| রবিবার, ২৯ মে ২০২২ | প্রিন্ট | 140 বার পঠিত
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে ইসলামি বীমার সমস্যা-সম্ভাবনা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ইসলামি বীমার ভূমিকা নিয়ে সম্প্রতি ইসলামি বীমা বিশেষজ্ঞ, বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, মুখপাত্র ও বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নাসির আহমাদ রাসেল। পাঠকদের জন্য এসব সাক্ষাৎকারের নির্বাচিত অংশ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছে ব্যাংক-বীমা-অর্থনীতি।
প্রশ্ন: ইসলামি বীমা বিধিমালা প্রণয়নের জন্য ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে আইডিআরএ। বিধিমালার একটি খসড়া অংশীজনের মতামত গ্রহণ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত জানতে চাই।
মোরশেদ আলম সিদ্দিকী: প্রচলিত বীমার পাশাপাশি বেশিরভাগ কোম্পানিরই ইসলামী বীমার উইন্ডো রয়েছে। তবে এটি যথাযথ পদ্ধতিতে হচ্ছে কী না সেই প্রশ্নও আছে। এক্ষেত্রে আইনি কিছু দুর্বলতা রয়েছে। আইডিআরএ ইসলামি বীমা বিধিমালা প্রণয়নের যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটি সফল হলে, শতভাগ না হলেও অন্তত ৯৯ ভাগ ইসলামি শরীয়াহ মোতাবেক ইন্স্যুরেন্স করা সম্ভব হবে।
প্রশ্ন: তাকাফুল বা ইসলামি জীবন বীমা ব্যবস্থা সম্পর্কে সংক্ষেপে আমাদেরকে বলুন।
মোরশেদ আলম সিদ্দিকী: ইসলামি বীমার মূল উদ্দেশ্য অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো। মূলত এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আমাদের দেশের বীমা কোম্পানিগুলো কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ইসলামী বীমার ধারণাটি আসার পরপরই এটি দ্রুত প্রসার লাভ করতে থাকে। মুসলিম প্রধান দেশ হওয়ায় এর জনপ্রিয়তাও বাড়ছে।
প্রশ্ন: ইসলামি জীবন বীমা কোম্পানি হিসেবে বীমা চুক্তি, তহবিল গঠন, বিনিয়োগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইসলামি শরীয়াহর বিধি-বিধান পরিপূর্ণভাবে প্রতিপালন সম্ভব হচ্ছে কী?
মোরশেদ আলম সিদ্দিকী: প্রচলিত আইনের কিছু বিধিবিধানের কারণে বেশ কিছু ক্ষেত্রে পরিপূর্ণভাবে ইসলামী শরীয়াহর বিধি-বিধান অনুসরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। পূর্ণাঙ্গ ইসলামি বীমা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে আইনি কাঠামোই বড় চ্যালেঞ্জ। ইসলামি বীমা বিধিমালা প্রণীত হলে এই চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণ সম্ভব হবে। তবে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স এর পক্ষ থেকে আমরা শরীয়াহ কাউন্সিল এর সাথে পরামর্শ করে চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব ইসলামি বিধি-বিধান পরিপালন করতে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে ইসলামি জীবন বীমা পদ্ধতি বাস্তবায়নে আপনাদেরকে কী ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে?
মোরশেদ আলম সিদ্দিকী: ইসলামি বীমা বিধিমালা আইন না থাকাটাই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ইসলামি বীমা বিধিমালা বা আইন প্রণয়ন হলে তেমন কোনো বাধা আর থাকবে না।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ইসলামি জীবন বীমা বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটাতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত জানতে চাই।
মোরশেদ আলম সিদ্দিকী: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ইসলামি বীমার মাধ্যমে যে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসা সম্ভব, ইসলামি ব্যাংকগুলো দেখলেই তা বোঝা যায়। মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে ইসলামি অর্থনীতির প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি। ইসলামি বীমাকে জনপ্রিয় করতে পারলে আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশাল ভূমিকা রাখবে।
প্রশ্ন: ইসলামি জীবন বীমা কোম্পানি হিসেবে বীমা চুক্তি, তহবিল গঠন, বিনিয়োগ ইত্যাদিক্ষেত্রে ইসলামি শরীয়াহর বিধি-বিধান পরিপূর্ণভাবে প্রতিপালন সম্ভব হচ্ছে কী?
মোরশেদ আলম সিদ্দিকী: আইনি কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে সেটি সরকারি বন্ড কেনার ক্ষেত্রে। এটি যদিও সুদভিত্তিক। আইনের কারণে এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। সরকারের কাছে আমাদের দাবি রয়েছে যদি শরীয়াহভিত্তিক কোন বন্ড বা বিনিয়োগ ব্যবস্থা চালু করা যায়, তাহলে ইসলামি বীমা যথার্থ হবে।
প্রশ্ন: ইসলামি ইন্স্যুরেন্সে আপনাদের বর্তমান ব্যবসায়িক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাই।
মোরশেদ আলম সিদ্দিকী: পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্স একটি তৃতীয় প্রজন্মের বীমা কোম্পানি। যাত্রার শুরুতেই এটি ইতিবাচক ইমেজ নিয়ে ব্যাপক প্রসার লাভ করে। যদিও এই মুহূর্তে আমরা কিছুটা ইমেজ সংকটে রয়েছি। ২০১৮ সালে এর মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি নতুন ব্যবস্থাপনায় নতুন আঙ্গিকে ঘুরে দাঁড়ানোর।
সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য ব্যাংক-বীমা-অর্থনীতির পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
Posted ৩:৩৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৯ মে ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy