মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঋণ চাহিদায় ভাটা

আদম মালেক   |   বুধবার, ০৭ অক্টোবর ২০২০   |   প্রিন্ট   |   516 বার পঠিত

ঋণ চাহিদায় ভাটা

নগদ জমার হার কমানো, সেবাখাতে বিভিন্ন বিল গ্রহণ, রেমিটেন্স ও আমানতের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেক ব্যাংকে মাত্রাতিরিক্ত তারল্য বেড়েছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসে বিধ্বস্ত অর্থনীতিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্র অনেক সংকুচিত। ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের ভালো জায়গা পাচ্ছে না বলে ঋণ চাহিদায় ভাটা পড়েছে। তাই অতিরিক্ত তারল্য নিয়ে বিপাকে অনেক ব্যাংক। এ পরিস্থিতিতে বিকল্প বিনিয়োগের খোঁজে অনেক ব্যাংক আর বিকল্প বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য ব্যাংকগুলোকে মূলধন সংরক্ষণে ছাড় দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ব্যাংকগুলোতে আমানত আসার প্রবণতা বাড়লেও তারা সেভাবে বিনিয়োগ করতে পারছে না। যদিও আমানতের সুদহার ৬ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। কিন্তু নিশ্চিত মুনাফা ও নিরাপদে টাকা ফেরতের আশায় সাধারণ মানুষ ব্যাংকগুলোতেই টাকা রাখছে। এছাড়া এ সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহও বেড়েছে। এ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকের কাছ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক কিনে নিয়েছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার সমপরিমাণ নগদ টাকা ব্যাংকের হাতে এসেছে। এতে ব্যাংকগুলোর কাছে অতিরিক্ত তারল্যের পরিমাণ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।

তারল্য বৃদ্ধি ও নিম্নমুখী ঋণ চাহিদা প্রসঙ্গে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলী বলেন, ব্যাংকের তারল্য ভালো। তবে অর্থনীতি করোনা ভাইরাসে বিধ্বস্ত। তাই ঋণ বিতরণ কম। এ সংকটের উত্তরণ হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোও ঋণ বিতরণে সতর্ক। তাই ব্যক্তি খাতের ঋণ বিতরণ বাড়েনি। এমনকি সরকারও আগের তুলনায় ঋণ নেয়া কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া কমে গেছে ট্রেজারি বিল-বন্ডের বিপরীতে আয়ের পরিমাণও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত তারল্য এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, চাহিদামতো সরকারের ট্রেজারি বিল-বন্ডেও বিনিয়োগ করতে পারছে না। এমনকি কলমানি হিসেবেও বিনিয়োগ করতে পারছে না। এতে জমা টাকা নিয়ে সমস্যায় পড়ে গেছে কিছু ব্যাংক। গত আগস্ট মাসের শেষে ব্যাংক খাতে অতিরিক্ত তারল্য বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর হাতে নগদ আছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা।

মধুমতি ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিউল আজম বলেন, নতুন ব্যাংক হিসেবে আমাদের তারল্য সংকট নেই। আমরা বিভিন্ন আমানতের পাশাপাশি সেবাখাতের বিলগুলোও গ্রহণ করে থাকি। তাই তারল্যে ভালো অবস্থান। এদিকে আমাদের অ্যাকাউন্টহোল্ডারের সংখ্যা ২ লাখ ২০ হাজার। এদের ২২ শতাংশ ঠিকাদার। তাই আশানুরূপ ঋণ বিতরণ করছি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রæয়ারিতে ব্যাংকগুলোতে অতিরিক্ত তারল্য ছিল এক লাখ ৩ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা। করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে ব্যাংকগুলো থেকে আমানত উত্তোলনের চাপ বেড়ে গেলে মার্চের শেষে অতিরিক্ত তারল্য কমে ৮৯ হাজার ৯০৯ কোটি টাকায় নেমে আসে। কিন্তু ১ এপ্রিল থেকে ব্যাংকগুলোর নগদ জমার হার (সিআরআর) কমানোর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা থাকা প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা ফেরত পায় ব্যাংকগুলো। এতে এপ্রিল শেষে অতিরিক্ত তারল্য বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। গত জুলাই মাসে এটি বেড়ে হয় এক লাখ ৪০ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা এবং আগস্টে এসে দাঁড়ায় এক লাখ ৬০ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ২:৪৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৭ অক্টোবর ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।