নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৪ মে ২০২০ | প্রিন্ট | 441 বার পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নিয়ম অনুয়ায়ী ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিত হবে ১৭ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীরা। খেলাপি ঋণ ও সাধারণ ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ ব্যর্থ হলে সেই ব্যাংক মুনাফা ঘোষণা করতে পারবে না। সুযোগ-সুবিধা সমন্বয়ের পর যেসব ব্যাংকের মুলধন ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসবে তারা ২০১৯ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক মুনাফা বণ্টন করতে পারবে না। ২০১৯ সালের ১২টি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি এবং ১২টি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল। উভয় মিলে ১৭টি ব্যাংক মুনাফা ঘোষণাই করতে পারবে না। এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে ৭টিই সরকারি ব্যাংক। মুনাফা ঘোষণার পর তা বণ্টন না করলে ব্যাংকগুলোর হাতে ৫-৬ হাজার কোটি টাকা থাকবে।
এই ব্যাংকগুলো হলো সরকারি খাতের সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, জনতা, বেসিক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে এবি, ন্যাশনাল, স্ট্যান্ডার্ড, সোস্যাল ইসলামী, ঢাকা, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট, বাংলাদেশ কমার্স, আইসিবি ইসলামী, পদ্মা ও ট্রাস্ট ব্যাংক।
ব্যাংকগুলোর অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এসব তথ্য জানা গেছে।
নিরীক্ষিত প্রতিবেদনে অযোগ্য ব্যাংকের সংখ্যা বাড়তে পারে। গত ১১ মে ঘোষিত নীতিমালার আওতায় মূলধনের ওপর ভিত্তি করে ব্যাংকগুলোকে ৪টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। প্রত্যেক ক্যাটাগরির মুনাফা ঘোষণার পরিমাণ বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তবে এ মূলধন হতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ ছাড়াই। কোনো ব্যাংক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করলে তা সমন্বয় করে মূলধন হিসাব করতে হবে।
পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ৯টি ছাড়া সব ব্যাংক মুনাফা ঘোষণা করতে পারবে। এই ২১টি ব্যাংকের মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ছাড়া বাকি ২০টি ব্যাংকের মূলধন ১২ দশমিক ৫০ শতাংশের ওপরে। এই ব্যাংকগুলো নীতিমালা অনুসারে সর্বোচ্চ মুনাফা ঘোষণা করতে পারবে। তারা নগদ ১৫ শতাংশসহ ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে। তবে তাদের মধ্যে বেশকিছু ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ছাড় গ্রহণ করে ২০১৯ সালে মুনাফা দেখিয়েছে। এসব ব্যাংককের ছাড় সমন্বয় করে মুনাফা হিসাব করতে হবে। ২০১৯ সালের সমাপ্ত বছরে যেসব ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করে ফেলেছে তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত শর্তের সাথে সমন্বয় করবে। শর্ত পূরণ হলেও ৩০ সেপ্টেম্বরের আগে তা বিতরণ করতে পারবে না।
ইতোমধ্যে তালিকাভুক্ত ছয়টি ব্যাংক ২০১৯ সালের সমাপ্ত বছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ৩০ শতাংশ নগদ, ইস্টার্ন ব্যাংক ২৫ শতাংশ নগদ, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ১১ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার, ব্যাংক এশিয়া ১০ শতাংশ নগদ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার এবং উত্তরা ব্যাংক ১০ শতাংশ নগদ ও ২৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডেফারেল সুবিধার অধীন নয় (প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময় নেয়নি যে ব্যাংক) এমন ব্যাংকের মূলধনের পরিমাণ ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের সাড়ে ১২ শতাংশ বা তার বেশি হলে সামর্থ্য অনুসারে ওই ব্যাংক সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদসহ ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে। ডেফারেল সুবিধার অধীন না থাকা যেসব ব্যাংকের মূলধন ১১ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে সাড়ে ১২ শতাংশের মধ্যে তারা সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ শতাংশ নগদসহ ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে। আর ডেফারেল সুবিধার আওতায় থাকা যেসব ব্যাংকের সম্পূর্ণভাবে প্রভিশন সমন্বয়ের পর মূলধন সংরক্ষণের হার ১১ দশমিক ২৫ শতাংশ বা তার বেশি সে সব ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ নগদসহ ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে। আর ডেফারেল সুবিধা সমন্বয়ের পর যেসব ব্যাংকের মূলধন ১১ দশমিক ২৫ শতকাংশের কম তবে ন্যূনতম ১০ শতাংশ হবে তারা ৫ শতাংশ স্টক দিতে পারবে। কোনো ব্যাংকের মূলধন সংরক্ষণের হার ১০ শতাংশের কম হলে ওই ব্যাংক লভ্যাংশ দিতে পারে না।
Posted ৭:৪৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৪ মে ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan