বিবিএনিউজ.নেট | সোমবার, ০৮ এপ্রিল ২০১৯ | প্রিন্ট | 904 বার পঠিত
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি) বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব) আবদুল মান্নান এমপি।
গত ২০ মার্চ দুদকের চেয়ারম্যান বরাবরে দেওয়া এক চিঠিতে তিনি এই অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, এতে দেশের মানুষ প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারবে।
চিঠিতে মেজর মান্নান উল্লেখ করেন, বিআইএফসি একটি লিমিটেড কোম্পানি। এতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার রয়েছে। সেখানে আমার মালিকানাধীন বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে মাত্র ৫.৮২ শতাংশ।। আমার ব্যক্তিগত নামে কোনো শেয়ার নেই। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার সংরক্ষণ বা হস্তান্তর পুরোপুরি প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজনিজ এখতিয়ারভুক্ত। তাই প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তরের বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত নাম আসার কথা নয়।
বিআইএফসি থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ২ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে মেজর মান্নান প্রতিষ্ঠানটির সেবা কার্যক্রম শুরু করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং হংকংয়ের তিনটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের মাধ্যমে বিআইএফসির ৫০ শতাংশ মালিকানা গ্রহণ করেন। ২০১৫ সালে একটি মহল পুঁজিবাজার থেকে এ প্রতিষ্ঠানের ৫ শতাংশ পরিমাণ শেয়ার কিনে নেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতায় ২জন বিআইএফসিতে পরিচালক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। বিষয়টি অনুমোদনের জন্য পরবর্তীতে কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) উত্থাপিত হলে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের কণ্ঠভোটে তা নাকচ হয়ে যায়। তারপরেও পরিচালক পদে তারা পুনঃনিয়োগ পান। বিআইএফসির প্রকৃত শেয়ারহোল্ডারদের ভোটে নির্ধারিত পরিচালনা পর্ষদ ইতোমধ্যে আদালত অনুমোদন পেয়েছে।
শেয়ারহোল্ডারদের ভাষায়, প্রতিষ্ঠানটিকে কৃত্রিম লোকসান দেখিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারসহ ৩টি বিদেশি কোম্পানির মালিকানাধীন ৫০ শতাংশ শেয়ার বেদখল করা হয়। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৫ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক বিআইএফসি’র ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়ায় সংগঠিত অনিয়ম ও অনাদায়ী খেলাপি ঋণ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেন প্রতিষ্ঠানটির তত্কালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালককে। চিঠিতে এসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত বিশেষ পরিদর্শনে যখন অনিয়ম উদঘাটিত হয়, সেসময় মেজর মান্নান কোম্পানির চেয়ারম্যান ছিলেন না। তারপরেও বিষয়টি গোচরে আসায় প্রতিষ্ঠানের একজন উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি অনাদায়ী ঋণ পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নেন। ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে ৪২টি ঋণ গ্রহীতা কোম্পানির কাছে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩১৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে ১২০ কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হয়েছে। জানা গেছে, ঋণখেলাপি ৪২টি প্রতিষ্ঠানের নামে ইতোমধ্যে বিআইএফসি’র পক্ষ থেকে অর্থঋণ আদালতে মামলা করা হয়েছে। ঋণ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, ঋণের চুক্তিপত্রে উল্লেখিত সুদের হারের বাইরে তাদের অজান্তেই অতিরিক্ত সুদ এবং চক্রবৃদ্ধি সুদ ধার্য করে প্রতিটি ঋণের বিপরীতে বিশাল অংকের ঋণের বোঝা তৈরি করা হয়েছে।
Posted ১:৩৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৮ এপ্রিল ২০১৯
bankbimaarthonity.com | Sajeed