নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১৮ মে ২০২১ | প্রিন্ট | 397 বার পঠিত
পাগলা ঘোড়ার মত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের নতুন কোম্পানি এনআরবিসি ব্যাংক। এ দৌড় কোথায় গিয়ে থামবে বলা মুশকিল। আজ নিয়ে টানা ৯ কার্যদিবস হল্টেড হয়ে রেকর্ড করেছে ব্যাংকটি। এর আগে কখনো কোনো কোম্পানি এভাবে ৯ কার্যদিবস ধরে টানা দর বেড়ে হল্টেড হয়নি। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, গত ৯ কার্যদিবসের মধ্যে এ কোম্পানির সব চেয়ে বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে ৯ মে। এদিন কোম্পানিটির ২ কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার ৬২৪টি শেয়ার ৬ হাজার ৩৮৩ বার হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ৩৯ কোটি ৬৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। যা কোম্পানিটির তালিকাভুক্তির পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন। ৯ মে কোম্পানিটির ক্লোজিং দর ছিল ১৬ টাকা ৩০ পয়সা। যা ওই দিনের সর্বোচ্চ দর।
গত ২২ মার্চ এ কোম্পানির লেনদেন শুরু হয়। ওইদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৩ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন শেষ হয়। ওইদিন লেনদেন শুরু হয়েছিল ১৫ টাকা দিয়ে। এদিন কোম্পানিটির দর ছিল এটি। কোম্পানিটির সর্বনিম্ন দর ছিল ১১ টাকা ৯০ পয়সা। ওইদিন কোম্পানিটির ৩ কোটি ২২ লাখ ৯৩ হাজার ৭০৫টি শেয়ার ৩২ হাজার ৪০৬ বার হাতবদল হয়, যার বাজার মূল্য ছিল ৪২ কোটি ৮৫ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এরপর থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দর কমতে থাকে। ৪ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার দর সর্বনিম্ন দর ১১ টাকা ২০ পয়সায় নেমে আসে। এরপর স্বাভাবিক ওঠানামার মধ্য দিয়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর লেনদেন হয়।
তবে ২৮ এপ্রিল থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দর ধারাবিহকভাবে বাড়তে থাকে। মাত্র ১১ কার্যদিবসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার দর দিগুণেরও বেশি বেড়েছে। বিশেষ করে গত ৮ কার্যদিবস ধরে উল্লেখযোগ্য হারে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে প্রতিদিনই হল্টেড হয়েছে যা একটা রেকর্ড। শুধু হল্টেডই নয় কোম্পানিটি প্রতিদিনই লেনদেন শুরু পর পরই সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমায় লেনদেন করছে।
এদিকে, ১৭ মে কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২৩ টাকা ৬০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ২৫ টাকা ৯০ পয়সায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫ টাকা ৯০ পয়সায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ২ টাকা ৩০ পয়সা বা ৯.৭৫ শতাংশ বেড়েছে। আজ এ কোম্পানির ৩৮ লাখ ১০ হাজার ৫০২টি শেয়ার ৮২২বার হাতবদল হয়, যার বাজার মূল্য ৯ কোটি ৮৬ লাখ ৯২ হাজার টাকা।
তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিটি সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭.৫ শতাংশ ক্যাশ এবং ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। আলোচিত বছরে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ার প্রতি আয় (কনসোলিডেটেড ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৩৭ টাকা পয়সা। তবে আইপিও পরবর্তী শেয়ার সংখ্যার নিরিখে ডাইলুটেড ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৯৬ পয়সা। গত বছর ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস ছিল ১ টাকা ৯৮ পয়সা ছিল।
অন্যদিকে, আলোচিত বছরে এককভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় (সলো ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৩১ পয়সা। তবে এককভাবে ডাউলুটেড ইপিএস দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৯১ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে একক ইপিএস ছিল ১ টাকা ৯৭ পয়সা ছিল।
উল্লেখ্য, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক পুঁজিবাজার থেকে ১২০ কোটি টাকা উত্তোলনের জন্য ১২ কোটি শেয়ার ইস্যু করে। এক্ষেত্রে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা। পুঁজিবাজার থেকে ব্যাংকটি অর্থ উত্তোলন করে সরকারি সিকিউরিটিজ ক্রয়, সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে।
জানা যায়, কোম্পানিটির ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী পুন:মূল্যায়ন ছাড়া নেট অ্যাসেটভ্যালু হয়েছে ১৩.৮৬ টাকা এবং বিগত ৫ বছরের ভারিত গড় হারে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১.৫৫ টাকা।
এদিকে, কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে- এক হাজার কোটি টাকা এবং ৭০২ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ২৪৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এ কোম্পানির ৭০ কোটি ২৫ লাখ ১৬ হাজার ৯৯৮টি শেয়ারের মধ্যে ৭৩.৩২ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, ৩.৮২ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং ২২.৮৬ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে।
Posted ৮:৩১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৮ মে ২০২১
bankbimaarthonity.com | saed khan