অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্ত কার্যক্রমে স্টেকহোল্ডাররা একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম।

রোববার (৯ মার্চ) বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এসময় বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, আমরা সবাইকে বলেছি কাজে যোগদান করতে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবো।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের যে তদন্ত কার্যক্রম চলছে, এ কাজের সঙ্গে আমরা সম্পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করছি।

তিনি বলেন, সংকটময় পরিস্থিতিতে কীভাবে বাজারে আস্থা ধরে রাখা যায় এবং অতিদ্রুত সংকট কাটিয়ে ওঠা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী যেভাবে বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে দাবি দাওয়া আদায়ের প্রচেষ্টা করেছিলেন সেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা এর নিন্দা জানাচ্ছি।

মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, বিগত বছরগুলোতে যে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে- বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে তার বিশদ তদন্ত ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলমান যে বিচার কার্যক্রম এর সঙ্গে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করছি।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি বিএসইসিতে অনেকে আছেন যারা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছেন। আমরা বিএসইসি চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের কাছে অনুরোধ করেছি এই সৎ এবং নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা যাতে এই মুহূর্তে আতঙ্কিত না হন, তারা যেন তাদের দৈনন্দিন কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে পারেন- সে বিষয়ে তারা যেন পদক্ষেপ নেন। তারা আশ্বস্ত করেছেন যে ওই কাজটি অলরেডি শুরু হয়েছে।

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, আমরা তাদের বলেছি আপনারা শক্ত হাতে হাল ধরেন। এভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ করা যাবে না। আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে এটা মোকাবিলা করবো।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএসই’র পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, আমরা বাজারের (শেয়ারবাজার) সঙ্গে আছি, ছিলাম এবং থাকবো। এই বাজার আমাদের। বাজারে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না।

তিনি বলেন, কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি বিচারিক বিষয়, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। তবে আমরা অনুরোধ করেছি কারও প্রতি যেন অবিচার না করা হয়। আমরা দাবি জানিয়েছি নির্দোষ কাউকে যেন সাজা দেওয়া না হয়। একই সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগ দিয়েছেন এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। তারা যেন কাজটা চালু রাখেন এবং কমিশন ধীরে ধীরে সব ভয়ভীতি কাটিয়ে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একসঙ্গে কাজ করেন সেই অনুরোধ আমরা তাদের জানিয়েছি।

বৈঠকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউস, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ও সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিবিএল) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, আজ এখানে গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডাররা এসেছিলেন। তারা আমাদের সহমর্মিতা ও সহানুভবতা জানিয়েছেন। তারা আমাদের সব ধরনের সাপোর্ট দিয়ে যাবেন বলেও আশ্বস্ত করেছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে ফিরে এসেছেন। আমরা সবাইকে বলেছি কাজে যোগদান করতে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবো। সবাই কাজে যোগদান করলে কাজ স্বাভাবিক নিয়মে চলে চলবে।

কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাব বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, এখনো সেই সময় হয়নি। পরবর্তী সময়ে আলোচনা করে আরও বিস্তারিত জানানো হবে।

এ সময় বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখ উপস্থিত ছিলেন।