সোমবার ২০ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্ধশত কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে

সিটি ব্যাংকের এমডি সোহেলের পদত্যাগ

  |   সোমবার, ২১ জানুয়ারি ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   818 বার পঠিত

সিটি ব্যাংকের এমডি সোহেলের পদত্যাগ

বেশকিছু গুরুতর অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পদত্যাগ করেছেন বেসরকারী খাতের দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) সোহেল আর কে হুসেইন। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিশদ পরিদর্শন প্রতিবেদনে সোহেল আর কে হুসেইনের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠে আসে। যার ফলে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চাপে তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, ২০০৭ সালে সিটি ব্যাংকে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে যোগ দেন সোহেল। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের নবেম্বরে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। দ্বিতীয় দফায় সোহেল হুসেইনের এমডির দায়িত্ব পালনের মেয়াদ ছিল চলতি বছরের নবেম্বর পর্যন্ত। পর্ষদের চাপে মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯ মাস আগেই পদত্যাগ করেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি মাসের ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত পর্ষদ সভায় একমাসের ছুটিতে যান সোহেল আর কে হুসেইন। দুইদিন পর ১৬ জানুয়ারি তিনি পদত্যাগ করেন। ছুটিতে যাওয়া এবং পদত্যাগের আগে সোহেল হুসেইন চেয়ারম্যানের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি মোতাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি নিয়োগপত্রে উল্লেখ করা থাকে। চুক্তির বাইরে এমডির আর কোন সুবিধা নেয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু সোহেল আর কে হুসেইন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা উপেক্ষা করে নির্ধারিত বেতন-ভাতার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ অতিরিক্ত বেতন ও অন্যান্য সুবিধা নিয়েছেন। এভাবে বেতনের অতিরিক্ত প্রায় ১ কোটি টাকা নিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে সোহেল আর কে হুসেইনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে ব্যাংক থেকে নেয়া অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়, সিটি ব্যাংক থেকে যে এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সোহেল হুসেইন বেতন নিতেন, সেই এ্যাকাউন্টে ২০১৭ সালে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। আড়াই থেকে তিন কোটি টাকার প্রতিটি লেনদেনের পরিমাণ প্রায় অর্ধশত। এমডির এ্যাকাউন্ট থেকে এসব টাকা এক সপ্তাহ পর অনলাইন ট্রান্সফারের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়েছে অন্য এ্যাকাউন্টে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা অর্থের উৎস জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি পদত্যাগী এমডি সোহেল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০ বছর মেয়াদে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা বাড়ি বানানোর (হাউস বিল্ডিং) ঋণ নিয়েছেন সোহেল আর কে হুসেইন। চাকরিকাল ৬০ বছর ধরে তাকে এই ঋণ ১৬ বছরের বেশি মেয়াদে দেয়ার সুযোগ নেই। ঋণের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ বছর। এতে ঋণ আদায়ে অনিয়শ্চয়তার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বাড়ি নির্মাণ ঋণ ছাড়াও প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন সোহেল। প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে ঋণ নেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নেয়ার বিধান থাকলেও তা মানা হয়নি। প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে নেয়া ঋণ ফেরত এবং বাড়ি বানানোর ঋণ সমন্বয় করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিবেদনের শেষ অংশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় সিটি ব্যাংক। সব সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা পাশ কাটিয়েছে ব্যাংকটি।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৩:০৩ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২১ জানুয়ারি ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।