বুধবার ৮ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগে দূর্নীতির অভিযোগ!

শেয়ারনিউজ   |   বৃহস্পতিবার, ১০ জানুয়ারি ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   1435 বার পঠিত

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগে দূর্নীতির অভিযোগ!

কয়েকদিন আগেও গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর আসনে কে বসতে যাচ্ছেন- তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে জল্পনা-কল্পনার কমতি ছিল না। নিয়মানুযায়ী জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে এ পদে নিযুক্তির কথা থাকলেও জেষ্ঠ্য লঙ্ঘণের অতীত ইতিহাসের কারণে কেউ নিশ্চিত কিছু বলতেও পারছিলেন না। তবে দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার কঠোর হুঁশিয়ারি আর জিরো টলারেন্সের কারণে সবারই প্রত্যাশা ছিল যে, এবার হয়তো জেষ্ঠ্যতার লঙ্ঘণ হবে না। তবে সে আশায়ও গুড়েবালি। অবশেষে জেষ্ঠ্যতার লঙ্ঘণ করে গত ৭ জানুয়ারি মো: সাহাদাত হোসেনকে প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

তারা অভিযোগ করে বলেন, সদ্য বিদায়ী গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন তার শেষ কার্যদিবসে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওইদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীসভার নতুন সদস্যদের নিয়ে যখন শপথ গ্রহণে ব্যস্ত, ঠিক তখনি সদ্য বিদায়ী এই মন্ত্রী ব্যস্ত ছিলেন তার উদ্দেশ্য পূরণে। অথচ ওই দিন এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার কোন কথা ছিল না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণপূর্ত অধিদপ্তরের একাধিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, মন্ত্রী মহোদয়ের ধারণা ছিল তিনি আবারও নতুন মেয়াদে মন্ত্রীত্ব পাবেন। তাই তিনি গত ২ জানুয়ারি মো: খুরশেদ আলমকে প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্বে) নিয়োগ দেন। যিনি কাল অর্থ্যাৎ ১০ জানুয়ারি পিআরএল-এ যাবেন। এরপরই নতুন প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগের কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই মন্ত্রী পদে তার নাম বাদ যাওয়ায় তড়িঘরি করে গত ৭ জানুয়ারি সুপার সিটিংয়ের মাধ্যমে তিনি সাহাদাত হোসেনকে প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেন। যা সম্পূর্ন নিয়ম বহির্ভূত। কারণ জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে খোরশেদ আলমের পর একই ব্যাচের জয়নুল আবেদীনের নাম থাকার কথা ছিল।

তারা আরও বলেন, এক্ষেত্রে শুধুমাত্র জেষ্ঠ্যতার লঙ্ঘণ ছাড়াও সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী সাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নানান দূর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে। এছাড়াও তিনি চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগ-৪ এ কর্মরত থাকা অবস্থায় বিষয়োক্ত কাজের প্রাক্কলন ও অর্থ বরাদ্দ প্রাপ্তি ছাড়াই নিয়ম বহির্ভূতভাবে দরপত্র আহ্বান করায় তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। নোয়াখালীতে কর্মরত থাকা অবস্থায় জমি সংক্রান্ত দূর্নীতির দায়ে দুদকের করা মামলায় তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। তারা আরও বলেন, যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দূর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন, সেখানে জেষ্ঠ্যতার লঙ্ঘণ করে দূর্নীতি পরায়ণ একজন ব্যক্তিকে গণপূর্ত অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে নিয়োগ দিলে দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে।

কারণ হিসেবে তারা বলছেন, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর পদটি সরকারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংস্থাটি সরকারের উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বড় ভূমিকা রাখে।

গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পরবর্তী প্রধান প্রকৌশলী হতে ইতোমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছিলেন অনেকেই। এরা হলেন গণপূর্ত ক্যাডারের ৮২ ব্যাচ ও ১৫তম ব্যাচের প্রকৌশলী। প্রচলিত বিধান অনুযায়ী প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব্য) মো. খুরশেদ আলমের পর ময়মনসিংহ জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জয়নুল আবেদিনের। জয়নুল আবেদিনের পরেই ছিল অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সম্বয়ন ও সংস্থাপন) মো. শাহাদাত হোসেনের নাম। যিনি চাকরি জীবনে নোয়াখালীতে দায়িত্ব পালনকালে জমি-সংক্রান্ত জটিলতায় প্রত্যাহার হন।

এরপর ২৮ ব্যাচের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা জোন) মো. আব্দুল হাইও ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌড়ে। এরপর ৮২ ব্যাচের পর গণপূর্ত ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের আরো ৪ জন প্রকৌশলী ছিলেন প্রধান প্রকৌশলীর দৌড়ে। তবে রফিকুল ইসলাম প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব নেয়ার পর বদলি বাণিজ্য বন্ধ, ই-জিপি চালু ও স্বল্প সময়ে একাধিক বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সুনাম অর্জন করেন। ফলে তার পুনরায় এ পদে ফিরে আসার ব্যাপারেও আশাবাদী ছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু হঠাৎ করেই শেষ কার্যদিবসে সদ্য বিদায়ী মন্ত্রীর এমন নিয়ম-বহির্ভূত নিয়োগ প্রদান কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন এবং এ বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৩:২৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ জানুয়ারি ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।