শনিবার ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আইপিও শেয়ার বণ্টনের খসড়া নীতিমালা প্রকাশ

এপ্রিল থেকে কার্যকর হচ্ছে হবে নতুন নিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ১৪ মার্চ ২০২১   |   প্রিন্ট   |   400 বার পঠিত

এপ্রিল থেকে কার্যকর হচ্ছে হবে নতুন নিয়ম

সম্প্রতি বিএসইসি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসতে চাওয়া কোম্পানির শেয়ার বণ্টনের খসড়া নীতিমালা প্রকাশ করেছে, যেখানে তালিকাভুক্তিতে শেয়ার বণ্টনের ক্ষেত্রে কোটা বহাল রাখা হয়েছে। এপ্রিল থেকে পুঁজিবাজারে যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হবে তাদের শেয়ার লটারির পরিবর্তে আনুপাতিক হারে বণ্টনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ জন্য দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ও সিডিবিএল’কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের শেষ সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। যদিও শেয়ার বণ্টনের ক্ষেত্রে কোটা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীরা।
বিএসইসি’র খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, স্থির মূল্য বা ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে যেসব কোম্পানি পুঁজি বাজারে তালিকাভুক্ত হবে সেসব কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য রাখা হবে ২০ শতাংশ শেয়ার। মিউচ্যুয়াল ফান্ডের জন্য থাকবে ১০ শতাংশ। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীসহ প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের জন্য থাকবে ৭০ শতাংশ শেয়ার।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চাইলে সেই কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ার রাখা হবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য। সাধারণ বিনিয়োগকারীসহ প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা পাবেন কোম্পানির ৭০ শতাংশ শেয়ার।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েই বিনিয়োগকারীদের প্রলোভন দেখিয়ে বড় অংকের বোনাস লভ্যাংশে দিয়ে পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধি বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে খসড়া নীতিমালায়।
বলা হয়েছে, নতুন তালিকাভুক্ত হওয়ার শুরুর দুই বছর কোনো বোনাস লভ্যাংশ দিয়ে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানো যাবে না। যদিও সম্প্রতি বিএসইসি ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে সম্প্রতি তালিকাভুক্ত ইজেনারেশন লিমিটেডকে চার বছর এবং বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় নিলাম শেষ করা বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডকে পাঁচ বছর কোনো বোনাস লভ্যাংশ দিতে পারবে না বলে শর্ত দিয়েছে।
কোম্পানির নামমাত্র শেয়ার ছেড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বন্ধ করতে উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি।
খসড়ায় বলা হয়েছে, কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৭৫ কোটি টাকা পর্যন্ত বাড়াতে চাইলে অন্তত ৩০ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে হবে। তবে আইপিও ছাড়ার পর যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৭৫ কোটি টাকা থেকে ১৫০ কোটি টাকা হবে, সেসব কোম্পানিকে অন্তত ২০ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে হবে। একইভাবে যে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১৫০ কোটি টাকার বেশি হবে, সে কোম্পানিকে অন্তত ১০ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে হবে।
খসড়া নীতিমালায় নতুন কোম্পানিকে প্লেসমেন্ট শেয়ার বিক্রির সুযোগ দেয়া হয়েছে।
খসড়া অনুসারে আইপিও’র মাধ্যমে কোনো কোম্পানি ৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চাইলে সে কোম্পানি ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার প্রাইভেট প্লেসমেন্টে ইস্যু করার সুযোগ পাবে।
প্লেসমেন্টের এসব শেয়ার কারা পাবে তা ইস্যুয়ার নির্ধারণ করবে। তবে এসব শেয়ার দুই বছরের জন্য ‘লক-ইন’ বা বিক্রি নিষেধাজ্ঞায় থাকবে।
বিএসইসি’র এই পাবলিক ইস্যু বিধিমালার সংশোধনীর খসড়া সম্পর্কে আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত মতামত দেয়া যাবে।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, আনুপাতিক হারে শেয়ার বণ্টনের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা প্রয়োজন নেই। কোটা ব্যবস্থা থাকলে সমবণ্টনের যে কথা বলা হচ্ছে সেটি যথাযথভাবে কার্যকর হবে না।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, কোটা দিয়ে বরং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ারে এখন কোনো লক-ইন নেই। তারা চাইলের শেয়ার বিক্রি করতে পারেন। আনুপাতিক হারে শেয়ার বণ্টন করার পর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিজেদের মতো শেয়ার বিক্রি বা ধরে রাখলে হয় শেয়ারের দর অতিমূল্যায়িত হবে নয়তো আইপিও শেয়ারেও লোকসান গুণতে হবে বিনিয়োগাকারীদের।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ারে আগে লক-ইন ছিল। তখন বলা হয়েছিল, বাজারের শেয়ার সরবরাহ হচ্ছে না। লেনদেনের প্রথম দিনই শেয়ারের দর বাড়ত শতভাগ। সে অবস্থার পরিবর্তনের জন্য ‘লক’ বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আগে যেভাবে কোটা ব্যবস্থা ছিল সেটাই থাকবে। কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে কোটা থাকবে। শুধু বণ্টন প্রক্রিয়াটির পরিবর্তন হবে।

আনুপাতিক হারে শেয়ার বণ্টন : আগামী এপ্রিল থেকে আইপিও আবেদন করলেই পাওয়া যাবে শেয়ার। এ জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসই, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ-সিএসই ও সেন্ট্রাল ডিপোজেটরি অব বাংলাদেশ-সিডিবিএলকে।
এ সংক্রান্ত এক নির্দেশনায় বিএসইসি জানিয়েছিল, আইপিও আবেদন করলেই শেয়ার পেতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থাকতে হবে অন্তত ২০ হাজার টাকা। আর আবেদন করতে হবে ১০ হাজার বা তার গুণিতক হারে।
কীভাবে আনুপাতিক হারে শেয়ার পেতে আবেদন করতে হবে তার একটি প্রক্রিয়াও তৈরি করেছে ডিএসই, যা তাদের ওয়েবসাইটে আছে।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১২:২২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৪ মার্চ ২০২১

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।