শনিবার ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুদক দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল : দুদক চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ২১ মার্চ ২০২২   |   প্রিন্ট   |   154 বার পঠিত

দুদক দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল : দুদক চেয়ারম্যান

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন,‘মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশ, দুর্নীতিবাজদের রেহাই নেই’। ‘দুদক সেই টার্গেট নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে’। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল দুদক। বিগত বছরগুলোর তুলনায় বর্তমান কমিশন অনেক শক্তিশালী’। দুদকের মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে এখন ৭২ শতাংশ সাজা হচ্ছে। দুদক এখন আর নখ ও দন্তহীন বাঘ নেই।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দুর্নীতি বিরোধী ভাষণ এবং বক্তব্যকে প্রাধান্য দিয়েছে দুদক। সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর দুর্নীতি বিরোধী ভাষণ এবং বক্তব্য প্রচারের জন্য বই প্রকাশ করেছে দুদক। দুদক ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং গণমাধ্যমের বেশি গঠনমূলক প্রতিবেদন প্রত্যাশা করেছেন দুদক চেয়ারম্যান।

সোমববার (২১ মার্চ) বিকেলে সেগুনচাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে সংস্থার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে দুদকের গত ২০২০ ও ২০২১ সালের কার্যক্রমের ওপর তৈরি করা ১২৮ পৃষ্ঠার বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর প্রসঙ্গে এই প্রেসব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। রোববার (২০ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টায় দুদক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে দু’বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও বক্তব্য রাখেন, দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক এবং মহাপরিচালক (আইসিটি ও প্রশিক্ষণ) একেএম সোহেল। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী, পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসন, উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছরের কার্যক্রমের ওপর একত্রে তৈরি করা বার্ষিক প্রতিবেদনে ১১টি অধ্যায়ের সংক্ষিপ্ত তথ্য রয়েছে। এ প্রতিবেদনে বেশ কিছু বিষয় রয়েছে। তিনি বলেন, গত দু’বছরে দুদকের ১৫০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে ৪ কর্মকর্তা মারা যান। এরপরও দুদকের কার্যক্রম চলমান ছিল।

তিনি বলেন, গত বছর মার্চ মাসে বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। পুরনো অভিযোগ ও মামলার নথি দ্রুত নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। দুদকের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। আরো বেশ কিছু নতুন লোক নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দুদকের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। দেশব্যাপী সততা সংঘের কাজ আবার শরু হচ্ছে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর এবার সততা স্টোর চালু করা হচ্ছে।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। দুদকের কার্যক্রম ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। কর্মকর্তাদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ২০২০ সালে প্রাপ্ত অভিযোগের মোট অনুসন্ধান ৫ হাজার ১৭টি, নিষ্পত্তি করা হয়েছে ১ হাজার ২৯৪টি এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে ৩৪৮টি। ২০২১ সালে প্রাপ্ত অভিযোগের মোট অনুসন্ধান ৪ হাজার ৬১৪টি, নিষ্পত্তি করা হয়েছে ১ হাজার ৪৪টি এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে ৩৪৭টি।

মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের অপেক্ষমান অনুসন্ধান ২০২০ সালে ১২৯টির মধ্যে সম্পন্ন করা হয়ে ১৭টির। ২০২১ সালে মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের অপেক্ষমান অনুসন্ধান ১৩৯টির মধ্যে সম্পন্ন করা ২৮টির মধ্যে ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্তের গতি বেড়েছে, ২০২০ সালে ১ হাজার ৭৯৬টি মামলার তদন্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৩২৯টি সম্পন্ন এবং ২২৮টি মামলার চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন এবং ৮৪টি মামলার ফাইনাল রিপোর্ট অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ১ হাজার ৮৭৩টি মামলার তদন্ত হয়েছে, এরমধ্যে ৪২৪টি সম্পন্ন এবং ২৬০টি মামলার চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন এবং ৩২টি মামলার আইনি বাধ্যবাধকতায় ৩২মামলা তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থায় পাঠানো হয়েছে।

বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রম ২০২০ সালে ১৭৬টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, এরমধ্যে ১৫৫টি দুদকের মামলার মধ্যে ১১১টি সাজা হয়েছে, তবে ২১টি মামলা রয়েছে সাবেক দুর্নীতি দমন ব্যুরোর আমলের। ২০২১ সালে আদালতে নিষ্পত্তি ২০৩টি মামলার মধ্যে ১৯৩টির সাজা হয়েছে, এরমধ্যে সাবেক দুর্নীতি দমন ব্যুরোর আমলের ১০টি মামলা।

প্রতিবেদনে সুপারিশকৃত দুর্নীতি গ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে; ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), সাবরেজিস্ট্রি অফিস ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে চাঞ্চল্যকর নানা অভিযোগ। সুপারিশে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে ১০টি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ৬টি, সাবরেজিস্ট্রি অফিসে ১০টি ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতির ৬টি দুর্নীতির উৎস উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন বেশ কিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের কথা জানান দুদক চেয়ারম্যান।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৭:৩৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২১ মার্চ ২০২২

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।