শুক্রবার ২২ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

Ad
x

ব্যাংকের ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণে জটিলতা কেটেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ০৭ জুন ২০২০   |   প্রিন্ট   |   366 বার পঠিত

ব্যাংকের ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণে জটিলতা কেটেছে

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর ঘোষণা করা ক্যাশ ডিভিডেন্ড বিতরণে জটিলতা কেটেছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চাইলে এখন ব্যক্তি শ্রেণির স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য লভ্যাংশ ৩০ সেপ্টেম্বরের আগেও বিতরণ করতে পারবে।
পুঁজিবাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিষয় বিবেচনা করে ক্যাশ বিতরণের সুযোগ দেয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে দাবি করেন পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। এ বিষয়ে ইতিবাচক সায় দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ প্রেক্ষিতে আজকে নগদ লভ্যাংশ বিতরণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলো ব্যাংকগুলোর এ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। আজ রোববার (৭ জুন) লভ্যাংশ বিতরণের এই অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রোববার (০৭ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অধিকতর স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে এ মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে, শুধুমাত্র ব্যক্তিশ্রেণির (স্থানীয় ও বিদেশি) বিনিয়োগকারীদের অনুকূলে বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর্যুক্ত সার্কুলার এবং প্রচলিত অন্যান্য আইনের এ সংক্রান্ত বিধি-বিধান পরিপালন সাপেক্ষে ২০১৯ সনের জন্য ঘোষিত নগদ লভ্যাংশ ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ তারিখের পূর্বে বিতরণ করা যাবে।

এর আগে চলতি বছরের ১১ মে চলমান করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকে বার্ষিক লভ্যাংশ (ডিভিডেন্ট) ঘোষণার নতুন নীতিমালা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূলধন সংরক্ষণের ভিত্তিতে তিনটি ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদসহ মোট ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে ব্যাংকগুলো। তবে ২০১৯ সালের সমাপ্ত বছরের ঘোষিত লভ্যাংশ ৩০ সেপ্টেম্বরের আগে বিতরণ করা যাবে না।

ওই সার্কুলারে বলা হয়, করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে শীর্ষ চাপ হতে উত্তরণের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন প্রণোদনা ঘোষণা করেছে; তা বাস্তবায়নে কার্যকর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতে সৃষ্ট চাপ মোকাবিলা করে ব্যাংকগুলো যাতে বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিতে যথার্থ অবদান রাখতে পারে সেই লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর মুনাফা বণ্টন না করে মূলধন শক্তিশালী করার মাধ্যমে পর্যাপ্ত তারল্য বাজার বজায় রাখা একান্ত অপরিহার্য।

ব্যাংকগুলোর আর্থিক সক্ষমতা এবং ব্যাংকের শেয়ারের বিনিয়োগকারীদের রিটার্নের বিষয়টি সার্বিকভাবে বিবেচনা করে ২০১৯ সালের সমাপ্ত বছরের জন্য ব্যাংকের শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাশ প্রদানের দেয়ার নতুন নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমান নিয়মে একটি ব্যাংকের মোট ঝুঁকি ভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি নূন্যতম সে পরিমাণ মূলধন হিসেবে রাখতে হয়। এর বাইরে আপতকালীন সুরক্ষা সঞ্চয় (কনজারভেশন বাফার) হিসেবে ব্যাংকগুলোকে ২০১৬ সাল থেকে অতিরিক্ত মূলধন রাখতে হচ্ছে। গত ডিসেম্বর শেষে আপতকালীন সঞ্চয়সহ প্রতিটি ব্যাংকের মূলধন সংরক্ষণের কথা সাড়ে ১২ শতাংশ। বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোতে মূলধন নির্ধারিত সীমার বেশি থাকলেও সরকারি ব্যাংকের প্রভাবে সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের মূলধন সংরক্ষণের হার দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

ব্যাংকের ডিভিডেন্ট ঘোষণার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে নির্দেশনা দিয়েছে তা হলো, ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণ সহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ২০১৯ সালে মূলধন সংরক্ষণে কোনো সুবিধা না নিয়ে যে সব ব্যাংক আড়াই শতাংশ আপতকালীন সুরক্ষা সঞ্চয়সহ (কনজারেবশন বাফার) কমপক্ষে সাড়ে ১২ শতাংশ বা তারও বেশি মূলধন সংরক্ষণ করেছে ওই সব ব্যাংক তাদের সামর্থ্য অনুসারে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদসহ ৩০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে।

মূলধন সংরক্ষণে কোনো সুবিধা না নিয়ে যে সব ব্যাংক আড়াই শতাংশ আপতকালীন সুরক্ষা সঞ্চয়সহ কমপক্ষে ১১ দশমিক ২৫ থেকে সাড়ে ১২ শতাংশ পর্যন্ত মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে সে সকল ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে তাদের সামর্থ্য অনুসারে সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ নগদসহ মোট ১৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে।

সার্কুলারে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ২০১৯ সালে মূলধন সংরক্ষণে সুবিধা নিয়েছে তারা তা সমন্বয় করার পর যদি আপতকালীন সুরক্ষা সঞ্চয়সহ ১১ দশমিক ২৫ থেকে সাড়ে ১২ শতাংশ পর্যন্ত মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয় তাহলে সে সব ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে তাদের সামর্থ্য অনুসারে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ নগদসহ মোট ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে। এছাড়া যাদের আপতকালীন সুরক্ষা সঞ্চয়সহ ন্যূনতম মূলধন ১১ দশমিক ২৫ শতাংশের কম বা ন্যূনতম মূলধন ১০ শতাংশ হবে তারা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ স্টক (বোনাস) ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারবে।

২০১৯ সালের সমাপ্ত বছরের ঘোষিত লভ্যাংশ ৩০ সেপ্টেম্বরের আগে বিতরণ করতে পারবে না ব্যাংকগুলো।

যে সব ব্যাংক ২০১৯ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণীর ভিত্তিতে ইতিপূর্বে ডিভিডেন্ট ঘোষণা করেছে সে সব ব্যাংক ঘোষিত ডিভিডেন্টের পরিমাণ সার্কুলের নির্দেশনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে তা স্থগিত করে যথাশীঘ্রই সংশোধন করতে হবে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ (২০১৮ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এই নির্দেশনা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

Facebook Comments Box
top-1
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৬:০৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৭ জুন ২০২০

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
প্রকাশক : সায়মুন নাহার জিদনী
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।