নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২ | প্রিন্ট | 78 বার পঠিত
সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে বিচারাধীন অর্থপাচারের এক মামলায় অসংগতি দূর করতে পুনরায় অধিকতর তদন্তের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা আছে দুবাইয়ে ‘অফশোর কোম্পানি’ চালু করে বাংলাদেশ থেকে ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাচার করা হয়। এ মামলায় মোসাদ্দেক আলী ফালুুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
কিন্তু বিচারিক আদালতে এ মামলার দাখিল করা চার্জশিটে (তদন্ত প্রতিবেদনে) কিছু তথ্য উপাত্ত্বের ঘাটতি খুঁজে পেয়েছে দুদক। তাই মামলাটি অধিকতর তদন্ত করা প্রয়োজন। ফলে দুদকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিচারিক আদালতে এ আবেদন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ সৈয়দ কামাল হোসেনের আদালতে এ আবেদন করেন দুদকের আইনজীবী মীর আহম্মদ আলী সালাম। আগামী ১ ডিসেম্বর এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী মীর আহম্মদ আলী সালাম। তিনি বলেন, দুদক তদন্ত প্রতিবেদনে কিছু ঘাটতি খুঁজে পাওয়া গেছে। তাই মামলাটি অধিকতর তদন্ত করা প্রয়োজন এবং অনুমতির জন্য এ আবেদন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ফালুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করেন আদালত। এসময় ফালু পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত। পুলিশ তাকে খুঁজে না পাওয়ায় পত্রিকায় প্রজ্ঞাপন প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ২৪ মার্চ ফালুকে পলাতক দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পত্রিকায় প্রজ্ঞাপন প্রকাশের নির্দেশ দিন আদালত। মামলার অপর দুই আসামি আরএকে সিরামিকস লিমিটেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এ কে ইকরামুজ্জামান এবং স্টার সিরামিকস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান। তারা দুজনই জামিনে আছেন।এর আগে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে ফালুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হয়। দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
দুদকের চার্জশিটে বলা হয়, মোসাদ্দেক আলী ফালু, একরামুজ্জামান ও আনোয়ারুজ্জামান ২০১০ সালে দুবাইয়ে আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ও থ্রি-স্টার লিমিটেড মিলে ডেভেলপমেন্ট ইউএই নামে অফশোর কোম্পানি খোলেন। এরপর তারা বাংলাদেশে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা দুবাইয়ে পাচার করেন। দুবাইয়ে ওই অর্থ উপার্জনের কোনো উৎস তারা দেখাতে পারেননি।২০১৯ সালের ১৩ মে উত্তরা পশ্চিম থানায় ফালু ও অন্য তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুবাইয়ে ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করে দুদক। দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দুবাইয়ে পাচার করা ওই অর্থ উপার্জনের কোনো উৎস তারা দেখাতে পারেননি। ওই অর্থ কীভাবে উপার্জন করা হয়েছে তার কোনো তথ্য-প্রমাণ তাদের কাছে নেই। দুবাইয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার কথা তারা বাংলাদেশ ব্যাংককে কখনও জানাননি বা কোনো ধরনের অনুমতি নেননি। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে মোসাদ্দেক আলী ফালু ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ প্রক্রিয়ায় দেশে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করে অফসোর কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
Posted ৫:০১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy