শুক্রবার ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চামড়া সংকট নিয়ে চলছে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক

বিবিএনিউজ.নেট   |   রবিবার, ১৮ আগস্ট ২০১৯   |   প্রিন্ট   |   498 বার পঠিত

চামড়া সংকট নিয়ে চলছে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক

কোরবানির পশুর চামড়ার অস্বাভাবিক দরপতনের পর এবার বকেয়া ৪০০ কোটি টাকা না পেলে ট্যানারি মালিকদের কাছে আর কাঁচা চামড়া বিক্রি না করার ঘোষণা দিয়েছেন আড়তদাররা। এতে করে চামড়া সংকট আরও বেড়ে গেছে।

এ সংকট এড়াতে আজ রোববার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সরকার, ট্যানারি মালিক, আড়তদার ও কাঁচা চামড়া সংশ্লিষ্টদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শুরু হয়েছে। এ বৈঠকে আলোচনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বৈঠকে সরকারের পক্ষে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়নবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলামসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এ ছাড়া ট্যানারি অ্যাসোসিয়েনের নেতৃবৃন্দ, চামড়া আড়তদার ও কাঁচা চামড়া সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত রয়েছেন।

এদিকে শনিবার রাজধানীর লালবাগের পোস্তায় কাঁচা চামড়া আড়তদারদের জরুরি সভা শেষে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সভাপতি দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ট্যানারি মালিকদের কারণে চামড়ার দাম কমেছে। ট্যানারিগুলো বকেয়া টাকা না দেয়ায় এবার কোরবানিতে টাকার অভাবে চামড়া কিনতে পারিনি।

অন্য বছর ঈদের আগের দিন আড়তদারদের সঙ্গে আলোচনা করলেও এবার তারা কোনো কথা বলেননি। তারা যদি আমাদের আশ্বস্ত করতেন, ন্যায্য দামে চামড়া কিনতেন, তাহলে এ পরিস্থিতি হতো না। কিন্তু এটি না করে উল্টো মিডিয়ার কাছে নানা কথা বলেছেন। এ কারণে আরও দর কমেছে। ট্যানারি মালিকরাই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন।

এদিকে পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক শনিবার থেকেই সীমিত আকারে পশুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া কেনা শুরু করার কথা জানান ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত উল্লাহ। তার দাবি, গতকাল ময়মনসিংহ থেকে তাদের অনেকেই লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া কিনেছেন।

তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা সেখান থেকে কাঁচা চামড়া কেনা শুরু করেছি। এখন প্রতিদিনই যে যার মতো কাঁচা চামড়া কিনবেন। সরকারের নির্ধারণ করে দেয়া দামে আগামী দুই মাস চামড়া সংগ্রহ করা হবে।

জানা গেছে, এবার কোরবানির ঈদে কোরবানিদাতারা চামড়া নিয়ে বসে থাকলেও চামড়া কিনতে আসেনি কেউ। ফলে অনেকে দুপুরের আগেই একেবারে বিনামূল্যে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামসহ কয়েকটি সেবামূলক দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে চামড়া দিয়ে দেয়।

দুপুরের পর ঢাকায় কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী চোখে পড়লেও তারা লাখ টাকা দামের গরুর চামড়া কেনেন মাত্র ১৫০-৩০০ টাকায়। খাসির চামড়া বিক্রি হয় ২০ থেকে ৩০ টাকায়। ফলে অনেকে ক্ষোভ জানিয়ে চামড়া ড্রেন-ডাস্টবিনে ফেলে দেন।

সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর না হওয়ায় কোরবানির চামড়া বাণিজ্যে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে। তবে বড় অংকের বাণিজ্য রক্ষায় এবারই প্রথম কাঁচা চামড়া রফতানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। দেশীয় শিল্প রক্ষায় কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ট্যানারি মালিকরা।

কাঁচা চামড়া রফতানির বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করিনি। তবে আমরা এটাও জানি যে, ঢালাওভাবে কাঁচা চামড়া রফতানি করার অনুমোদন দিলে দেশে চামড়া শিল্প উন্নয়নে কিছু বাধাগ্রস্ত হবে। আমরা চাই না একটা সম্ভাবনাময় খাত বাধাগ্রস্ত হোক। তাই বলে আমরা এ-ও হতে দিতে পারি না যে, চামড়া বিক্রি হবে না। দাম না পেয়ে মানুষ চামড়া পুঁতে ফেলবে, নদীতে ফেলে দেবে। তাই আমরা ঢালাওভাবে না দিয়ে কেস টু কেস ভিত্তিতে কাঁচা চামড়া রফতানিতে অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

সচিব বলেন, ‘যদি চামড়ার বাজারে ন্যায্যমূল্য ফিরে আসে তাহলে হয়তো আমরা কাঁচা চামড়া রফতানি অনুমোদন দেব না। তবে বিক্রেতারা যদি চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পায়, তাহলে কাঁচা চামড়া রফতানির অনুমোদন দেব। কারণ এটা এতিম, গরিব, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর হক। এক্ষেত্রে আমরা পানির দরে চামড়া বিক্রি হতে দিতে পারি না।’

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৩:৪৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৮ আগস্ট ২০১৯

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11192 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।