বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২০ | প্রিন্ট | 1485 বার পঠিত
পুঁজিবাজারে অ-তালিকাভুক্ত বীমা কোম্পানিগুলোকে তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। এ সময়ের মধ্যে তালিকাভুক্ত না হলে বাতিল হবে নিবন্ধন, এমনটাও জানিয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরের সেই ঘোষণার পর পেরিয়ে গেছে ১৩ মাস। সর্বশেষ গত ২৩ সেপ্টেম্বর তালিকাভুক্ত হতে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার বিধিনিষেধও শিথিল করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। এরপরও শুধু এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানি তালিকাভুক্ত হতে পারেনি। এমন প্রেক্ষিতে অ-তালিকাভুক্ত বীমা কোম্পানিগুলোর আর্থিক অবস্থা কি পর্যায়ে আছে, তা জানতে চিঠি দেয় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। চিঠির প্রেক্ষিতে গত ২৯ জানুয়ারি বীমা কোম্পানিগুলোর মুখ্য নির্বাহীরা আইডিআরএ’র সাথে মিলিত হয়ে একটি অগ্রগতি মূল্যায়ন রিপোর্ট উপস্থাপন করে।
এতে দেখা যায়, ২-৩টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হতে প্রস্তুত থাকলেও বাকিগুলোর অবস্থা খুবই শোচনীয়। বীমা খাতের কোম্পানিগুলোকে অনুমোদনের তিন বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার নিয়ম থাকলেও ২০১৩ সালে দেশীয় কোম্পানিগুলোর অনুমোদন পাওয়ার পর পেরিয়ে গেছে সাত বছর। এর মধ্যে নতুন ১৫টিসহ মোট ২৮টি কোম্পানি এখনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারেনি। দেশের মোট ৭৮টি বীমা কোম্পানির মধ্যে ৪৭টি পুঁজিবাজারে কার্যক্রম চালাচ্ছে। তালিকাভুক্তিতে ব্যর্থ হওয়া পুরোনো কোম্পানিগুলোর মধ্যে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স ও সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স অন্যতম।
অন্যদিকে নতুন অনুমোদন পাওয়া ১৫ বীমা কোম্পানির মধ্যে মাত্র দুটি কোম্পানি আইপিওতে আসতে আবেদন করেছে। এগুলো হলো- গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। বাকি ১৩ কোম্পানি- আলফা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রোটেকটিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ট্রাস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেনিথ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স, সিকদার ইন্স্যুরেন্স এবং সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স তালিকাভুক্ত হতে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ ১ম পর্ব উপস্থাপন করা হলো:
১. সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি
সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ২০১৩ সালে বীমা ব্যবসার জন্য বাংলাদেশ সরকারের নিবন্ধন লাভ করে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি আইপিওতে আসতে ইস্যু ম্যানেজার নিয়োগ করেছে। ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত নিরীক্ষিত লাইফ ফান্ড ৯৬ কোটি টাকা, প্রতিষ্ঠানটির ১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৪৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যার মধ্যে উদ্যোক্তাদের ৬০ শতাংশ হিসাবে ২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং আইপিওর জন্য ৪০ শতাংশ হিসাবে ১৯ কোটি টাকা।
অভিমত
ফিক্সড প্রাইস মেথডে পরিশোধিত মূলধনে আইপিও কাঠামোর বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নিকট গত ২৮ অক্টোবর ২০১৮ সালে আইপিও আবেদন করে। পরবর্তীতে কমিশন কর্তৃক ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে নতুন নিয়ম জারির পর ১৩ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে আইপিওর অনুমোদনের জন্য কমিশনে প্রসপেক্টাসসহ আবেদন দাখিল করে। যা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের বিবেচনায় রয়েছে।
এ বিষয়ে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাশেদ বিন আমানের সাথে। তিনি জানান, আমাদের সাথেই আইপিও আবেদন দাখিল করা ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সও ইতোমধ্যে অনুমোদন পেয়ে গেছে। সে ধারাবাহিকতায় আমারও কিছুদিনের মধ্যে অনুমোদন পাবো বলে আশা রাখছি। কোম্পানি আর্থিকভাবে সক্ষম অবস্থায় আছে। আমরা ২০১৮ ও ২০১৯ সালে পলিসি বোনাসও ঘোষণা করেছি। ২০১৮ সালে ছিল প্রতি হাজারে ৭০ টাকা এবং ২০১৯ সালে প্রতি হাজারে ৭৫ টাকা বোনাস প্রদানের ঘোষণা হয়েছে। ২০১৯ সালে আমাদের ১ম বর্ষ প্রিমিয়াম আয় হয়েছে ৪২ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে। এ সময় নবায়ন প্রিমিয়াম ছিল প্রায় সাড়ে ৩৩ কোটি টাকা। একই সময়ে গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স থেকে আয় হয়েছে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। তাছাড়া লাইফ ফান্ডও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে লাইফ ফান্ডে সঞ্চিতির পরিমাণ ৯৬ কোটি টাকা। আবার বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’র অনুমোদিত ব্যয়সীমার মধ্যেই রয়েছে ব্যবস্থাপনা ব্যয়। শতভাগ আইটি বেজড হওয়ার আমাদের খরচ অনেক কম। এ খাতে ২০১৯ সালে ব্যয় ছিল ৩৩ কোটি টাকা। এ সকল কর্মকাণ্ডের পরও বীমাকারীর (বীমা প্রতিষ্ঠান) মূল দায়িত্ব অর্থাৎ গ্রাহকের দাবি পরিশোধে আমরা উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছি। আমাদের গ্রাহকের উত্থাপিত দাবির প্রায় ৯৯ শতাংশ পরিশোধ করা হয়েছে। তাছাড়া এমন কোনো দাবি নেই, যার রেজাল্ট ৭ দিনের মধ্যে দেয়া হয়নি। এসবই সম্ভব হয়েছে আমাদের চেয়ারম্যান ম্যাডামের সঠিক দিকনির্দেশনা আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। শতভাগ অনলাইন নির্ভর হওয়ায় সোনালী লাইফের কর্মকাণ্ড একেবারেই স্বচ্ছ।
Posted ২:১৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২০
bankbimaarthonity.com | Sajeed