মঙ্গলবার ১৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গ্রাহকের অজান্তে টাকা কেটে রাখার অভিযোগ মেটলাইফের বিরুদ্ধে

এস জেড ইসলাম   |   সোমবার, ০৮ মার্চ ২০২১   |   প্রিন্ট   |   5493 বার পঠিত

গ্রাহকের অজান্তে টাকা কেটে রাখার অভিযোগ মেটলাইফের বিরুদ্ধে

বীমা করানোর সময় উচ্চ হারে মুনাফা প্রদানের লোভ দেখিয়েছে। কিন্তু মেয়াদপূর্তির পর গ্রাহকের সে আশায় ছাই ঢেলে কম টাকা প্রদান করেছে। বিদেশি মালিকানাধীন দেশের সর্ববৃহৎ জীবন বীমা কোম্পানি মেটলাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগির অভিযোগ সূত্রে এমনটা জানা গেছে।

অভিযোগকারী খুলনার সুলতান আলম বাদল বলেন, আমি একজন গাড়ি ব্যবসায়ী। গত ৯ ডিসেম্বর ২০০৯ সালে মেটলাইফ খুলনা অঞ্চলে আলমগীর এজেন্সির মাধ্যমে তিনটি বীমা পলিসি গ্রহণ করি। এর একটি আমার নামে এবং দু’টি আমার স্ত্রীর নামে। স্ত্রীর নামে করা দু’টি পলিসির মধ্যে একটি ১১ বছর মেয়াদী আমানত পেনশন প্রকল্প (ডিপিএস)। বীমা করার সময় বলা হয়, প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা প্রিমিয়াম দিলে মেয়াদপূর্তির পর ১৯ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা দেয়া হবে। কিন্তু গত ৯ ডিসেম্বর ২০২০ সালে পলিসির মেয়াদ শেষ হলে আমাকে জানানো হয় আমি মাত্র পাঁচ লাখ ৮৩ হাজার টাকা পাবো। কোম্পানির এমন অভিনব প্রতারণায় আমি হতবাক হয়ে যাই।

কিভাবে ১৮ লাখ টাকা মাত্র ছয় লাখ টাকায় নেমে আসে এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, টাকা হ্রাসের বিষয়ে কোম্পানিকে বার বার চিঠি দেয়ার পরও তারা কোন জবাব দেয়নি। এমনকি আমি অসুস্থ শরীরে প্রধান কার্যালয়ে গেলে প্রায় সবাই অভদ্র আচরণ করেন। এমন অবস্থায় বার বার ঢাকায় যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’র দারস্থ হয়েছি।

পলিসির বাইরে কোম্পানির সাথে অন্যকোন লেনদেন আছে কিনা জানতে চাইলে সুলতান আলম বলেন, কিছুদিন পূর্বে আমার ব্যবসায়িক অবস্থা খারাপ হওয়ায় মেটলাইফ থেকে পলিসির বিপরীতে সাত লাখ ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। যার সুদ চার লাখ ৫৫ হাজার টাকা হয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ সাকুল্যে আমার কাছে পাওনার পরিমান ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। যদি সে ঋণ বাবদ টাকা কর্তণ করা হয় তাহলেও কোম্পানির নিকট আমার সাত লাখ ৭৭ হাজার ৫শ’ টাকা পাওনা থাকার কথা। কিন্তু তারা বলছেন, আমি পাঁচ লাখ ৮৩ হাজার ৬শ’ টাকার মতো পাবো। তাহলে আমার এক লাখ ৯৪ হাজার টাকা কোথায় গেলো?

এ বিষয়ে মেটলাইফ খুলনার আলমগীর এজেন্সির চিফ বলেন, ‘ওই গ্রাহকের প্রতিমাসে প্রিমিয়াম দেয়ার কথা কিন্তু তিনি ছয় মাস, আট মাস পর পর প্রিমিয়াম দিতেন। সেজন্য হয়তো অফিস থেকে কোন টাকা কেটে রাখা হয়েছে।’ বিলম্বে টাকা দিলে যে প্রাপ্ত টাকা থেকে কেটে রাখা হবে তা গ্রাহককে আগেই জানানো হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেনÑ ‘না, সেটা বলা হয়নি।’ তবে কিসের ভিত্তিতে টাকা কর্তণ করা হয়েছে পুনরায় তা জানতে চাইলে বিব্রত হয়ে প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলেন এই এজেন্সি প্রধান।

এদিকে প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে পলিসি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের কর্মকর্তা সাইদুল করিম বাপ্পী জানান, ‘মূলত আয়কর আইন অনুযায়ী পলিসিহোল্ডারের প্রাপ্ত টাকা থেকে সরকারি ট্যাক্স হিসেবে পাঁচ শতাংশ কর্তণ করা হয়েছে। তাই তিনি প্রাপ্ত টাকা থেকে কম পেয়েছেন।’ ট্যাক্স হিসেবে কেটে রাখলেও তো সেটা প্রায় ৯৮ হাজার টাকা। কিন্তু আপনারা প্রায় দু’ লাখ টাকা কেটে রেখেছেন কেন, এমন প্রশ্নে কোন জবাব দেননি তিনি। এছাড়া পলিসি করার সময় গ্রাহককে প্রাপ্ত টাকা হতে ট্যাক্স কেটে রাখা হবে, এমনটা জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, আমাদের চুক্তিপত্রের শর্তাবলিতে বিষটির উল্লেখ রয়েছে। গ্রাহক যদি কম শিক্ষিত হন বা বুঝতে না পারেন সেক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো না জানানোর দায় কি আপনাদের উপর বর্তায় না? প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নেরও জবাব দিতে পারেনি ওই কর্মকর্তা।

 

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৮ মার্চ ২০২১

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।