বিবিএনিউজ.নেট | শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট | 480 বার পঠিত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে দেশের কোনো উন্নতি হয়নি। ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগই দেশের উন্নয়ন করেছে। দেশকে বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। ব্রুনাইয়ে তিনদিনের সরকারি সফর সম্পর্কে জানাতে শুক্রবার গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা একটু চোখ মেলে দেখুন। ২০০৮ সালের আগে বাংলাদেশের কী অবস্থা ছিল। আর এখন কোন অবস্থায় আছে। সূচকগুলো দেখুন। গ্রামের মানুষ কেমন আছে। অবশ্য আমরা জিয়াউর রহমানের মতো এলিট শ্রেণী তৈরি করতে পারিনি। কারণ আওয়ামী লীগের নীতি সেটা না। আওয়ামী লীগ শহর ও গ্রামের উন্নয়ন সমানভাবে করে। একবার চিন্তা করে দেখুন কোন জায়গার বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে গেছি। আন্তর্জাতিকভাবেও বাংলাদেশ একটা সম্মানজনক অবস্থায় আছে।
এ সময় সরকারের ১০০ দিন মূল্যায়ন করে বেসরকারি সংস্থা সিপিডির দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ১০০ দিনে উল্লাস নাই, উচ্ছ্বাস নাই, হেন নাই, তেন নাই অনেকে বলে। আসলে যারা সবসময় নিরানন্দে ভোগে, তারা তো উচ্ছ্বাস-উল্লাস দেখবেই না। আর এখানে উচ্ছ্বাস-উল্লাসের কী আছে আমি বুঝলাম না? আমি ১০০ দিন টার্গেট করে কিছু বলিনি। কিন্তু তার পরও প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ এনেছি।
দেশের জনগণের কল্যাণ করার জন্য আওয়ামী লীগই যথেষ্ট জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের কল্যাণ আওয়ামী লীগই করবে। আর কেউ করেনি, করবেও না। আমার মনে হয় দেশবাসীর এটাও ভাবা উচিত। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত কিন্তু এ দেশের উন্নতি হয়নি। কোনো মানুষের উন্নতি হয়নি। তবে এখন দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে আমরা আশাবাদী, এই বছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে।
গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে এ সময় আক্ষেপ করে সরকারপ্রধান বলেন, কাজ করতে গিয়ে কোনোদিন মিডিয়ার আনুকূল্য পাইনি। সবসময় বৈরিতা পেয়েছি।
এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাইরে থেকে আওয়ামী লীগে এসে কারা সুবিধা লুটছে বা অনুপ্রবেশ ঘটেছে এর একটা তালিকা যদি আপনারা দিতে পারেন, তাহলে ভালো হয়। আর মন্ত্রিসভায় যারা আছেন তারা যদি কেউ দুর্নীতি করে তাহলে তথ্যপ্রমাণসহ আমাকে দেবেন, আমি ব্যবস্থা নেব।
বিএনপির বিজয়ী সংসদ সদস্যরা যাতে শপথ নেন সেজন্য সরকারের তরফ থেকে চাপ দেয়া হচ্ছে বলে দলটির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে জনপ্রতিনিধিরা শপথ নিয়েছেন, তারা স্বেচ্ছায় শপথ নিয়েছেন। সেখানে সরকারের কোনো চাপ নেই। আমরা চাপ দিতে যাব কেন? তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত। বিএনপির যিনি শপথ নিয়েছেন তিনি নিজেই বলেছেন যে নিজের নির্বাচনী এলাকায়ই তার চাপ। যে জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে তারাই চাপ দিয়েছে। সংসদে গিয়ে তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য কথা বলবেন।
খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির আলোচনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্যারোলের জন্য তো আবেদন করতে হয়। এখানে কেউ আবেদন করেনি এখনো। যেহেতু কেউ আবেদন করেনি, সেখানে আমার কমেন্ট করার কিছু নেই।
ব্রুনাই সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়ার আমন্ত্রণে ২১ থেকে ২৩ এপ্রিল ব্রুনাই সফর করি। ১৯৯৭ সালে আমার সরকারের উদ্যোগে ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন পুনঃস্থাপন হয়। এর পর থেকে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ও পারস্পরিক সহযোগিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত বিগত এক দশকে ব্রুনাইয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।’
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে উচ্চপর্যায়ে সফর বিনিময়, বিনিয়োগ, খাদ্য, কৃষি, মত্স্য, জ্বালানি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বিমান যোগাযোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করি। ব্রুনাইয়ের সুলতান আমার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এগুলো বাস্তবায়নে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
Posted ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed