নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২৯ মে ২০২০ | প্রিন্ট | 433 বার পঠিত
করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় আড়াই মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অসহায় জীবনযাপন করছেন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা। শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি’সহ অন্যান্য খাত থেকে অর্থ আদায় করতে না পারায় অনেক শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ রয়েছে। ঈদের বোনাসও হয়নি তাদের।
এ অবস্থায় সারাদেশে প্রায় দুই লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অসহায় এসব শিক্ষকদের সহায়তায় এককালীন আর্থিক অনুদান দিতে ১২৬ কোটি টাকা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সায় পেলে অর্থ বিভাগের অনুমতি চাইবে মন্ত্রণালয়।
সূত্র জানায়, প্রধামন্ত্রীর কাছে পাঠানো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে স্কুল ও কলেজের জন্য আলাদা আলাদা থোক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে কলেজ পর্যায়ে শিক্ষকদের জন্য ৮ হাজার অথবা ৫ হাজার টাকা কর্মচারীদের জন্য ৪ হাজার অথবা আড়াই হাজার টাকা করে দুটি বিকল্প রেখে প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রথম প্রস্তাবে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে শিক্ষকদের জন্য এককালীন ৮ হাজার এবং কর্মচারীদের জন্য ৪ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। এতে স্কুল পর্যায়ে ৬৬ হাজার ৫০৭ জন শিক্ষকের জন্য ৫৩ কোটি ২০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা এবং ৫০ হাজার ৪৫৫ জন কর্মচারীর জন্য ২০ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন। আর কলেজ পর্যায়ে ৮৪ হাজার ৮১৮ জন শিক্ষককের জন্য প্রায় ৩৯ কোটি ৫৪ লাখ ৪ হাজার টাকা এবং ৩৪ হাজার ৭৬২ জন কর্মচারীর জন্য ১৩ কোটি ৯০ লাখ ৮ হাজার টাকা প্রয়োজন।
সবমিলিয়ে প্রথম প্রস্তাবে মোট ১২৬ কোটি ৩৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে শিক্ষকদের জন্য এককালীন ৫ হাজার এবং কর্মচারীদের জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা চাওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রয়োজন ৭৮ কোটি ৯৬ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা।
প্রস্তাবে এ টাকার চাওয়ার যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, করোনাকালীন প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন খাতে প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। টেকসই উন্নয়নের জন্য সমগ্র বিশ্বে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এছাড়া কওমি মাদরাসার শিক্ষকদের জন্য এককালীন আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি দুই হাজার ৭৩০টি নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্তির আওতায় এনে তাদের বেতন-ভাতা দেয়া শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রাপ্ত প্রায় সাত হাজার নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। যারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা টিউশন ফি, অন্যান্য ফি এবং প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ফান্ড থেকে তদের বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন। ঢাকাসহ বড় বড় শহরে কিছু প্রতিষ্ঠান বাদ দিলে মফস্বল শহরে এবং গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আর্থিক সক্ষমতা সন্তোষজনক নয়। ফলে দেশের বর্তমান এ পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তারা নীরবে প্রচণ্ড আর্থিক সংকটে মধ্যদিয়ে জীবনযাপন করছেন।
তাদের পেশাগত কারণে বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংস্থার কাছে সহযোগিতা নিতে পারছেন না। সরকারের দেয়া কোনো সহায়তা কর্মসূচিতেও তারা অন্তর্ভুক্ত হতে পারছেন না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের বিশেষ সহায়তা কর্মসূচির আওতায় নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের আনা প্রয়োজন বলছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে গত ২৩ মে দেশের সব জেলা প্রশাসকদের কাছে নন-এমপিও স্কুল কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের নির্ধারিত ছকে তালিকা চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এসব ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোমিনুর রশিদ আমিন বলেন, নন-এমপিও শিক্ষকদের প্রনোদনা দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা প্রস্তাব পাঠিয়েছি। শিক্ষক কর্মচারীদের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন স্বাপেক্ষে এ বাবদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হবে।
Posted ৮:৫৩ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৯ মে ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan