শনিবার ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট ২০২০   |   প্রিন্ট   |   258 বার পঠিত

একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ

প্রবাসী আয়ের রেকর্ড ভেঙে তৈরি হচ্ছে নতুন রেকর্ড। বাংলাদেশের এই রেকর্ড তৈরিতে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব থেকে দ্বিগুণ হারে রেমিট্যান্স আসা শুরু করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের ২ শতাংশ প্রণোদনার উদ্যোগ হুন্ডি ব্যবসাকে উৎখাত করে চলেছে। পাশাপাশি প্রবাসীদের করোনা কেন্দ্রিক কিছু উদ্যোগের কারণে রেমিট্যান্স বাড়ছে।

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রায় ২৬০ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এদিকে জুলাইয়ে মোট আহরিত রেমিট্যান্সের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের ৭টি দেশ থেকে এসেছে ১৪৮ কোটি ডলার। এর মধ্যে শুধু সৌদি আরবের প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৬৩ কোটি ২৬ লাখ ডলার। যা গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে ৯১ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম মাসে সৌদি থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ৩৩ কোটি ১২ লাখ ডলার। এছাড়া জুলাইয়ে দেশে আসা মোট রেমিট্যান্সের ২৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ পাঠিয়েঠেন সৌদি প্রবাসীরা।

বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের বড় বাজার সৌদি আরব। বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে গড়ে ৫০-৬০ হাজারের মত মানুষ বিদেশে কাজ করতে যান। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ যায় সৌদি আরবে। দেশটিতে জানুয়ারি মাসে গেছেন ৫২ হাজার মানুষ, ফেব্রুয়ারি মাসে গেছেন ৪৪ হাজার মানুষ, আর মার্চে ফ্লাইট বন্ধের আগ পর্যন্ত ৩৮ হাজার বাংলাদেশি গেছেন। বর্তমানে ২২ লাখের মত বাংলাদেশি অভিবাসী সৌদি আরবে আছেন।

এদিকে সম্প্রতি সৌদি আরবের ইংরেজি দৈনিক সৌদি গেজেটে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়, মহামারির কারণে এ বছর সৌদি শ্রমবাজারে ১২ লাখ বিদেশী কর্মী চাকরি হারাবেন। রিপোর্টে দেশটির এক গবেষণা সংস্থার বরাত দিয়ে বলা হয়, নির্মাণ খাত, পর্যটন (হজ), রেস্তরাঁসহ বিভিন্ন খাতে এই কর্মচ্যুতি ঘটতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনার কারণে হজের কার্যক্রম না থাকায় হোটেল-রেস্তরাঁসহ অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন প্রবাসী শ্রমিকরা। অনেকে দেশে ফিরে এসেছেন। আবার কেউ অপেক্ষায় রয়েছেন ফিরে আসার। এতসব সংকটের মধ্যেও রেমিট্যান্স পাঠানো অব্যাহত রেখেছেন প্রবাসীরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গেল অর্থবছরে রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে সৌদি আরব ছাড়া অন্য দেশগুলো হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, ওমান, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, কাতার, সিঙ্গাপুর ও ইতালি।

জুলাইয়ে রেমিট্যান্স আহরণের দ্বিতীয় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৪ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। গত বছর একই সময়ে ছিল ১৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার। তৃতীয় অবস্থানে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। গত বছরের জুলাইয়ে এসেছিল ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। চতুর্থে থাকা মালয়েশিয়া থেকে এসেছে ২৩ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, আগের বছর যা ছিল ১১ কোটি ৪৭ লাখ ডলার।

পঞ্চম অবস্থানে থাকা ওমান থেকে এসেছে ১৯ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। আগের বছর জুলাইয়ে দেশটি থেকে এসেছিল ১০ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। এছাড়া জুলাই মাসে যুক্তরাজ্য থেকে পঠিয়েছে ১৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। কুয়েত থেকে ১৭ কোটি ডলার, কাতার থেকে পাঠিয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, সিঙ্গাপুর থেকে রেমিট্যান্স এসছে ৮ কোটি ২৮ লাখ ডলার এবং ইতালি থেকে এসেছে ৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসীরা মোট এক হাজার ৮২০ কোটি ৪৯ লাখ ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ এক লাখ ৫৪ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত অর্থ দেশে আসেনি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড হয়। ওই সময়ে প্রবাসীরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। সেই হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৭৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার বা ১৫ হাজার কোটি টাকা।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১১:৩৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11193 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।