বিবিএনিউজ.নেট | বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০১৯ | প্রিন্ট | 936 বার পঠিত
জনতা ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজেই তুলে ধরলেন ক্রিসেন্ট ও অ্যাননটেক্স গ্রুপের ঋণ খেলাপি হয়ে যাওয়ার তথ্য। এ দুটি গ্রুপের কারণে ব্যাংকটি যে চাপে পড়েছে তাও তুলে ধরলেন তাঁরা।
এ বার্ষিক সম্মেলন বুধবার সকালে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান লুনা সামসুদ্দোহার সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুছ ছালাম আজাদ।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান লুনা সামসুদ্দোহা বলেন, গত বছরে জনতা ব্যাংকের অনেক খেলাপি ঋণ যোগ হয়েছে। ক্রিসেন্ট ও অ্যাননটেক্স গ্রুপের ঋণও এর বড় কারণ। ক্রিসেন্ট গ্রুপ ১৯৮০ সাল থেকে জনতা ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসা করে। ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কেনা রপ্তানি বিল খেলাপি হয়ে গেছে। অ্যাননটেক্স গ্রুপ ২০০৫ সাল থেকে জনতা ব্যাংকের গ্রাহক। ২০০৭ থেকে ২০১৫ সালে ২২ প্রতিষ্ঠানকে অর্থায়ন করা হয়। এসব ঋণ খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। পর্ষদের পক্ষ আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এসব তথ্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংককে জানানো হয়েছে।
এমডি আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, ক্রিসেন্ট ও অ্যাননটেক্স গ্রুপের কারণে খেলাপি ঋণ অনেকে বেড়ে গেছে। এ জন্য মামলা ও সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ১২০০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় হয়েছে। চলতি বছর হবে ঘুরে দাঁড়ানোর বছর।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ছিল ৭ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা, গত বছর শেষে যা বেড়ে হয়েছে ১৭ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে এ দুটি গ্রুপের ঋণই প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এর ফলে ব্যাংকটির বড় ধরনের লোকসানে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়েছে। লিজ অর্থায়নের সঙ্গে যারা জড়িত, এক দুইটা বাদ দিয়ে বাকিদের ফোন করলে অফিসে পাওয়া যায় না। এটা বাস্তবতা। এতে কতটা ক্ষতি হয়েছে তা জানি না। সেটা জানার জন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে বিশেষ নিরীক্ষা হবে। কাউকে জেলে পাঠানোর জন্য, প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকৃত অবস্থা জানতেই এ উদ্যোগ। তিনি বলেন, মানুষ মনে করে ব্যাংকগুলো যে আস্থার জায়গায় ছিল, তা দিন দিন কমছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কোনো ক্ষেত্রে খেলাপি ঋণ আর বাড়বে না। আপনারা চাপে পড়ে, না বুঝে এসব (অপকর্ম) করেছেন কি না আমি জানি না। যারা বুঝে না, তাদের আমি ব্যাংকের বোর্ডে রাখব না। এ জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে যতবার বোঝানো প্রয়োজন বোঝাব। বিষয় ভিত্তিক জানাশোনা লোক না থাকলে ব্যাংক চালানো যায় না।
তিনি বলেন, আমার কাছে অনেকে ব্যাংকের পরিচালক হওয়ার জন্য তদবির নিয়ে আসে। আমি সবার সাক্ষাৎকার নেব, এরপরই নিয়োগ হবে। যা হয়ে গেছে, সেভাবে আর হবে না।
Posted ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed