বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x
চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে বিএসইসি’র চেয়ারম্যন ও কমিশনারের মেয়াদ

অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ছে দেশের পুঁজিবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ০২ মে ২০২০   |   প্রিন্ট   |   514 বার পঠিত

অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ছে দেশের পুঁজিবাজার

চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ও চেয়ারম্যানের মেয়াদ। এদিকে তাদের বিপরীতে নতুন কাউকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়নি এখন পর্যন্ত। নতুন কাউকে নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত বিএসইসি কোরাম সঙ্কটের কারণে কোনো কমিশন বৈঠকও করতে পারবে না। যে কারণে অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ছে দেশের পুঁজিবাজার। ফলে জরুরি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন হলে সেটি সম্ভব হবে না।

জানা যায়, আগামী ৪ মে মেয়াদ শেষ হচ্ছে বিএসইসির কমিশনার ওয়ান প্রফেসর হেলাল উদ্দিন নিজামীর। তিনিও তার পুরনো কর্মস্থল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাবেন।

হেলাল উদ্দিন নিজামী চলে যাওয়ার পর বিএসইসি আর কোনো কমিশন বৈঠক করতে পারবে না। কারণ তখন মাত্র একজন কমিশনার থাকবেন বিএসইসিতে।

অন্যদিকে আগামী ১৪ মে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের মেয়াদও শেষ হয়ে যাবে। নতুন কোথাও নিয়োগ দেওয়া না হলে তিনি তার পুরনো কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাবেন।

উল্লেখ, তিনজন কমিশনার ও একজন চেয়ারম্যান নিয়ে বিএসইসির কমিশন গঠিত। কমিশন বৈঠকের কোরামের জন্য চেয়ারম্যান ও দুইজন কমিশনারের উপস্থিতি প্রয়োজন। ইতোমধ্যে কমিশনার ড. স্বপন কুমার বালার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি কমিশন থেকে বিদায় নিয়েছেন। গত ১৫ এপ্রিল তার মেয়াদ শেষ হয়। তিনি তার পুরনো কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে গেছেন।

২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের পর বিএসইসিকে পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে পুরনো কমিশন ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিশন গঠন করা হয়। আর এই নতুন কমিশনের দায়িত্ব পান রাষ্ট্রীয় মালিকানার বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবি’র চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যানের অধ্যাপক প্রফেসর ড. এম খায়রুল হোসেন। কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আরিফ খান। পরে আরিফ খান স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছেড়ে যান। অন্যদিকে দুই দফায় তাদের মেয়াদ বাড়ানো হয় ড. এম খায়রুল হোসেন এবং প্রফেসর হেলালা উদ্দিন নিজামীর। তৃতীয় মেয়াদে চেয়ারম্যান ও কমিশনারের নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে প্রথম ঘটনা।

খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশন বেশ কিছু আইনের সংস্কার করলেও সেকেন্ডারি বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে কোনো সাফল্য দেখাতে পারেননি। বরং থেমে থেমে বাজারে টানা দর পতন চলতে থাকে। গত মার্চ মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে আসে। এ সময়ে বাজারে আসা আইপিও এবং রাইট শেয়ারের অংশ বাদ দিলে সূচকের অবস্থা দাঁড়ায় আরও খারাপ।

অন্যদিকে ড. খায়রুল হোসেনের মেয়াদে বাজারে আসা আইপিওগুলোর মান নিয়েও ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। এই সময়ে এই চক্র বিএসইসির সঙ্গে যোগসাজশ করে অতি দূর্বল মৌলের কোম্পানিকে স্বাস্থ্যবান দেখিয়ে আইপিওতে এনে দীর্ঘ মেয়াদে বাজারের ব্যাপক ক্ষতি করেছে বলে আভিযোগ রয়েছে। মাত্র ২০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানির প্লেসমেন্ট শেয়ার বরাদ্দ দেওয়ার মাধ্যমে ২০০ কোটি টাকায় উন্নীত করার মত ঘটনাও ঘটেছে এই বাজারে। কোম্পানির উদ্যোক্তারা কথিত শেয়ার মানি ডিপোজিটকে পরিশোধিত মূলধনে রূপান্তরের ক্ষেত্রেও কারসাজির আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। এসব কোম্পানির বেশিরভাগই ইতোমধ্যে রুগ্ন হয়ে পড়েছে (বলা যায়, আসল চেহারায় ফিরেছে)। শেয়ারের বাজার মূল্য নেমে গেছে অফার মূল্য, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিহিত মূল্যের নিচে। কমিশন অবশ্য বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। কমিশনের দাবি, তারা নিরীক্ষকের প্রত্যায়নকৃত ব্যালান্সশীট, ভ্যালুয়ারের দেওয়া সম্পদ মূ্ল্েযর সনদ এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রত্যায়ন করা ডকুমেন্টসের আলোকেই আইপিও অনুমোদন দিয়েছে। এসব ডকুমেন্টসের কোথাও কোনো সমস্যা থাকলে তার দায় বিএসইসির উপর বর্তায় না।
ব্যাংকবিমাঅর্থনীতি/এস খান

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০২ মে ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।