শুক্রবার ২৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

৮ ঘণ্টা শ্রমের আইন মানা হচ্ছে না: বিলস

বিবিএনিউজ.নেট   |   শনিবার, ০৪ মে ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   543 বার পঠিত

৮ ঘণ্টা শ্রমের আইন মানা হচ্ছে না: বিলস

আইএলও কনভেনশনে কর্মক্ষেত্রে দৈনিক ৮ ঘণ্টা ও সাপ্তাহিক ৪৮ ঘণ্টা শ্রম নির্ধারিত থাকলেও বাংলাদেশে তা না মানার চিত্র তুলে ধরেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)।

মে দিবস উপলক্ষে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘আইএলও কনভেনশন-১ এর শতবর্ষ পূর্তি এবং বাংলাদেশে কর্মঘণ্টার বর্তমান পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তা তুলে ধরা হয়।

বিলসের মহাসচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, “১৯৭২ সালে বাংলাদেশ আইএলওর সদস্য হলেও এত বছরেও আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়ন করছে না। শ্রম আইন থাকলেও তার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।”

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের কর্মঘণ্টার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিলসের তথ্য বিভাগের উপপরিচালক ইউসুফ আল মামুন।

বিলস নিরাপত্তাকর্মী, পরিবহন খাত, হোটেল, রেস্তোরাঁ, রি-রোলিং মিল ও হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার এ ৫টি প্রচলিত বেসরকারি খাতের শ্রমিকদের নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

বিলস গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় এক-চতুর্থাংশ (প্রায় ২৪ শতাংশ) নিরাপত্তা কর্মী দৈনিক ১৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন। ৫০ শতাংশ কর্মী কোনো কর্মবিরতি ছাড়া কাজ করেন। প্রায় দুই তৃতীয়াংশ (প্রায় ৬৬ শতাংশ) নিরাপত্তাকর্মীর সাপ্তাহিক ছুটি নির্ধারিত নেই। সরকারি ছুটির দিনে ৮৬ শতাংশ কর্মী কাজ করেন।

পরিবহন খাত নিয়ে বিলস বলছে, প্রায় ৫০ শতাংশ শ্রমিক দৈনিক ১৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন। ২০ শতাংশ পরিবহন শ্রমিক কোনো কর্মবিরতি ছাড়াই কাজ করেন। ৯০ শতাংশের বেশি পরিবহন শ্রমিকের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি নেই। ৯৮ শতাংশ শ্রমিক সরকারি ছুটির দিনেও কাজ করেন।

দূরপাল্লার চালকরা যেন ৫ ঘণ্টার বেশি একটানা যেন গাড়ি না চালান, তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে নির্দেশনা দিয়েছেন, তার প্রতিফলন নেই বলেও উঠে এসেছে বিলসের গবেষণায়।

হোটেল ও রেস্তোরাঁয় প্রায় ৯৮ শতাংশ শ্রমিক ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন বলে উঠে এসেছে বিলসের প্রতিবেদনে। এদের এক-সপ্তমাংশের বেশি (প্রায় ১৪ শতাংশ) শ্রমিক ১৩ থেকে ১৪ ঘণ্টা বেশি কাজ করেন। ২৬ শতাংশ শ্রমিক কোনো কর্মবিরতি ছাড়া কাজ করেন। ৮০ শতাংশের বেশি শ্রমিকের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি নেই।

রি রোলিং খাতে ৯২ শতাংশ শ্রমিক ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন। এক-ষষ্ঠাংশের বেশি শ্রমিক (প্রায় ১৬ শতাংশ) দৈনিক ১৫ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় কাজ করেন। ৯৬ শতাংশ শ্রমিককে দৈনিক গড়ে দুই থেকে পাঁচ শিফট পর্যন্ত কাজ করতে দেখা যায়। এছাড়াও ৪৪ শতাংশ শ্রমিক দৈনিক গড়ে ২টি কারখানায় কাজ করে। রি রোলিং খাতের এক তৃতীয়াংশের বেশি শ্রমিককে দৈনিক গড়ে তিনটি কারখানায় কাজ করতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিলস।

বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্যাথলজি ল্যাবে গবেষণা শেষে বিলস বলছে, এ খাতে ৪২ শতাংশের বেশি শ্রমিক দৈনিক ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন। এদের মধ্যে এক-চতুর্থাংশের বেশি (প্রায় ২৮ শতাংশ) শ্রমিক ১১ থেকে ১২ ঘণ্টা কাজ করেন। ৫০ শতাংশ বেশি শ্রমিককে সরকারি ছুটির দিনে কাজ করতে হয়। প্রায় ২২ শতাংশ শ্রমিকের সাপ্তাহিক কোনো ছুটি নেই।

বাংলাদেশে শ্রম আইনে বলা আছে, কোনো শ্রমিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারবেন না। কোনো শ্রমিক ছয় ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না যদি না তাকে খাবার ও বিশ্রামের জন্য এক ঘণ্টা বিরতি দেওয়া হয়। সপ্তাহে কোনো শ্রমিকের কর্মঘণ্টা ৬০ ঘণ্টার বেশি হবে না।

কলকারখানা ও শিল্প ক্ষেত্রে শ্রমিকরা এক দিন ছুটি পাবেন বলে শ্রম আইনে বলা আছে।

বিলসের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শিবনাথ রায় বলেন, “দেশে ৫ কোটি ৮৭ লাখ শ্রমিকের জন্য শ্রম আইনের সবগুলো ধারা আমরা পরিপূর্ণ করতে পারিনি। এখানে চলে আসে, ন্যায্য মজুরির কথা। শ্রমিকদের বেশি কাজ করালে তার জন্য ন্যায্য মজুরি পরিশোধ করতে হবে।”

পরে তিনি নিজের প্রতিষ্ঠানেও লোকবল সংকটের কথা জানান।

পরে শ্রম আইন ও শ্রমিকদের আইনি অধিকার বাস্তবায়নে তার অধিদপ্তর আইএলও নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করছে বলে জানান শিবনাথ।

আলোচনায় যোগ দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক জাকির হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী একেএম নাসিম, বিলসের ভাইস চেয়ারম্যান শুক্কুর মাহমুদ, ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ কাউন্সিলের মহাসচিব সালাউদ্দিন স্বপন।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ২:২৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৪ মে ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11169 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।