নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ২১ মার্চ ২০২১ | প্রিন্ট | 2591 বার পঠিত
পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতার প্রয়োজনে পর্যায়ক্রমে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের (Retailer) উপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নির্ভর করার তাগিদ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ লক্ষ্যে স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের ডিলার অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) নতুন নিয়মকে কেন্দ্র করে শেয়ারবাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আসতে যাচ্ছে। যা আগামি আইপিওর মাধ্যমে ঢুকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজ রবিবার (২১ মার্চ) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) ও শীর্ষ ব্রোকারের এক বৈঠক এমনটি ধারনা করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ। সভায় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ রেজাউল করিম, ডিবিএর সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন, বিএমবিএ সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমান, ডিবিএ ও বিএমবিএর উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং শীর্ষ ১০ ব্রোকারহাউজের প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, নতুন নিয়ম অনুযায়ি আইপিওতে আবেদনের ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে। যা আগামি ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। কিন্তু এতোদিন কোন বিনিয়োগ ছাড়াই আবেদনের সুযোগ ছিল। যেখানে প্রতিটি আইপিওতে গড়ে প্রায় ১০ লাখ আবেদন জমা পড়ত। যার অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর বাজারে কোন বিনিয়োগ ছিল না। তবে আগামিতে বিনিয়োগ বাধ্যতামূলক করায়, এখান থেকে হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে সংশ্লিষ্টরা।
বৈঠকের বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আগামি এপ্রিল মাস থেকে আইপিওতে নতুন নিয়ম চালু হতে যাচ্ছে। যে নিয়মে আইপিওতে আবেদনের ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে। এরফলে আগামি আইপিওর আগেই বাজারে হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ ঢুকার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, গড়ে প্রতিটি আইপিওতে প্রায় ১০ লাখ আবেদন জমা পড়ে। যার অধিকাংশ বিও হিসাবেই কোন বিনিয়োগ থাকে না। কিন্তু আগামিতে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। এরফলে অর্ধেক বিও হিসাবে ২০ হাজার করে বিনিয়োগ করলেও হাজার কোটি টাকা ঢুকবে বাজারে। তাই বিনিয়োগকারীদেরকে এ বিষয়টি জানানোর জন্য আজকের বৈঠকে ব্রোকারদেরকে বলা হয়েছে।
ব্যাংক বন্ধ ছাড়া শেয়ারবাজার বন্ধ হওয়ার সুযোগ নেই বলে ব্রোকারদেরকে আজ কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বলে জানান এই নির্বাহি পরিচালক। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি যাই হোক না কেনো, ভবিষ্যতে ব্যাংক খোলা থাকলে শেয়ারবাজার বন্ধ থাকবে না। তাই শেয়ারবাজার বন্ধ হওয়ার গুজবে কান দেওয়ার কোন সুযোগ নেই।
জানা যায়, বৈঠকে ব্রোকারহাউজগুলো তাদের ডিলার অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি আইনী বিষয়কে কিছুটা বাধা বলে উল্লেখ করেন। ১৯৮৭ সালে প্রণীত একটি আইন অনুসারে, গ্রাহকদের পাশাপাশি ব্রোকার তার ডিলার অ্যাকাউন্টে শেয়ার কিনতে চাইলে আগে গ্রাহকের ক্রয়-আদেশ কার্যকর করতে হবে। পরে ডিলার অ্যাকাউন্টের ক্রয়-আদেশ বাস্তবায়ন হবে। এই শর্তের কারণে ডিলারদের বিনিয়োগ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান তারা।
এর প্রেক্ষিতে বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, ১৯৮৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আলোচিত আইনী শর্ত পরিপালনের বিষয়ে কোনো কঠোর অবস্থানে যায়নি বিএসইসি। কেউ আইনের ওই শর্তটি লংঘন করলেও সেটিকে নন-কমপ্লায়েন্স বিবেচনা করা হয়নি, কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। এবারও বিষয়টিকে নন-কমপ্লায়েন্স হিসেবে গণ্য করা হবে না। তাই কোনো ব্রোকার চাইলে গ্রাহকের আগে তার ডিলার অ্যাকাউন্টে শেয়ার কিনতে পারবেন।
Posted ৮:৩৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২১ মার্চ ২০২১
bankbimaarthonity.com | saed khan