সোমবার ১০ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫ কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

Ad
x

বীমাশিল্পের প্রাণপুরুষ গোলাম মওলা’র মৃত্যু বার্ষিকী আজ

  |   বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   558 বার পঠিত

বীমাশিল্পের প্রাণপুরুষ গোলাম মওলা’র মৃত্যু বার্ষিকী আজ

বীমাশিল্প জগতে যারা পথিকৃৎ তাদেরই একজন গোলাম মওলা। আজ ৪ জুলাই তার মৃত্যু দিবস। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। বীমা সেক্টরের প্রবীণদের হৃদয়ে তার স্মৃতি আজ নাড়া দেবেই। কারণ তিনি ছিলেন বীমা অঙ্গনের প্রাণপুরুষ, ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একান্ত কাছের মানুষ। তাদের দু’জনের মধ্যে গভীর হৃদ্যতা ছিল। দু’জনেই কলকাতার প্রখ্যাত প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যয়ন করেছেন। সেখান থেকেই তাদের পরিচয় এবং সেই সূত্রে বন্ধুত্বের সম্পর্ক, দু’জনের ঘনিষ্ঠতায় বিশ্বাস ছিল। তাদের দু’জনের মধ্যে বয়সের ব্যবধানও ছিল মাত্র কয়েকদিনের। ১৯২০ সালের ২৩ মার্চ গোলাম মওলার জন্ম দিন আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চ। দেশ স্বাধীনের পূর্বে গোলাম মওলা এদেশের বীমাশিল্প সমৃদ্ধকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। আরসিডি (ইরান, পাকিস্তান এবং তুরস্কের সমন্বয়ে গড়া রিজিওনাল কো-অপারেশন ফর ডেভেলপমেন্ট) সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭১-এ দেশত্যাগ করে লন্ডনে চলে যান। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তান জেল থেকে মুক্তি দিয়ে লন্ডনে নেয়া হয়। লন্ডনের ক্লারিজেস হোটেলে ছিলেন তিনি। গোলাম মওলা সেই হোটেলের দরজা খুলে মুখ বাড়াতেই বঙ্গবন্ধু মুখ উঁচু করে বলে ওঠেন,‘ তুই বাইচা আছস? ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন, সঙ্গী ছিলেন ইন্স্যুরেন্স অঙ্গনের গোলাম মওলা ও ড. কামাল হোসেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীও ছিলেন গোলাম মওলার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের অন্যতম।

এই ব্যক্তিত্বকে ইকনোমিক মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ১১ মার্চ, ২০১৯ সিরডাপ মিলনায়তনে গুণীজন সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে মুস্তফা জামান আব্বাসী শেখ মুজিব ও গোলাম মওলার বন্ধুত্বের কথা প্রকাশ করেন। এও বলেন, তাদের গোপন বৈঠক করতেও দেখেছেন। একই অনুষ্ঠানে ফারইস্ট ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী হোসেন স্মৃতিচারণ করে বলেন, মওলা একজন দক্ষ প্রশাসক ছিলেন।

গোলাম মওলা ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মার্চ ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সিকান্দার আলী তালুকদার এবং মাতা শামসুননাহার বেগম। তার পিতা ব্রিটিশ আমলে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। আর পিতামহ আবদুর রহমান তালুকদার এবং প্রপিতামহকে মন্ডল তালুকদার ছিলেন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর নিবাসী ব্যবসায়ী। মাত্র ৬৩ বছরের আয়ুষ্কালে গোলাম মওলার জীবন ছিল বর্ণিল ও নানা কর্মে মুখর। ভারতের ওরিয়েন্টাল ফাইন্যান্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদানের মাধ্যমে বীমাজগতে তার সংযোগ। ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি গ্রেট ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। চিনাবাদাম খেতে খেতে চটির তলা ক্ষয় করে গ্রাহক সংগ্রহ করেছেন। ব্যবসা জগতে সুপরিচিত জিএমজি গ্রুপের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। পরবর্তীকালে এটি আজিজ সাত্তারের নিকট বিক্রি হয়। তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে বীমাশিল্প প্রতিষ্ঠায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে সাধারণ বীমা করপোরেশনের প্রথম ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন তিনি । দেশ স্বাধীনের পূর্বে যেমন তিনি এদেশের বীমাশিল্প সমৃদ্ধকরণে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন তেমনি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে জাতীয়করণকৃত বীমাশিল্পকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন জনহিতৈষী এবং পরোপকারী ব্যক্তি। তিনি পরিবারিক বন্ধনে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি বন্ধুবৎসল এবং বন্ধুমহলে কৌতুকপ্রিয়তার জন্য জনপ্রিয় ছিলেন। পেশাগত জীবনে একজন নীতিবান ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সমাজসেবায় তিনি আজীবন অনন্য ভূমিকা রাখেন। ১৯৬১-১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে তিনি রোটারি ক্লাব অব ঢাকার সভাপতি ছিলেন। তিনি অমায়িক ব্যবহারের জন্য পরিচিতজনদের মাঝে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার ছেলে, এক মেয়ে এবং এক নাতি রেখে গেছেন। ছেলেমেয়েরা আজ স্ব স্ব অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত।

Facebook Comments Box

Posted ২:০৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Page 1

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।