নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ২৭ এপ্রিল ২০২০ | প্রিন্ট | 395 বার পঠিত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা ভাইরাসের কারণে এখন মানুষ কাজ করতে পারছে না। যারা ছোটখাটো কাজ করে তাদের জন্য কষ্ট। আমরা সবার কথা চিন্তা করে প্রণোদনা দিয়েছি। তারা যাতে ব্যবসাগুলো চালু রাখতে পারে। যারা এর আগেই ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছেন তারা সুদ নিয়ে চিন্তা করবেন না। এই সুদ কতটুকু কমানো যায় সেটা নিয়ে আলোচনা হবে। করোনা ভাইরাসের জন্য বিশ্ব আজ স্থবির। লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে। বিশ্বের সব দেশে এ সমস্যা।
আজ (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে রাজশাহী বিভাগের আট জেলার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, চিকিৎসকসহ অন্যান্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন আমরা আর স্কুল-কলেজ খুলছি না। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। আমরা এ দুঃসময় কাটিয়ে উঠব। আবার কল-কারখানা খুলবে। আমাদের অর্থনীতি আবার সচল হবে। দুর্যোগ আসবে সেটা আবার চলে যাবে। আবার আলো আসবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আলেমরা মসজিদে সীমিত আকারে জামাত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সবাই বাসায় বসে ইবাদত করুন। এই মহামারি যাতে কেটে যায় দোয়া করুন।
এর আগে করোনার কারণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি অনুযায়ী দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ৫ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলা জানানো হয়েছিল। করোনা ভাইরাসের সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে কয়েক দফা সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সে ছুটি অনুযায়ী শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
যারা ছোটখাটো ব্যবসা করে, কৃষিকাজ করে তাদের কথা চিন্তা-ভাবনা করে প্রণোদনা দিয়েছি। সেখান থেকে মাত্র ২ শতাংশ ইন্টারেস্টে (সুদ) নিম্ন আয়ের মানুষকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, মানুষের কাজ নেই। বিশেষ করে একেবারে নিম্ন আয়ের লোক, এমনকি ছোটখাটো কাজ করে যারা খায় তাদের কষ্ট আমরা জানি। ছোটখাটো ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী লোক, কৃষক, জেলেসহ স্বল্প আয়ের লোকদের ২ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া হবে। যারা ঋণ নিয়ে করোনা ভাইরাসের কারণে দিতে পারেননি তাদের এখনই সুদ পরিশোধ করতে হবে না। এনিয়ে আমি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বসব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে সবচাইতে বড় কাজ মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা এবং মানুষের জীবন ও জীবিকার পথ উন্মুক্ত রাখা। এজন্য আস্তে আস্তে লকডাউন শিথিল করে দিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সবকিছু যাতে স্বাভাবিক হয়ে যায় সে দিকে নজর দিচ্ছি।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব এমন এক জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে এক বিরাট সমস্যা করোনা ভাইরাস। এই ভাইরাসের কারণে বিশ্ব স্থবির হয়ে গেছে। সবাই ঘরবন্দী এবং হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। উন্নত দেশ অনুন্নত দেশ সব দেশেই সমস্যা। এ ভাইরাস থেকে আমাদের দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য আমাদের সকলেই যেমন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার, নার্স সকলে প্রাণপণ কাজ করে যাচ্ছে। দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাই ঘরে থাকার অনুরোধ করার পর তারা ঘরে থাকার চেষ্টা করেছেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের নিরাপত্তাই আমাদের কাছে সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আইইসিডিআর প্রতিনিয়ত পরীক্ষা করেছে এবং যা হচ্ছে জানাচ্ছে।
করোনায় মৃত্যুবরণকারীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত এটি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। এটি অত্যন্ত একটি সংক্রামক ব্যাধি। দুশ্চিন্তার বিষয় এটা কখন কার হবে বোঝা যায় না। আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন মেনে কাজ করছি। ৩ হাজার ৪৬৪ জন ডাক্তার অনলাইনের মাধ্যমে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা স্বাস্থ্যকর্মীদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য সহযোগিতা দিচ্ছি। তাদের ভালো-মন্দ দেখছি এবং তারাও যেন সুরক্ষিত থাকতে পারে তার জন্য যা যা প্রয়োজন সেটা দিয়ে যাচ্ছি।
Posted ১:০৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৭ এপ্রিল ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan