আদম মালেক | বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট | 418 বার পঠিত
ব্যাংক ম্যানেজারদের কাছে এক আতঙ্কের নাম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম তাহের। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রভাব খাটিয়ে হুমকি, রক্তচক্ষু, গ্রুপিং, লবিংসহ কোনো কিছুই বাকি রাখেননি তিনি। তার কর্ম এলাকা রাজশাহীতে তফসিলি ব্যাংকের ম্যানেজারদের কাছে তিনি এখন আতঙ্ক হিসেবে দেখা দিয়েনে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, জমি বন্ধক রেখে আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের রাজশাহী শাখা থেকে ঋণ নেয় জনতা ট্রেডার্স ও জনতা ব্রিক্স। দীর্ঘদিন ঋণ পরিশোধ না করায় প্রতিষ্ঠানগুলো খেলাপি হয়। আর এ বন্ধকী সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে উঠেপড়ে লেগেছে সাইদুল ইসলাম তাহের। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় জনগণের আগ্রহে এ জমি তাহের কিনতে রাজি হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, সাইদুল ইসলাম তাহের বাংলাদেশ ব্যাংকের রাজশাহী অফিসে কর্মরত একজন উপ-ব্যবস্থাপক। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রভাব খাটিয়ে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি গ্রাহক জনতা ট্রেডার্স ও জনতা ব্রিকসের বন্ধকী সম্পত্তি কিনতে চান। কিন্তু অন্যান্য গ্রাহকের তুলনায় মূল্য কম দেয়ায় মালিকরা তার কাছে সম্পত্তি বিক্রি করতে রাজি হননি। এ কারণে মালিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও অন্যান্য আগ্রহী গ্রাহকদের হুমকি দিয়েছেন তাহের। তার কারণেই অন্য গ্রাহকের কাছে জমিটি বিক্রি করতে পারেননি মালিক। তাহেরের কাছে ওই জমি বিক্রি না করার কারণগুলোর মধ্যে কমদাম প্রস্তাব এবং অতিরিক্ত দুই বিঘা জমির দাবি অন্যতম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, সাইদুল ইসলাম তাহেরের কন্যা সাদিয়া তাসনিম এবং স্ত্রী হাসিনা পারভীনের নামে ভিন্ন ব্যাংকে কোটি টাকার লেনদেন করা হয়েছে। গত বছরের নভেম্বর মাসে আইএফআইসি ব্যাংকে মেয়ের হিসেবে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা জমা করেন তাহের। এছাড়া মেয়ে ও স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসেবে প্রায় তিন কোটি টাকার স্থিতি পেয়েছে পরিদর্শক দল।
জানতে চাইলে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের রাজশাহী শাখার ব্যবস্থাপক নাজমুল হুদা বলেন, এনআই অ্যাক্টে মামলা হওয়ায় জনতা ট্রেডার্স এবং জনতা ব্রিকসের মালিককে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলা থাকার কারণে আমরা এখনো (বন্ধকী সম্পত্তি) নিলামের কোনো উদ্যোগ নেইনি। গ্রাহক যে কোনোভাবে টাকা পরিশোধ করে দিলে আমরা মামলা উঠিয়ে নেবো। বিষয়টি নিয়ে কিছুদিন আগে তদন্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
রাজশাহীর এক ব্যাংক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জমি কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত সাইদুল ইসলাম তাহের। রাজশাহীর প্রতিটি ব্যাংকের প্রত্যেকটি শাখার ম্যানেজারের কাছে তিনি ত্রাসের মতো। যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা, তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আমরা সম্মান করি। কিন্তু এ সম্মানের অপব্যবহার করে আসছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে সাইদুল ইসলাম তাহেরর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কথা বলতে রাজী হননি।
Posted ১১:১০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১
bankbimaarthonity.com | rina sristy