নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট | 211 বার পঠিত
বীমা কোম্পানিগুলোর নির্বাহীদের সংগঠন ‘এসোসিয়েশন অব ইন্স্যুরেন্স এক্সিকিউটিভসের (এআইই)’ ২০২৪-২০২৫ মেয়াদে নির্বাহী পরিষদ গঠনে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিয়ে একতরফাভাবে ১৯ সদস্যের নতুন কমিটি গঠনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নতুন কমিটি গঠনের আগে স্বল্প সংখ্যক সদস্যের উপস্থিতিতে কয়েকজন সিনিয়র সদস্য নিয়ে লোকদেখানো ৫ সদস্যের একটি সিলেকশন কমিটি গঠন করা হয়। সিলেকশন কমিটির ৫ জন হলেন ইফতেখার আহমেদ, বিএম ইউসুফ আলী, শাহরিয়ার আহসান, আলী হোসেন ও বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল।
সাধারণত এই সিলেকশন কমিটির মূল কাজ সংগঠনের সকল সদস্যের মধ্য থেকে যোগ্যতাসম্পন্ন সদস্যদের নিয়ে ১৯ সদস্যের নতুন নির্বাহী কমিটি গঠন করা। তবে কোন অবস্থাতেই এই সিলেকশন কমিটির ৫ জনের কেউ ১৯ সদসের পূর্ণাঙ্গ নতুন কমিটিতে থাকতে পারবেন না। এটাই বিধান। কিন্তু ‘এআইই’র নতুন নির্বাহী কমিটিতে নাটকীয়ভাবে সিলেকশন কমিটির সদস্য ও বর্তমান কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলের নাম পুনরায় সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যা সম্পূর্ণ অনৈতিক।
সংগঠনের সাধারণ সদস্যদের মতামত ছাড়াই গঠনতন্ত্রের দোহাই দিয়ে স্বৈরাচারী কায়দায় একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে সভাপতি হাফিজ উল্ল্যাহ ও সেক্রেটারি জেনারেল বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডলকে পুনর্নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। ক্ষুব্ধ সাধারণ সদস্যরা বলেন, বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল যেখানে, অনিয়ম, গন্ডগোল সেখানে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ‘দৈনিক ব্যাংক বীমা অর্থনীতি’কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। সূত্র আরো জানায়, গত ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত সভায় সদস্যদের মতমত গ্রহণ না করে, এক তরফাভাবে দুই বছর মেয়াদে ‘এআইই’র ১৯ সদস্যের নির্বাহী পরিষদের নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়। এই বিতর্কিত কমিটি গঠনের নেপথ্যে ভূমিকা রেখেছে বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল গং।
সংগঠনের একাধিক প্রাক্তন নির্বাহী সদস্য আরো জানান, ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় ৮১টি বীমা কোম্পানির সাধারণ সদস্যদের প্রতিও অসম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিতর্কিত কমিটি নিয়ে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করেন। এক পর্যায়ে একজন সিনিয়র সদস্য প্রতিবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান বর্জন করে বেরিয়ে আসেন।
ক্ষুব্ধ সিনিয়র সদস্যরা জানান, স্বৈরাচারি কায়দায় অবৈধভাবে গঠন করা নতুন নির্বাহী কমিটিতে ১৯ জনের মধ্যে মাত্র ৪ কোম্পানির ১১ জন প্রতিনিধি রয়েছেন। বাকি ৭৭টি কোম্পানির মধ্য থেকে বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল গংয়ের ৮ জনকে নিয়ে তাদের পকেট কমিটি ঘোষণা করেন।
নতুন এই কমিটির ১৯ কর্মকর্তা হলেন সভাপতি হাফিজ উল্ল্যাহ ও সেক্রেটারি জেনারেল ড. বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল, প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ইমাম শাহীন, দ্বিতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট মীর নাজিম উদ্দিন, তৃতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলমগীর, ট্রেজারার এস এম শহীদুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুল হুদা ডিউক, সোস্যাল এন্ড কালচারাল সেক্রেটারি মিসেস ফেরদৌস আরা চৌধুরী নিম্মি, পাবলিকেশন্স এন্ড পাবলিসিটি সেক্রেটারি শাখাওয়াত হোসেন মামুন, গেমস এন্ড স্পোর্টস সেক্রেটারি মঈন উদ্দিন, যুগ্ম-মহাসচিব মো. সামসুল হুদা, জয়েন্ট ট্রেজারার মাহফুজুর রহমান এফসিএ। নির্বাহী সদস্যরা হচ্ছে মো. আনোয়ার হোসেন, কাজী মোকাররম দস্তগীর, মো. নিজাম উদ্দিন, এস এম নুরুজ্জামান, সৈয়দ আবদুল্লাহ জাবির, মো. সাইদুল ইসলাম চুন্নু এবং আবুল কালাম আজাদ।
উল্লেখ্য, বিগত ২০২২-২৩ এর কমিটি গঠন করার সময় বর্তমান সভাপতি হাফিজুল্লাহ ঘোষণা দিয়েছিলেন, তার বয়স হয়েছে, তিনি অব্যাহতি চান। ওই সভায় সবাই তাকে শেষবারের মতো সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের অনুরোধ জানালে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে তার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু এবার এমন কি হলো যে, বিশ্বজিৎ মন্ডলকে সাথে নিয়ে স্বৈরাচারি কায়দায়, নাটকীয়ভাবে সভাপতির পদে বহাল থাকলেন।
Posted ৯:৪০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩
bankbimaarthonity.com | rina sristy