শনিবার ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা বিশ্লেষকদের

বিবিএনিউজ.নেট   |   বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   513 বার পঠিত

খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা বিশ্লেষকদের

বর্ধিত হারে ঋণ প্রদানের সুযোগে এক শ্রেণীর ব্যাংক আবার আগ্রাসী ব্যাংকিং করবে। এতে ঋণ ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতে বিদ্যমান খেলাপি ঋণ আরো বেড়ে যেতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণসীমা বাড়ানোয় এমনই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বুধবার জানিয়েছেন, দেখতে হবে ঋণসীমা কমানোর প্রেক্ষাপট কী ছিল। ঋণসীমা কমানোই হয়েছিল কিছু ব্যাংকের আগ্রাসী ব্যাংকিং বন্ধ করার জন্য। কোনো রকম নিয়মাচার না মেনে কিছু ব্যাংক দেদার ঋণ বিতরণ করে।

বর্ধিত হারে ঋণ বিতরণ করায় ওই সময় বিতরণকৃত ঋণের অপব্যবহার হওয়ার অভিযোগ উঠে। তখন খেলাপি ঋণ বাড়তে থাকে। মূলত এ কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংক ওই সময় বিনিয়োগসীমা ৮৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৮৩ শতাংশে নামিয়ে আনে। এখন ঋণসীমা আবার বাড়িয়ে দেয়ায় কিছু ব্যাংক আবারো আগ্রাসী ব্যাংকিং করতে পারে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ভালোভাবে নজরদারি করতে হবে ব্যাংকিং খাতে। কোনো ব্যাংক আগ্রাসী ব্যাংকিং করলে সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে ঋণসীমা বাড়ানোর সুফল পাওয়া যাবে।

এদিকে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সঙ্কট চলছে। বেশির ভাগ ব্যাংক গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করতে পারছে না। পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কাজে ব্যয় করার জন্য সরকারের মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকে রাখা প্রায় দুই লাখ কোটি টাকার আমানত উত্তোলন করে সরকারের কোষাগারে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে ব্যাংকিং খাতে নগদ টাকার সঙ্কট আরো বেড়ে যাবে। এমনি পরিস্থিতি সামগ্রিকভাবে বর্ধিত হারে ঋণসীমা বাস্তবায়ন নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। এ বিষয়ে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে রাখা বৈদেশিক মুদ্রাসহ বিভিন্ন তহবিল থেকে ধার করে ঋণ দিতে পারবে। তবে সামগ্রিকভাবেই ঋণ কার্যক্রমে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যাংকগুলোকে কঠোর তদারকির মধ্যে রাখতে হবে।

এ বিষয়ে ব্যাংকারদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণসীমা বাড়ানোর ঘোষণা ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি ভালো সিদ্ধান্ত। তবে ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে ভালোগ্রাহক নির্বাচন করে দেখেশুনে ঋণ বিতরণ করতে হবে। অপর দিকে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানত সরকারি কোষাগারে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে ব্যাংকিং খাতে কী ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে এমন এক প্রশ্নের জবাবে এবিবি চেয়ারম্যান বলেন, তখন কিছুটা সমস্যা তো হবেই। তবে সরকার এ সিদ্ধান্ত কিভাবে বাস্তবায়ন করবে তা আগে দেখতে হবে। যেহেতু এ বিষয়ে এখনো কোনো দিকনির্দেশনা আসেনি, এ কারণে এটা নিয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ঋণসীমা কমানোই হয়েছিল কিছু ব্যাংকের আগ্রাসী ব্যাংকিং বন্ধ করার জন্য। সাধারণত অর্থের সংস্থান করে পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমদানির জন্য এলসি খোলার ৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য আসে। আর এ সময়ের মধ্যেই রফতানিকারকের দায় পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ব্যাংকই অর্থের সংস্থান না করে দেদার পণ্য আমদানির জন্য এলসি খোলে। এতে দায় পরিশোধের সময় বিপাকে পড়তে হয়। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে টাকার সংস্থান না করতে পেরে কেউ কেউ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হাত পাতে। এতে এক দিকে কোনো কোনো ব্যাংকের ঋণসীমার অনুপাত ১০০ ভাগের ওপরে উঠে যায়। তারল্য ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ওই সময় ঋণের টাকা পাচারেরও অভিযোগ উঠে। একই সাথে ঋণের অর্থ আদায় না হওয়ায় খেলাপি ঋণও বেড়ে যায়। এ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণসীমা কমিয়ে এনেছিল। কিন্তু আবারও এ ঋণসীমা আগের অবস্থানে নিয়ে যাওয়ায় কিছু ব্যাংক আগ্রাসী ব্যাংকিংয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদারকি ব্যবস্থা কঠোর না করলে আবারো আগের মতো তারল্য ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ২:৩৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।