আবুল কাশেম | শনিবার, ০৭ মে ২০২২ | প্রিন্ট | 194 বার পঠিত
৩০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ডের ৪ সদস্য এবং আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের এমডিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৫ মে (বৃহস্পতিবার) জড়িত ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপ পরিচালক (বি: অনু: ও তদন্ত-২) এর অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। উক্ত ৬ আসামীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি দন্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২ ও ৩) ধারায় দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ রেকর্ড করা হয়েছে। মামলা নং-০১।
গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা ও সহকারী পরিচালক মো. শফিউল্লাহ।
৬ আসামীর নাম ও ঠিকনা নিম্নে প্রকাশ করা হলো; ১) আজিম উদ্দিন আহমেদ চেয়ারম্যান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, ঠিকানা-প্লট নং-১৫, ব্লক-বি, বসুন্ধরা, ঢাকা-১২২৯। ২) এম.এ. কাশেম, উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের। ৩) বেনজীর আহমেদ, সদস্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। ৪) মিসেস রেহানা রহমান, সদস্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। ৫) মোহাম্মদ শাহজাহান, সদস্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। ৬) আমিন মো. হিলালী, পিতা-মৃত গোলাম মাকসুদ হিলালী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আশালয় হাউজিং অ্যঅন্ড ডেভেলপার্স লি., ঠিকানা-হাউজ নং-৩৭, রোড নং-১৮, সেক্টর-০৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০।
আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থাৎ সরকারের অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কতিপয় সদস্যের অনুমোদনের মাধ্যমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯০৯৬.৮৮ ডেসিমেল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে এই অর্থ অপরাধজনকভাবে প্রদান/ গ্রহণের।
দুদকের মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১০ সালের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী ‘নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়’ পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হলেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় একটি দাতব্য, কল্যাণমূখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থাৎ সরকারের সুপারিশ/অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্ট্রিজের কতিপয় সদস্যের অনুমোদন/সম্মতির মাধ্যমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমেল জমি ক্রয় নিয়ে জালিয়াতি ও দুনীতি করেছেন। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে কম দামে জমি ক্রয় করা সত্ত্বেও ওই জমির ক্রয় মূল্য অনেকবেশি দেখিয়ে প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করেন।
পরবর্তীতে বিক্রেতার নিকট থেকে নিজেদের লোকজনের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন। পরবর্তীতে নিজেরা উক্ত এফডিআর’র অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাত করেন।
অর্থাৎ, অবৈধ অপরাধলব্ধ আয়ের অবস্থান গোপনের জন্য উক্ত অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর মাধ্যমে মানিলন্ডারিং এর অপরাধও সংঘটন করেন। উক্ত অপরাধলব্ধ অর্থ স্থানান্তর, রুপান্তরের মাধ্যমে হস্তান্তরপূর্বক অবস্থান গোপন করে মানিলন্ডারিং এর মাধ্যমে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে।
আসামীরা বেআইনী কার্যকলাপ সংঘটিত করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তথা সরকারি অর্থ আত্মসাত করে নিজেরা অন্যায়ভাবে লাভবান হয়েছেন। উক্ত বেআইনি কার্যক্রম করার ক্ষেত্রে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির আশ্রয় গ্রহনপূর্বক কমিশন বা ঘুষের আদান প্রদান করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
Posted ৪:৪২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৭ মে ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy