শনিবার ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেশি মুনাফাই লক্ষ্য

ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক বাড়াতে তোড়জোড়

বিবিএনিউজ.নেট   |   রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০   |   প্রিন্ট   |   833 বার পঠিত

ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক বাড়াতে তোড়জোড়

১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ কার্যকর হবে। একই সঙ্গে সব ধরনের আমানতের সুদহারও হবে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ। ৯-৬ সুদ কার্যকরে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডিদের সঙ্গে বৈঠকের পর এমনটি জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তখন বলা হয়েছিল, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সার্কুলার জারি করা হবে।

সূত্র বলছে, অর্থমন্ত্রীর ওই ঘোষণার পর থেকেই ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক বাড়াতে তোড়জোড় শুরু করেছে ব্যাংকগুলো। কারণ সিঙ্গেল ডিজিটের বাইরে থাকায় কেবল ক্রেডিট কার্ডেই ব্যাংকের মুনাফা বেশি করার সুযোগ আছে। এ জন্য ব্যাংকের সব কর্মকর্তাকে টার্গেট দিয়ে মাঠে নামানো হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চতুর্থ প্রজন্মের ওই ব্যাংকের প্রত্যেক কর্মকর্তাকে ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতি মাসে দুটি ক্রেডিট কার্ড বিক্রির টার্গেট দেওয়া হয়েছে। প্রথম প্রজন্মের আরেকটি ব্যাংক জানুয়ারি মাস থেকে প্রত্যেক কর্মীকে একটি করে ক্রেডিট কার্ড বিক্রির টার্গেট দিয়েছে। আর কার্ড ডিভিশনের কর্মকর্তাদের প্রতি মাসেই ১৮-২০টি কার্ডের টার্গেট দেওয়া হয়েছে, যা আগে আরো কম ছিল। এ ছাড়া আরো কিছু ব্যাংক তাদের কর্মীদের ক্রেডিট কার্ডের টার্গেট দিয়ে মাঠে নামিয়েছে। বর্তমানে ৩৯টি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সেবা রয়েছে।

জানা যায়, বর্তমানে ক্রেডিট কার্ডের সুদ অন্য যেকোনো ঋণপণ্যের তুলনায় অনেক বেশি। বর্তমানে বেসরকারি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সুদহার গিয়ে উঠেছে প্রায় ২৭ শতাংশ। আছে নানা রকম চার্জের ধকলও। এ ছাড়া ক্রেডিট কার্ড নিলে সেটি চালু না করলেও বছর শেষে ঠিকই নির্দিষ্ট অঙ্কের চার্জ গুনতে হবে গ্রাহককে। তবে এ সেবায় বেশি সুদ ধার্যের বিষয়ে ব্যাংকগুলোর যুক্তি হলো, ক্রেডিট কার্ডে ঋণ সেবাটি ব্যাংকের অন্যান্য সেবার মতো নয়। জামানতবিহীন ঋণ হওয়ায় এ ক্ষেত্রে খেলাপির ঝুঁকি অনেক বেশি। কিছু গ্রাহক ক্রেডিট কার্ডে টাকা ঋণ নিয়ে ওই কার্ড আর ব্যবহার করেন না। ফলে এ সেবার গ্রাহকদের নিবিড়ভাবে তত্ত্বাবধান করতে হয়। ফলে এ সেবায় সুদহার বেশি হয়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও এ সেবার সুদহার বেশি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রথম প্রজন্মের একটি বেসরকারি ব্যাংকের এমডি বলেন, সব ঋণে ৯ শতাংশ সুদহার কার্যকর করা ব্যাংকগুলোর পক্ষে অনেক কঠিন। এমন বাস্তবতায় ব্যাংকগুলো আগাম প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে। ক্রেডিট কার্ড যেহেতু সিঙ্গেল ডিজিটের বাইরে থাকছে, সেহেতু এ সেবা সম্প্রসারণে মনোযোগী হচ্ছে ব্যাংকগুলো। এতে দোষের কিছু নেই বলেও মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী, বর্তমানে অন্য যেকোনো ঋণের সর্বোচ্চ সুদের সঙ্গে ৫ শতাংশ সুদ যোগ করে ক্রেডিট কার্ডের সুদহার নির্ধারণের সুযোগ পাচ্ছে ব্যাংকগুলো। যদিও সব ব্যাংক সুদহার নির্ধারণের এই বাধ্যবাধকতাও মানছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬০টি তফসিলি ব্যাংকের মধ্যে ৩৫টি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে বেসরকারি ৩১টি, বিদেশি দুটি ও সরকারি দুটি ব্যাংক রয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে বেসরকারি ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর ক্রেডিট কার্ডের গড় সুদহার ছিল ১৮ থেকে ২৭ শতাংশ পর্যন্ত। আর সরকারি দুটি ব্যাংকের ছিল সর্বোচ্চ ১৪ শতাংশ।

ব্যাংকগুলোর ক্রেডিট কার্ড ব্যবসা স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু পরিচালনা এবং এ সেবার ঝুঁকিগুলো আরো কার্যকর ও ফলপ্রসূভাবে মোকাবেলা এবং গ্রাহক স্বার্থ রক্ষার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নীতিমালা রয়েছে, যা ২০১৭ সালের ১১ মে জারি করা হয়। ওই নীতিমালার আওতায় ক্রেডিট কার্ডের সেবা পরিচালিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক ছিল ১৫ লাখেরও বেশি। চলতি বছরের জানুয়ারি শেষে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক ২০ লাখ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল সূত্র।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:১৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।