বিবিএনিউজ.নেট | বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | প্রিন্ট | 778 বার পঠিত
জমে ওঠেনি খুলনায় আয়োজিত দুদিনের বীমামেলা। অনুষ্ঠানজুড়ে বীমা কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণ থাকলেও সাধারণ জনগণের উপস্থিতি ছিল প্রায় শূন্যের কোঠায়। যা বীমাখাতের জন্য অশনিসঙ্কেত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি বিভাগীয় শহর খুলনায় আয়োজন করা হয় বীমামেলা ২০১৯। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এই মেলার আয়োজন করা হয়। সাধারণ ও জীবন বীমা মিলিয়ে ৭৮টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় এতে। তবে যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই মহাআয়োজন তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে বলে মনে করছেন বীমা সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, জনগণের সম্পৃক্ততা না হলে বীমামেলা আয়োজন মূল্যহীন। শুধু তাই নয়, বীমামেলায় গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি থাকলেও বেশিরভাগ বীমা কোম্পানি ছিল নিষ্ক্রিয়। অধিকাংশ কোম্পানির এমডিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দেখা যায়নি। নামকাওয়াস্তে প্রতিনিধি রেখে বীমামেলায় অলস সময় পার করেছেন অনেকে। এতে করে মেলার নামে অর্থ অপচয় কি না প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।এমনকি মেলার শেষদিন শনিবার রাত ১১টায় এর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলেও সন্ধ্যার আগেই স্টল গুছিয়ে নিয়েছিল বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। কতটা অন্তঃসারশূন্য হলে এটা সম্ভব বলে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকে। তাদের মতে, নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের বীমা করার আগ্রহ গড়ে তুলতে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, মেলা ও বিভিন্ন ধরনের প্রকাশনার ওপর জোর দেয়া উচিত।
দুদিনের মেলা ঘুরে দেখা গেছে, স্টল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বীমাকর্মী ছাড়া সাধারণ জনগণের উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। তবে স্কুলপড়ুয়া কয়েকজন ছাত্রের সাথে কথা বলে বীমা সম্পর্কে অসংলগ্ন কথাবার্তা শোনা গেছে। মেলার সার্বক্ষণিক তথ্যসেবা প্রদানে সংবাদকর্মীদের জন্য ছিল না মিডিয়া কর্নার। ঢাকা থেকে যাওয়া সাংবাদিক টিমকে তথ্য সরবরাহেরও কেউ ছিল না। ছিল না সংবাদকর্মীদের অন্যতম মাধ্যম ইন্টারনেট সেবা। এমনকি প্রেস রিলিজ সরবরাহ করার মতো কোনো কর্মকর্তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। যে কারণে মেলা উদ্বোধনের পরপরই মেলাস্থল ত্যাগ করে প্রায় সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা। এমনকি স্থানীয় পত্রিকাগুলোও মেলার খবর সংগ্রহে তেমন আগ্রহ দেখায়নি। সাংবাদিকদের সাথে বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের দূরত্বের গুজবটি এবার যেন সত্যিই প্রমাণিত হলো। এছাড়া গণমাধ্যমকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। বীমামেলায় এহেন প্রাপ্তিতে মেলা আয়োজনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে মনে করেন খাতসংশ্লিষ্টরা।এ ব্যাপারে আইডিআরএর সদস্য ও মেলা আয়োজন কমিটির প্রধান গকুল চাঁদ দাসকে প্রশ্ন করা হলে মেলার বাজেটসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাননি সাংবাদিকদের সাথে। ক্যামেরা দেখে দ্রুত সরে পড়ার দৃশ্য (ভিডিওচিত্রে) দেখা যায়। তবে আইডিআরএর চেয়ারম্যান জানান, জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সুন্দরভাবে আগ্রহী করে তুলবে এই বীমামেলা।
মেলার প্রাপ্তি বিষয়ে খাতসংশ্লিষ্ট অনেকের সাথে কথা হলে তারা জানান, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সদস্যদের বীমাসংশ্লিষ্টতা না থাকায় এই খাতের উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটছে। ইড্রা শুধু বীমাখাতকে নিয়ন্ত্রণের জন্যই জন্ম হয়নি, বরং এর নামের প্রথমেই বলা হয়েছে উন্নয়নের কথা। এক্ষেত্রে ‘বীমা আইন- ২০১০’-এর বিচ্যুতি ঘটছে কিনা প্রশ্ন রাখছেন অনেকেই। শুধু তাই নয়, এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী ১ মার্চ প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় বীমা দিবস ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনকে সফল করতে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তারা।
Posted ৩:১৮ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed