| বৃহস্পতিবার, ০৩ জানুয়ারি ২০১৯ | প্রিন্ট | 907 বার পঠিত
পাঁচ বছরে আয়-মুনাফায় এগিয়েছে এক্মি ল্যাবরেটরিজ। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিটির এ সময় সম্পদ, মূলধন, আয় ও মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তুলনামূলকভাবে কম দামে গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য, দেশে-বিদেশে ওষুধের চাহিদা বৃদ্ধি ও সময়োপযোগী ব্যবস্থাপনার ওপর ভর করেই এগিয়ে যাচ্ছে কোম্পানিটি। পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলিত অর্থে নতুন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের ওষুধশিল্পের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একমিও এগিয়ে যাবে বলে আশা করছেন কোম্পানিটির দায়িত্বশীলরা।
তথ্যমতে, পাঁচ বছর আগে ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি এক্মি ল্যাবরেটরিজের বিক্রয়লব্ধ আয় ছিল এক হাজার ২১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, যা ২০১৭-১৮ আর্থিক বছর শেষে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৮১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ পাঁচ বছরের ব্যবধানে এক্মি ল্যাবরেটরিজের আয় প্রায় ৪৫ শতাংশ বেড়েছে, টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা বেশি। গত পাঁচ বছরে বিক্রয়লব্ধ আয়ের প্রবৃদ্ধি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটিকে এগিয়ে নিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। আয়ের প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সংগতি রেখে কর-পরবর্তী মুনাফা-সম্পদও বেড়েছে।
নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০১৩ সালের জুন শেষে প্রায় ৮৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিল এক্মি ল্যাবরেটরিজ। আর ২০১৮ সালের জুন শেষে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪২ কোটি ৬৫ লাখ টাকায়। অর্থাৎ পাঁচ বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা প্রায় ৬০ শতাংশ বেড়েছে। ওষুধ ও রসায়ন খাতে তুলনামূলকভাবে এগিয়ে থাকা কোম্পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এক্মি ল্যাবরেটরিজের আয়-মুনাফাও বাড়ছে।
প্রতিযোগী কোম্পানির চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম দামে গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদন-বিপণন, দেশে-বিদেশে ওষুধের চাহিদা বৃদ্ধি, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতাই এক্মি ল্যাবরেটরিজের ব্যবসায়িকভাবে এগিয়ে থাকার মূল চালিকাশক্তি বলে জানিয়েছেন কোম্পানিটির দায়িত্বশীলরা।
আলাপকালে এক্মি ল্যাবরেটরিজের কোম্পানি সচিব মো. রফিকুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘ছয় দশকের বেশি সময়ের পথচলায় সব সময়েই গুণগত মানকে প্রাধান্য দিয়েছে এক্মি। সেইসঙ্গে উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয়মূল্য যাতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে, সেই বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তাই তুলনামূলকভাবে কম দামেই ভালো মানের ওষুধ বাজারে ছেড়েছি। যে কারণে দেশে-বিদেশে এক্মির ওষুধের বাজার বেড়েছে। দেশের চাহিদা পূরণ করে এখন বিশ্বজুড়ে ৩৫টিরও বেশি দেশে আমরা জীবনরক্ষাকারী ওষুধ রফতানি করছি। এগিয়ে চলার ধারা অব্যাহত রাখতেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
এদিকে আয়-মুনাফার সঙ্গে এক্মি ল্যাবরেটরিজের সম্পদও বেড়েছে। পাঁচ বছর আগে ২০১৩ সালে কোম্পানিটির মোট সম্পদের মূল্য ছিল প্রায় এক হাজার ৫৫১ কোটি ১৯ লাখ টাকা, যা ২০১৮ সালে দুই হাজার ১১০ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ হিসেবে ওই সময়ে এক্মি ল্যাবরেটরিজের সম্পদ প্রায় ৫৫৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বা প্রায় ৩৬ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আয়-মুনাফা ও সম্পদের সঙ্গে এক্মি ল্যাবরেটরিজের বিনিয়োগকারীরাও সুফল পাচ্ছেন। ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর থেকেই বিনিয়োগকারীদের ৩৫ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দিচ্ছে কোম্পানিটি। ফি-বছর বিনিয়োগকারীদের মুনাফার উল্লেখযোগ্য একটি অংশ দিচ্ছে এক্মি ল্যাবরেটরিজ।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এক্মি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। ওষুধ ও রসায়ন খাতের এগিয়ে থাকা ওই কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৫০০ কোটি। এর বিপরীতে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ২১৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এক্মি ল্যাবরেটরিজের প্রায় ২১ কোটি ১৬ লাখ শেয়ারের মধ্যে ৪০ দশমিক ১২ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে। এর বাইরে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ, বিদেশে বিনিয়োগকারীদের হাতে শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৯ দশমিক ২৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
গতকাল (বুধবার) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক্মি ল্যাবরেটরিজের প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৮৪ টাকায় লেনদেন হয়েছে। আর গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৭৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১১৭ টাকা ৪০ পয়সায় ওঠানামা করেছে। মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বিবেচনায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ উপযোগী অবস্থানে রয়েছে কোম্পানিটি।
Posted ৩:০৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৩ জানুয়ারি ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed