বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট | 762 বার পঠিত
চার দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং। গত শুক্রবার সকাল ৮টা ৮ মিনিটে তাকে বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে শেরিংকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি পররাষ্ট্র, শিক্ষা, বাণিজ্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সফরে নানা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি বাঙালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনেও অংশ নেবেন তিনি।
বিদেশি কোনো প্রধানমন্ত্রীর এটিই প্রথম পয়লা বৈশাখে অংশগ্রহণ। তাই তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাবে সরকার। বৈশাখের উপহার হিসেবে তাকে সিল্কের পাঞ্জাবি এবং তার স্ত্রীর জন্য বেনারসি শাড়ি উপহার দেওয়া হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতিদানকারী প্রথম দেশ ভুটান। গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফের আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদেশি কোনো সরকারপ্রধানের প্রথম বাংলাদেশ সফর এটি।
সফরের প্রথম দিন বিকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার হোটেল কক্ষে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে কানেক্টিভিটি বাড়াতে চাই। এছাড়া ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য আমরা প্রস্তাব দিয়েছি।’
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন ড. মোমেন। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘ভুটান একটি ল্যান্ড লক দেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে কানেক্টিভিটি বাড়ালে তাদেরই বেশি লাভ হবে। এছাড়া ভুটানে হাইড্রো বিদ্যুৎ রয়েছে। আমরা সেখান থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে আসার জন্য আলোচনা করেছি।’
এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিবিআইএন (বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল) উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেছি। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে তারা চিকিৎসক নিতে চান। আমরা বলেছি, বাংলাদেশের চিকিৎসকদের ভালো বেতন দিলে স্পেশাল প্যাকেজের আওতায় তারা ভুটানে যেতে পারেন।’
পরে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) নেতাদের সঙ্গে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে একটি ব্যবসায়িক বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া আজ ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে এক বৈঠকে মিলিত হবেন। বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, অভ্যন্তরীণ কার্গো চলাচল-সংক্রান্ত সহযোগিতা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত-সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালিক এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর হোটেল কক্ষে তার সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করবেন। পরে সন্ধ্যায় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এরপর ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আয়োজিত নৈশভোজে তিনি যোগদান করবেন।
এদিকে ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে তিনি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সুরের ধারা আয়োজিত বর্ষবরণের সাংস্কৃতিক আয়োজনে যোগ দেবেন। একই দিনে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং সেখানকার পুনর্মিলনীতে যোগ দেবেন এবং সেখানে ভাষণ প্রদান করবেন। সেদিন বিকালেই তিনি রাজধানীতে ফিরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
সফরকালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর বিমসটেক সচিবালয় এবং বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জনস পরিদর্শনের কথা রয়েছে। সফর শেষে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ১৫ এপ্রিল সকালে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
Posted ১:১১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed