
বিবিএনিউজ.নেট | মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০১৯ | প্রিন্ট | 632 বার পঠিত
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তির ব্যবহারে প্রচুর মানুষ বেকার হবে। গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল খাতের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ক্রমেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, বিগডাটা, অটোমেশন, ভ্যালু চেইনের ডিজিটাইজেশন, মাইক্রো ফ্যাব্রিকস, থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের আবির্ভাব ঘটছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ বাংলাদেশেও এই ঢেউ লাগবে। তাই এখন থেকেই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মানুষের দক্ষতা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে কারখানার ডিজিটাইজেশনও পিছিয়ে থাকা যাবে না।
সোমবার ফ্রাংকফুর্ট কংগ্রেস সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মেসে ফ্রাংকফুর্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডেটলিফ ব্রাউন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মেসে ফ্রাংকফুর্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট টেক্সটাইল অ্যান্ড টেকনোলজিস) ওলাফ স্কিমিডিট, জার্মান মেশিনারি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ডিডিএমএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এলগার স্ট্রয়াব, মেসে ফ্রাংকফুর্টের পরিচালক (মার্কেটিং কমিউনিকেশন) থিমো সেজওয়েনফার প্রমুখ।
বাংলাদেশের পোশাক খাতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাব সম্পর্কে এলগার স্ট্রাউব বলেন, ‘টেক্সটাইল উৎপাদনে বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কিন্তু পণ্যের মান ও সক্ষমতা বাড়াতে কারখানায় আরো স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি এবং দক্ষতাসম্পন্ন জনশক্তি তৈরি করতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের নানা দিক তুলে ধরতে জার্মানির ফ্রাংকফুর্টে আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে চার দিনের টেকটেক্সটিল এবং টেক্সপ্রসেস প্রদর্শনী। চার দিনের এই প্রদর্শনীতে টেকটেক্সটিল ফোরাম বিভিন্ন তথ্য বিনিময়ের একটি নতুন কাঠামোর সূচনা হবে বলে আশা করেছে আয়োজক মেসে ফ্রাংকফুর্ট।
প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানসহ ১১৪টি দেশ থেকে প্রায় ৪৭ হাজার ৫০০ দর্শক এবং দুই হাজারের মতো প্রদর্শক অংশ নেবে। বাংলাদেশ থেকে অংশ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছে মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, এভিন্স গ্রুপ, জায়ান্ট গ্রুপ, রুটস সোর্সিং, নাসা গ্রুপ, ইসলাম গার্মেন্টস, কেন পার্ক বাংলাদেশ অ্যাপারেল, জিওভানা ডেনিম, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ, এপিলিওন গ্রুপ, বেনেটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ।
মেসে ফ্রাংকফুটের এক্সিকিউটিভ বোর্ড সদস্য ডেটলেফ ব্রাউন বলেন, ‘টেকপ্রসেস বড় ধরনের মেলা যেখানে উদ্ভাবনী প্রদর্শকরা সর্বশেষ প্রযুক্তি তুলে ধরে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিষয়গুলোর প্রভাব ও সমাধান নিয়ে প্রদর্শনীতে আলোচনা হয়।’ সামনের দিনগুলোতে টেক্সটাইল ও টেকপ্রসেস ইনোভেশনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২২ সালে টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের বাজার দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়াবে ১৯৮ বিলিয়ন ডলার। ইউরোটেক্সের তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বের টেক্সটাইল উৎপাদনের মধ্যে টেকনিক্যাল টেক্সটাইল ২৭ শতাংশের মতো যেখানে জার্মানি ২০২০ সালের মধ্যে টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের বাজার দ্বিগুণ হবে। ইউরোটেক্সের তথ্য অনুযায়ী সারা বিশ্বের টেক্সটাইল উৎপাদনের মধ্যে টেকনিক্যাল টেক্সটাইল ২৭ শতাংশের মতো যেখানে জার্মানি সারা বিশ্বে নেতৃস্থানীয় অবস্থান ধরে রেখেছে। প্রদর্শনী দুটিতে বিশ্বের ৫৯টি দেশ থেকে এক হাজার ৮১৮ প্রদর্শক অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে এ ছাড়া টেকটেক্সটিল ১৫০১ প্রদর্শক ৫৭টি অংশ নিচ্ছে এবং টেকপ্রসেসে ৩১৭ জন প্রদর্শক ৩৪টি দেশ থেকে অংশ নিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই মুহূর্তে বিশ্বের যেকোনো দেশের টেক্সটাইল প্রতিষ্ঠানেরই উচিত ভ্যালু অ্যাডিশন নিয়ে কাজ করা, কারণ বিশ্বে তাদের পণ্য নিয়ে বাণিজ্যের ইঁদুর দৌড়ে টিকে থাকতে হলে, ক্রেতাদের দিতে হবে অন্যদের চেয়ে কিছু বেশি। এই বিশেষ মূল্য সংযোজন বা ভ্যালু অ্যাডিশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে টেকনিক্যাল টেক্সটাইল।
টেকনিক্যাল টেক্সটাইল বলতে বোঝায় এমন কাপড়, যা ফ্যাশনের জন্য ব্যবহার হয় না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, অগ্নিনির্বাপক বা নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করা যায় এমন কাপড়, সামরিক ও পুলিশ ইউনিফর্ম বা এমনকি মহাকাশচারীদের জন্য তৈরি করা বিশেষ কাপড় ইত্যাদি।
Posted ৩:৩৫ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed