নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০ | প্রিন্ট | 579 বার পঠিত
ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়াতে এক ব্যক্তির কোম্পানি ব্যবস্থার বিধান রেখে ‘কোম্পানি (দ্বিতীয় সংশোধন) আইন, ২০২০’এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সংশোধিত আইনে, এক ব্যক্তির কোম্পানি নিবন্ধন ব্যবস্থাপনার সুযোগ দেয়া হয়েছে। শেয়ার হস্তান্তরের ক্ষেত্রে শেয়ার হোল্ডারধারী পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে শেয়ার হস্তান্তর করতে পারবেন।
আজ সোমবার (২০ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সংশোধিত আইনে অনলাইনে যাতে রেজিস্ট্রেশন করা যায় সেটি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এখনকার বিধান অনুযায়ী ১৪ দিনের নোটিশে বোর্ড মিটিং হয়, কিন্তু ইনভেস্টরদের অনুরোধে সেটি বাড়িয়ে ২১ দিন করা হয়েছে। কারণ অনেকে দেশের বাইরে থাকেন, তাদের ভিসাসহ নানান বিষয় রয়েছে। বিদেশি ইনভেস্টকারীদের দাবির প্রেক্ষিতেই মূলত এটি করা হয়েছে। এক ব্যক্তির কোম্পানির বিষয়টি যুক্ত হওয়ার ফলে বিদেশি ইনভেস্টমেন্ট বাড়বে বলে আমরা আশা করি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি ((নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) সংশোধন আইন ২০২০ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আগে ট্রাভেল এজেন্সি হস্তান্তরের সুযোগ ছিল না। এখন নিবন্ধন সনদ হস্তান্তর এবং শাখা কার্যালয় স্থাপনের বিধান অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। ১১ ধারাতে কোন আইন বা বিধিমালা লঙ্ঘন করলে সর্ব্বোচ ৬ মাস কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫ লক্ষ টাকা অথবা উভয় দণ্ড হবে। অনেক ট্রাভেল এজেন্সি রিক্রুটিং এজেন্সি হিসাবে কাজ করে, সেটি এখন তারা আর করতে পারবে না। করলে তাদের জরিমানা হবে। কারণ তার কাজ টিকিট করে দেয়া, কিন্তু অনেক ট্রাভেল এজেন্সি ভিসার বিষয়টিও হ্যান্ডেল করে। এখন থেকে ট্রাভেল এজেন্সি আর ভিসার কাজ করতে পারবে না। আর নির্ধারিত সময়ের পর জরিমানা দিয়ে ট্রাভেল এজেন্সি নবায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। এখন থেকে ট্রাভেল এজেন্সি অনুমোদন সাপেক্ষে দেশে ও বিদেশে শাখা অফিস খুলতে পারবে।
উল্লেখ্য, দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য কোম্পানি নিবন্ধন ও পরিচালনার বিষয় চূড়ান্ত করে কোম্পানি আইন সংশোধন করা হচ্ছে। ১৯৯৪ সালের বিদ্যমান কোম্পানি আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশে কোনো কোম্পানির নিবন্ধন নিতে হলে একাধিক ব্যক্তির মালিকানা থাকার বিধান রয়েছে। একক কোনো ব্যক্তি কোম্পানি নিবন্ধন ও পরিচালনা করতে পারে না। পাশের দেশ ভারতের শিল্পপতি ড. জামশেদ জিজি ইরানি ২০০৫ সালে দেশটিতে প্রথম এক ব্যক্তি কোম্পানি সম্পর্কে ধারণা তুলে ধরেন। ২০১৩ সালে ভারত সে দেশের আইন সংশোধন করে এক ব্যক্তির কোম্পানি নিবন্ধন ও পরিচালনার প্রচলন করে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোম্পানি আইনের বেশকিছু ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়ে খসড়াটি মন্ত্রিসভায় পাঠানোর পর তাতে এক ব্যক্তির কোম্পানি প্রথা অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।
সংশোধিত কোম্পানি আইনে একজনই শতভাগ শেয়ারের মালিক হবেন। তবে কোম্পানি স্মারকে তার একজন উত্তরাধিকারী বা মনোনীত ব্যক্তির নাম দিতে হবে। কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারের মৃত্যুর পর তিনি ওই কোম্পানির মালিক হবেন। শেয়ারহোল্ডারের মৃত্যুর আগেই মনোনীত ব্যক্তি মারা গেলে অন্য কোনো উত্তরাধিকার বা মনোনীত ব্যক্তি নির্ধারণ করা যাবে। এক ব্যক্তি কোম্পানির ক্ষেত্রে তার একমাত্র সদস্যই কোম্পানির প্রথম পরিচালক হিসেবে গণ্য হবেন। তিনি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনে বিভিন্ন পদে যেমন পরিচালক, ম্যানেজার ও কোম্পানি সচিব নিয়োগ করতে পারবেন। তবে তাদের শেয়ারের কোনো অংশ থাকবে না। এক ব্যক্তি কোম্পানিরও বার্ষিক সাধারণ সভার আয়োজন করতে হবে।
Posted ৬:১৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan