শুক্রবার ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিত্যপণ্যে নিম্ন-আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস

আদম মালেক   |   শনিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২০   |   প্রিন্ট   |   221 বার পঠিত

নিত্যপণ্যে নিম্ন-আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস

সিন্ডিকেটের কারসাজিতে লাগামহীন নিত্যপণের বাজার। অথচ করোনার তাণ্ডবে দেশে বিপুলসংখ্যক মানুষ কর্মহীন। ফলে মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্ত এবং খেটে খাওয়া নিম্ন-আয়ের মানুষের জীবন অস্থির হয়ে উঠছে। তিন বেলা খাবার জোটাতে এসব মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। নিত্যপণ্য কিনতে গিয়ে বাজার থেকে ফিরে আসছেন অনেক নিম্ন-আয়ের মানুষ।

সরকার মিল পর্যায়ে চালের দাম নির্ধারণ করে দিলেও তা বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে মোটা চালের কেজি ৫০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কঠোর তদারকি ও জবাবদিহিতা না থাকায় বছরজুড়ে পুরোনো সিন্ডিকেটের কারসাজি চলে। বিভিন্ন সময়ে সরকারের একাধিক সংস্থা ওই সিন্ডিকেট সদস্যদের চিহ্নিত করলেও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। এ কারণে তারা বিভিন্ন উৎসবসহ মৌসুম ধরে একাধিক পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার অস্থিতিশীল করছে।

নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষের প্রধান খাবার চাল, ডাল, আলু। আলুর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। সেই পুরোনো সিন্ডিকেটের কারসাজিই মূল কারণ। বাজার তদারক সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বলছে, আলুর দাম নজরদারি করতে অধিদফতরের টিম হিমাগার থেকে শুরু করে পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান চালাচ্ছে। অথচ সরকার দুদফায় আলুর দাম বেঁধে দিলেও বাজারে সেই তদারকির প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। প্রথমে খুচরা পর্যায়ে আলুর কেজি সর্বোচ্চ ৩০ টাকা এবং পরবর্তীতে ৩৫ টাকা বেঁধে দেয়া হয়। তবে ভোক্তারা এক কেজি আলু ৪৫ টাকার নিচে কিনতে পারছেন না।

আলুর এই চড়া দামের সঙ্গে বাজারে সব ধরনের সবজিও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য সপ্তাহের ব্যবধানে গাজরের দাম কিছুটা কমেছে। বিপরীতে বেড়েছে বরবটির দাম। সব মিলিয়ে এখনও বেশিরভাগ সবজি অনেকটাই নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। আগের মতোই পেঁপে ছাড়া ৫০ টাকার নিচে সবজি মিলছে না।

রামপুরা বাজারে ৫০ টাকা কেজি আলু বিক্রি করা জামাল মিয়া বলেন, সরকার দাম বেঁধে দিলে কী হবে? আমরা তো পাইকারি বাজার থেকে কম দামে আলু কিনতে পারছি না। বেশি দামে আলু কিনে এনে কিভাবে কম দামে বিক্রি করবো?

তিনি বলেন, শ্যামবাজার থেকে দুই বস্তা আলু কিনেছি। প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৪১ টাকার ওপর। এই আলু থেকে বাছাই করা আলু ৫০ টাকা বিক্রি করেছি। একটু নিম্নমানের আলু ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। বাছাই করার সময় কিছু আলু ফেলে দিতে হয়েছে। গাড়িভাড়া, দোকান ভাড়া, কুলি খরচ যোগ করলে আসলে আলুতে আমাদের লাভ থাকে না।

এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে গাজরের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। খুচরা বাজারে গাজরের কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগে গাজরের কেজি ১০০ টাকা ছিল। খুচরার পাশাপাশি পাইকারিতেও গাজরের দাম কমেছে। পান্থপথ বৌবাজারের ব্যবসায়ী মো. শহিদুল্লাহ্ বলেন, গত সপ্তাহে এক কেজি গাজর ১০০ টাকায় বিক্রি করেছি। আজ পাইকারিতে কম দামে কিনতে পারায় ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। গাজরের মতো আরও কয়েকটি সবজির দাম কমেছে।

এদিকে আগের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো। গত কয়েক মাসের মতো এখনও ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো। এর সঙ্গে শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১১০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

গত সপ্তাহের মতো শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। তবে বরবটির দাম বেড়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি হয়েছে, তা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। বেগুন গত সপ্তাহের মতো ৮০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে করলারও। এক কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।

এই সবজিগুলোর পাশাপাশি বাজারে অন্য সবজিগুলোও স্বস্তি দিচ্ছে না। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, গত সপ্তাহের মতো ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। তবে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ঝিঙা, কাঁকরোল, ধুন্দল, কচুর লতির। ঝিঙার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, একই দামে বিক্রি হচ্ছে কচুর লতি।

স্বস্তি মিলছে না কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের দামেও। এক কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ২:৪৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রডের দাম বাড়ছে
(11192 বার পঠিত)

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।