নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০৩ নভেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট | 298 বার পঠিত
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষ সামনের দিকে এগিয়ে যায়। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখা প্রয়োজন যে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি কিনা। পুঁজিবাজারের জন্য তথ্য অত্যন্ত গরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এটিকে সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষণের জন্য ডিজাস্টার রিকভারি সিস্টেম তৈরি করতে হবে। উন্নয়নের জন্য জনবল এবং অবকাঠামো উভয় ক্ষেত্রে উন্নয়ন করতে হবে। পুঁজিবাজারে আগামীতে সকল কিছু অনলাইনে সম্পন্ন হবে, এজন্য ডিএসই’র আইটি বিভাগকে অত্যন্ত শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে।
সোমবার (০২ নভেম্বর) ডিএসই নিকুঞ্জ টাওয়ার পরিদর্শনের সময় এসব কথা বলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
এসময় কমিশনার খোন্দকার কামালুজ্জামান, অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এবং আব্দুল হালিম উপস্থিত ছিলেন। ডিএসই থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি গত দশ বছরে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে জনগণের মাথাপিছু আয়ও। এর ফলে জনগণের সঞ্চয় বেড়েছে। আর জনগণ এই সঞ্চয়কে বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন খাত খুঁজছে। পুঁজিবাজারকে এই সুযোগ নিতে হবে। আমাদের দেশের অর্থনীতির সাথে তাল মিলিয়ে পুঁজিবাজারের প্রসার হয়নি। পুঁজিবাজারের থেকে অর্থবাজারের আকার অনেক বেশি। আমরা যদি সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন অবকাঠামো এবং শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন সরবরাহ করতে পারি তবে পুঁজিবাজারে প্রসারতা বৃদ্ধি পাবে এবং একই সাথে ব্যাংকিং খাতের উপর চাপ কমবে।
ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমানের নেতৃত্বে এসময় ডিএসইর পক্ষ থেকে পরিচালক অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারের মোস্তাফিজুর রহমান, মুনতাকিম আশরাফ, হাবিব উল্লাহ বাহার, অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মাসুদ, মো. শাকিল রিজভী, মোহাম্মদ শাহজাহান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক উপস্থিত ছিলেন।
কমিশনাররা বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জকে কেন্দ্র করেই পুঁজিবাজারের সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা সব সময়ই বেশি। আমাদের সবার উদ্দেশ্য, পুঁজিবাজারকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া। এই লক্ষ্যে বিএসইসি ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পুঁজিবাজার উন্নয়নে প্রথম ও প্রধান কাজ হবে সবার আগে সমস্যাগুলো বের করা। তারপর এর সমাধান করা। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যত পুঁজিবাজারকে একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী পুঁজিবাজার গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
তারা বলেন, বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে সুন্দর পরিবেশের অপেক্ষায় আছে। যদি বিনিয়োগকারী নিশ্চিত হয় যে, তাদের বিনিয়োগ নিরাপদ ও রিটার্ন আসবে তাহলে সেকেন্ডারি মার্কেট গতিশীল হবে।
বৈঠকে কমিশনাররা আরো বলেন, ইক্যুইটি বেজড কার্যক্রমের বাইরে আমরা বন্ড নিয়ে কাজ করবো। শিল্পায়নের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সর্বোপরি সব ক্ষেত্রেই সুশাসন নিশ্চিত করা হবে। চ্যালেঞ্জ অনেক সময় সুযোগ তৈরি করে দেয়। এ জন্য স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে সমন্বিভভাবে এগিয়ে যেতে চাই।
‘রেগুলেটরের কাজ হচ্ছে মূলত ২ পক্ষের ভেতর সমন্বয় গড়ে তোলা। সমন্বয় সুনিশ্চিতকরণের জন্য আইন কানুন আধুনিকায়ন করতে হবে এবং যারা প্রয়োগ করবেন তাদের আরো বেশি ভূমিকা রাখতে হবে।’
কমিশনাররা বলেন, পুঁজিবাজারে ভালো ভালো কোম্পানি আসুক তা সকলেরই কাম্য। বাংলাদেশ উদীয়মান অর্থনীতির দেশ, সব নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি সমন্বিতভাবে কাজ করে তাহলে অর্থনীতি এগিয়ে যাবে। এছাড়াও অটোমেশন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের পুঁজিবাজারকে তুলে ধরা এবং সার্ভেইল্যান্স ব্যবস্থাকে আরও জোরদারের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন কমিশনাররা। এসব ব্যবস্থায় বাজারের প্রতি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে, বাজার হবে আরও বিনিয়োগ-বান্ধব বলে মনে করেন তারা।
পরে বৈঠকে এক প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ডিএসই’র মহাব্যবস্থাপক মো. ছামিউল ইসলাম ডিএসই টাওয়ারের উপর সংক্ষিপ্ত বিবরণী উপস্থাপন করেন। তিনি উল্লেখ করেন ডিএসই’র এই ভবনে ১৩টি ফ্লোরে ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৯৫৪ স্কয়ার ফিট অফিস স্পেস এবং ৩টি বেজমেন্ট ৪০০টি গাড়ি পার্কিং সুবিধা, কেন্দ্রিয়ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভবনটিতে রয়েছে পরিপূর্ণ জেনারেটর ব্যবস্থা। এই ভবনটিতে ২০০টির বেশি ব্রোকারেজ হাউজের জন্য অফিস স্পেস সহ ব্যাংক, বীমা এবং সিসিবিএল এর অফিসের জন্য জায়গা বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়াও ভবনটিতে ৫ হাজার ৮০০ বর্গফুটের ৬৫০ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি মাল্টিপারপাস হলরুম রয়েছে। একটি হেলিপ্যাড সহ ভবনটিতে রয়েছে ১৩টি লিফট, ২টি পানির পাম্প।
Posted ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ নভেম্বর ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan