ফেসভ্যালুর একটি শেয়ারের বিপরীতে কেঅ্যান্ডকিউর ১০ টাকা ফেসভ্যালুর ২ দশমিক শূন্য ৮টি শেয়ার ইস্যু করা হবে।
জানতে চাইলে কেঅ্যান্ডকিউর কোম্পানি সচিব পার্থ প্রতিম দাস বলেন, গত বছর মাল্টিসোর্সিংকে একীভূতকরণের জন্য উচ্চ আদালতের অনুমোদন চেয়ে আমরা আবেদন করেছিলাম। তখন উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে একীভূতকরণ প্রস্তাবে ঋণদাতা ও শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। আমরা ঋণদাতা ও শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিয়ে বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেছি। সবকিছু বিবেচনা করে উচ্চ আদালত এ বছরের ১১ মার্চ একীভূতকরণ স্কিম অনুমোদন করে রায় দিয়েছেন। এখন আদালতের নির্দেশনা অনুসারে আমরা একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করব।
উভয় কোম্পানির মধ্যে শেয়ার হস্তান্তরের বিষয়ে তিনি বলেন, মাল্টিসোর্সিংয়ের ১০০ টাকা ফেসভ্যালুর একটি শেয়ারের বিপরীতে কেঅ্যান্ডকিউর ১০ টাকা ফেসভ্যালুর ২ দশমিক শূন্য ৮টি শেয়ার ইস্যু করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১০ জুন মাল্টিমোড গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মাল্টিসোর্সিংকে একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত নেয় কেঅ্যান্ডকিউর পর্ষদ। এরপর আদালতে আবেদন করা হলে ১২ আগস্ট একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমোদন দেয় হাইকোর্ট বিভাগ। ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের ২২৮ ও ২২৯ নং আইনের অধীনে একীভূতকরণের এ আবেদন করে কোম্পানি।
এর আগে একীভূত করতে কোম্পানির সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন করে কেঅ্যান্ডকিউ। মেসার্স মাহফেল হক অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের পুনর্মূল্যায়নে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত এ কোম্পানির সম্পদের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৫৮ কোটি ৪৭ লাখ ৯৫ হাজার ৮৭৩ টাকা। এ সম্পদের বুকভ্যালু হচ্ছে ১৩ কোটি ৮১ লাখ ৩৪ হাজার ৭২৩ টাকা। এ সময় কোম্পানির রিভ্যালুয়েশন সারপ্লাস দাঁড়িয়েছে ৪৪ কোটি ৬৬ লাখ ৬১ হাজার ১৫০ টাকা।
সবশেষ প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে তিন প্রান্তিকে (জুলাই ১৮-মার্চ ১৯) কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ৬৫ পয়সা, যেখানে আগের বছরের একই সময় ছিল ৬৯ পয়সা। ৩১ মার্চ কোম্পানির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৭৬ টাকা ৮৯ পয়সা।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ জুন নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে কেঅ্যান্ডকিউ’র কর পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৪৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।
জানা গেছে, তত্কালীন বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থার (বিএসআরএস) আর্থিক ও কোরীয় এসটিসি করপোরেশনের কারিগরি সহায়তায় আশির দশকে দেশে ড্রাইসেল ব্যাটারির কার্বন রড উৎপাদন শুরু করে কেঅ্যান্ডকিউ। পরবর্তীতে আলকাতরাও উৎপাদন করেছে কোম্পানিটি। একসময় দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানিও করত কোম্পানিটি। তবে তথ্যপ্রযুক্তির উদ্ভাবনের পর ড্রাইসেল ব্যাটারি ও আলকাতরার ব্যবহার কমে আসায় ধারাবাহিক লোকসানের কারণে কয়েক বছর আগেই কারখানা বন্ধ করে কেঅ্যান্ডকিউ। এরপর ২০১৬ সালের শুরুতে কারখানার জমির একটি অংশ দুবাইভিত্তিক সিজে ফুড অ্যান্ড বেভারেজকে ১৫ বছরের জন্য ইজারা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। বাকি জমিতে কোম্পানির একটি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন স্থাপন করা হয়।
১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কেঅ্যান্ডকিউ দীর্ঘদিন ধরে লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বর্তমানে জেড ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। বর্তমানে কোম্পানির মোট শেয়ারের ২৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, প্রতিষ্ঠান ৩ দশমিক ৮৪ ও বাকি ৭২ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে কেঅ্যান্ডকিউর শেয়ার সর্বশেষ গতকাল ২৫৬ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ১৫৬ টাকা ১০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ২৬৩ টাকা ৩০ পয়সা।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০২ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৮ মে ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed