শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x
এনটিসি’র চেক ডিসঅনার

এমডি সিএফও’কে উকিল নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   265 বার পঠিত

এমডি সিএফও’কে উকিল নোটিশ

কোটি কোটি টাকা লোপাট, শীর্ষস্থানীয় নীতি নির্ধারণী কর্মকর্তাদের উদাসিনতাসহ নানা অব্যবস্থাপনা এবং ক্রমাগত লোকসানের ফলে ভয়াবহ তারল্য সংকটে ন্যাশনাল টি কোম্পানি। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ঋণ ছাড় ব্যতীত মাত্র ৩ হাজার ৩৩৯ টাকার একটি বিলও পরিশোধের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে কি তারল্য সংকট নিয়ে বর্হিঃনিরীক্ষক হুদাভাসি চৌধুরি এন্ড কোং এর প্রতিবেদনই সত্য!

সূত্র মতে, গত ২ আগস্ট সাপ্তাহিক হবিগঞ্জের খবর পত্রিকার অনুকূলে এনটিসি থেকে মাত্র ৩ হাজার ৩৩৯ টাকার বিজ্ঞাপন বিল ইস্যু করা হয়। পূবালী ব্যাংকের শান্তিনগর শাখার চেক নং-এএনএ ৬১৪৭৩৭৬ এবং এ/সি নং- ২৯৪০১০২০০০৫৪১ এই চেকটি ‘ডিসঅনার’ হয়। ইতোমধ্যে চেক গ্রহীতা শাহ মো. হুমায়ুন কবীরের পক্ষে তার আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী গত ৩ সেপ্টেম্বর এনটিসির ভারপ্রাপ্ত এমডি মোহাম্মদ মুসা এবং জিএম অর্থ ও ফাইন্যান্স মো. কেরামত আলী (সিএফও) বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন। নোটিশে ১৫ দিনের মধ্যে সাপ্তাহিক হবিগঞ্জের খবর পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক শাহ মো. হুমায়ুন কবীরের পাওনা ৩ হাজার ৩৩৯ টাকার নগদে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় নোটিশ প্রাপ্ত এনটিসি’র ভারপ্রাপ্ত এমডি এবং সিএফও’র বিরুদ্ধে চেক ডিসঅনার আইনে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানানো হয়।

এই বিষয়ে সিএফও মো. কেরামত আলীর বক্তব্য জানতে চাইলে, তিনি শুরুতেই সাংবাদিক শাহ মো. হুমায়ুন কবীরকে চাঁদাবাজ আখ্যায়িত করে ব্যক্তিগত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, “সাংবাদিক পরিচয় দানকারী চাঁদাবাজ জনৈক হুমায়ুন কবির উপরোক্ত মিথ্যা সংবাদ দেখিয়ে আমাকে ব্লাকমেইল করার চেষ্টা করে। তিনি তার ব্যাংক হিসাব পাঠিয়ে চাঁদা দাবি করেছেন। তাকে চাঁদা না দেওয়ায় সে ন্যাশনাল টি কোম্পানির নামে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। সে কোম্পানি থেকে অনিয়মের দায়ে সদ্য বরখাস্ত হওয়া কিছু সাবেক কর্মকর্তা এবং কোম্পানির অভ্যন্তরের কিছু সুবিধাবাজ ও ফাকিবাজদের সম্পৃক্ত ও সহযোগিতায় কোম্পানির সুনাম নষ্ট করার জন্য অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে সকলকে সজাগ থেকে কোম্পানির স্বার্থে যার যার জায়গা থেকে প্রতিবাদ করার জন্য অনুরোধ করছি।”

সাংবাদিক শাহ মো. হুমায়ুন কবীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘চেক ডিসঅনারের উকিল নোটিশ পাঠানোর পর এনটিসি’র জিএম সৈয়দ মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে চারজন বাগান ম্যানেজার ও একজন ডিজিএমসহ মোট ৬ জন কর্মকর্তা হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসে গত ৯ সেপ্টম্বর বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত আমার সাথে বৈঠক করেন। সৈয়দ মাহমুদুল হাসান সাংবাদিক শাহ মো. হুমায়ুন কবীরকে জানান, এনটিসি’র স্বতন্ত্র পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান এবং মিজানুর রহমান খানের নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য এ বৈঠকের আয়োজন। সিএফও মো. কেরামত আলী বিষয়টি তাদের অবগত ও নিশ্চিত করেন। কেরামতের চাপেই তারা আমার সাথে এক মাসের মধ্যে আপোষ মীমাংসা করার প্রতিশ্রুতি দেন’।

উল্লেখ্য, গত অর্থ বছরে প্রতিষ্ঠানটির বহিঃনিরীক্ষক মেসার্স হুদাভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং তাদের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিলেন এই কোম্পানির ব্যাংক ঋণ ও অন্যান্য দায়ের পরিমাণ সম্পদের তুলনায় আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতায় প্রতিষ্ঠানটি অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন। বহিঃনিরীক্ষক তারল্য সংকট হেডে অ্যাম্পেসিস অব ম্যাটারে কোম্পানির অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানটির বহিঃনিরিক্ষক তাদের প্রতিবেদনে আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ধারাবাহিকভাবে তারল্য সংকট চলতে থাকলে শেয়ারহোল্ডারর্স ইকুইটি এন্ড লায়াবিলিটিজ, নন কারেন্ট লায়াবিলিটিজ ও কারেন্ট লায়াবিলিটিজের জন্য দায়-দেনা পরিশোধ করা এনটিসির পক্ষে আর সম্ভব হবে না। এছাড়া আদার অপিনিয়ন হেডে উল্লেখ করেন, ‘লোকসানের এই ধারা অব্যাহত থাকলে কোম্পানি অবসায়ন অথবা চা বাগানসহ সকল ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ করা ছাড়া বিকল্প উপায় থাকবে না’। বহিঃনিরীক্ষক মেসার্স হুদাভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং তাদের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে যে অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন, কয়েক মাসের ব্যবধানেই চেক ডিসঅনারের ঘটনায় ফুটে উঠেছে ন্যাশনাল টি কোম্পানির অর্থনৈতিক দৈন্যদশার চিত্র।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৪:০৫ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।