বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থপাচার ও মানিলন্ডারিং গুরুতর অপরাধ: আপিল বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১   |   প্রিন্ট   |   184 বার পঠিত

অর্থপাচার ও মানিলন্ডারিং গুরুতর অপরাধ: আপিল বিভাগ

দেশের অর্থ বিদেশে পাচার ও মানিলন্ডারিং গুরুতর অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে। অর্থপাচার ও মানিলন্ডারিং অপরাধের চার মামলায় আসামী জয় গোপাল সরকারকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বাতিলের আবেদনের শুনানিকালে গত ২ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে ওইদিন আদেশসহ রায় প্রদান করেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। আসামির জামিন বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে মামলাগুলো আগামী এক বছরের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে গ্রেফতার রাজধানীর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক জয় গোপাল সরকারের চার মামলায় গত ১৯ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ জামিন। পরে রাষ্ট্র পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ২৩ আগস্ট হাইকোর্টের আদেশ ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন এবং আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে।

পরে ২ নভেম্বর শুনানি শেষে আদালত রায় প্রদান করেন। আদালতে ওই দিন দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ (এসকে) মোরশেদ। জয় গোপালের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।

অভিযোগ রয়েছে, ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জয় গোপাল দৈনিক ৫০ হাজার টাকা পেতেন। জয় গোপাল সরকার প্রথমে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, পরে ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক হন জয় গোপাল।
সিআইডি ২০২০ সালের ১৩ জুলাই লালবাগ থেকে জয় গোপাল গ্রেফতার করে। পরদিন ১৪ জুলাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত বছরের ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের একটি ভবন থেকে এক সহযোগীসহ দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করে সিআইডি পুলিশ। এরপর গেন্ডারিয়া থানায় মানিলন্ডারিং আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়ার আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে জয় গোপালের নাম উঠে আসে।

সূত্র মতে, ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা করে গত পাঁচ বছরে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ও ১২১টি ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন পুরান ঢাকার দুই ভাই এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়া। পুলিশ মানিলন্ডারিং মামলায় এনু-রুপনের কাছ থেকে নগদ ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়। শান্তি নামের এক ব্যক্তি এবং নেপালি নাগরিক হ্যারির মাধ্যমে ক্যাসিনোতে জড়িয়ে পড়েন দুই ভাই।

সিআইডি তদন্তে ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে করা মানিলন্ডারিং মামলায় এসব চাঞ্চ্যল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এ বিষয়ে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের দীর্ঘ তদন্তের পর এনু-রুপনের বিরুদ্ধে করা মানিলন্ডারিং মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। গত ৮ আগস্ট আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শ মেহেদি মাকসুদ।

গত বছরের ৫ মার্চ মানিলন্ডারিংয়ের এই মামলার তদন্ত শুরু করে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওয়ারী থানায় মামলা করা হয়। এ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার আছেন-এনামুল হক এনু, রূপন ভূঁইয়া, তুহিন মুন্সী, নবীর হোসেন শিকদার, সাইফুল ইসলাম ও জয় গোপাল সরকার। আর পলাতক আছেন পাভেল রহমান, এনু-রুপনের তিন ভাই শহিদুল হক ভূঁইয়া, রশিদুল হক ভূঁইয়া, মেরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু এবং ভুলু চন্দ্র দেব নামের এক ব্যাক্তিও পলাতক রয়েছেন।

 

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৬:২৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।