নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০৪ মে ২০২০ | প্রিন্ট | 322 বার পঠিত
চট্টগ্রাম বন্দরে শনিবার এক দিনে জাহাজ থেকে ৮ হাজার ৪২০ কনটেইনার ওঠানো-নামানো হয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সাধারণ ছুটির সময় গত ৩৮ দিনে এই সংখ্যা সর্বোচ্চ। বন্দর চত্বরে কনটেইনার রাখার জায়গা আগের চেয়ে বেশি খালি থাকায় এক দিনে এই সর্বোচ্চসংখ্যক কনটেইনার ওঠানো–নামানো সম্ভব হয়েছে।
এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলেও বন্দরের কার্যক্রমে দৃশ্যত এই পরিবর্তন এসেছে মোটাদাগে দুটি পদক্ষেপে। প্রথমটি হলো বন্দর চত্বর থেকে ডিপোতে কনটেইনার সরিয়ে নেওয়ার বন্দরের উদ্যোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমোদন। বন্দরের চাপে ২৩ এপ্রিল এই অনুমোদন দেয় রাজস্ব বোর্ড। দ্বিতীয়টি হলো এক সপ্তাহের সময় দিয়ে বন্দর চত্বর থেকে কনটেইনার খালাস নেওয়া হলে ভাড়ায় ছাড় দেওয়ার ঘোষণা। গত ২৭ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হয়। এর বাইরে বন্দর থেকে পণ্য খালাসে যুক্ত সংস্থাগুলোর সেবার সময় বাড়ানো।
বন্দরের চাকা সচল হওয়া মানেই করোনার সময় খাদ্যপণ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মতো জরুরি পণ্য হাতে পেতে সময় কম লাগা। সময় যত কম লাগবে, পণ্য আমদানিতে খরচও কম হবে। নিত্যপণ্যের সরবরাহও বাড়বে। যেমন বন্দর থেকে আদা খালাস বাড়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়ে দাম স্থিতিশীল হয়েছে।
বন্দর পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুই পদক্ষেপে কনটেইনার খালাসের হার বাড়ায় আগের চেয়ে বন্দরের কার্যক্রম বেড়েছে। তবে পণ্য খালাসের হার আরও বাড়াতে হবে। তাহলে বন্দরের যে স্বাভাবিক সক্ষমতা রয়েছে, তা পুরোদমে কাজে লাগানো যাবে।
বন্দরের তথ্যে দেখা যায়, পদক্ষেপ দুটি নেওয়ার আগে প্রতিদিন কনটেইনার খালাস হতো ১ হাজার ৭০০টি। এখন তা চার হাজারে উন্নীত হয়েছে। আবার প্রতিদিন খালাসের মাধ্যমে জায়গা খালি হওয়ার ফলে নতুন করে প্রতিদিন জাহাজ থেকে কমবেশি চার হাজার কনটেইনার নামানো সম্ভব হচ্ছে।
আবার পণ্য হাতে পাওয়ার ক্ষেত্রেও আগের চেয়ে সময় কিছুটা কমতে শুরু করেছে। বন্দরের জলসীমায় কোনো জাহাজ আসার পর জেটিতে ভেড়ানোর জন্য অপেক্ষা করতে হতো ১৬–১৮ দিন পর্যন্ত। এখন তা ১৩–১৪ দিনে নেমেছে। আবার জেটিতে কনটেইনার ওঠানো–নামানোয় আগে যেখানে ৬–৭ দিন সময় লাগত, এখন তা কমে এসেছে ৩–৪ দিনে। জেটিতে ভেড়ানোর জন্য বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ কনটেইনারবাহী জাহাজের সংখ্যা ৩৭টি থেকে কমে ২৮টিতে নেমেছে।
বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বন্দরের কার্যক্রম পুরোদমে স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে। সামনে ঈদের ছুটির আগে–পরে পণ্য খালাস কমে আবারও কনটেইনারজট তৈরি হতে পারে। আবার বর্ষা মৌসুমে ঝড়ুবৃষ্টিতে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা আছে।
বন্দরের যে সক্ষমতা রয়েছে, তা পুরোপুরি কাজে লাগানোর পথ একটি, তা হলো পণ্য খালাসের হার বাড়ানো। ব্যবসায়ীদের যেমন বন্দর চত্বর থেকে পণ্য খালাসের হার বাড়াতে হবে, আবার ডিপোতেও কনটেইনার সরিয়ে নেওয়ার হার বাড়াতে হবে। গত ৯ দিনে প্রায় ১৪ হাজার কনটেইনার ডিপোতে সরিয়ে নেওয়া হয়। আরও প্রায় ১৫–২০ হাজার কনটেইনার সরিয়ে নেওয়া যাবে বলে ডিপো পরিচালনাকারীরা জানান।
Posted ১১:১৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৪ মে ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan