আবুল কাশেম | রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট | 138 বার পঠিত
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আওতাধীন এলাকায় ভবন বা স্থাপনা নির্মাণে অন্য কোনো সংস্থা কিংবা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বা ছাড়পত্র দেওয়ার এখতিয়ার নেই। রাজউকের এখতিয়ারাধীন ১৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ)-এর গেজেট গত ২৩ আগস্ট প্রকাশের পর অন্য কোনো সংস্থা কিংবা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণে ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষমতা আর নেই। ড্যাপের এই গেজেট প্রকাশের আগে রাজউক আওতাধীন এলাকায় উত্তরে গাজীপুর, দক্ষিণ-পশ্চিমে নারায়ণগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ, পূর্বে কালীগঞ্জ ও রূপগঞ্জ এবং পশ্চিমে সাভার পৌরসভা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভবন নির্মাণের অনুমোদন বা ছাড়পত্র প্রদান করা হতো।
সম্প্রতি রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মুহম্মদ কামরুজ্জামানের স্বাক্ষরে ইস্যু করা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, ড্যাপের চিহ্নিত নির্ধারিত এলাকায় ‘ভবন বা স্থাপনা’ নির্মাণে অন্য কোনো সংস্থা কিংবা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বা ছাড়পত্র দেওয়ার এখতিয়ার নেই।
রাজউকের জারি করা ওই চিঠি রাজউকের আওতাধীন এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রকৌশলী এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের বরাবর পাঠানো হয়েছে।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক (খ) ও (গ) নম্বর স্মারকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে রাজউক কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ অধিক্ষেত্রাধীন ভবন, স্থাপনা বা অবকাঠামো নির্মাণের অনুমোদন প্রদান ওইসব স্থানীয় সরকার এবং সংস্থার ‘ক্ষমতাবহির্ভূত কর্মকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ আছে। রাজউক আইন, ১৯৫৩-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে গঠিত বিধিবদ্ধ সরকারি সংস্থা। উক্ত আইনের ৭৪ ধারা অনুযায়ী সরকার রাজউকের এখতিয়ারাধীন ১৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে চলতি বছরের (২০২২ সাল) ২৩ আগস্ট ড্যাপের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।
রাজউকের এই ড্যাপের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভবন বা স্থাপন নির্মাণের অনুমোদন, ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র অথবা অনাপত্তিপত্র প্রদানে স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করতে হবে। রাজউকের আওতাধীন পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদকে তাদের এলাকায় ভবন, স্থাপনা নির্মাণের অনুমোদন দেওয়ার একমাত্র এখতিয়ার রাজউকের। ফলে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থা কিংবা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন প্রদান না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নগর উন্নয়ন আইন, ১৯৫৩-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে গঠিত বিধিবদ্ধ সরকারি সংস্থা। উক্ত আইনের ৭৪ ধারা অনুযায়ী সরকার রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এলাকা নিয়ে গঠিত ড্যাপের গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।
এ গেজেট অনুযায়ী রাজউক আওতাধীন এলাকা উত্তরে গাজীপুর, দক্ষিণ-পশ্চিমে নারায়ণগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ, পূর্বে কালীগঞ্জ ও রূপগঞ্জ এবং পশ্চিমে সাভার। নগর উন্নয়ন আইন, ১৯৫৩ এবং ঢাকা মহানগর ইমারত (নির্মাণ, উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও অপসারণ) বিধিমালা, ২০০৮ অনুযায়ী রাজউকের আওতাধীন এলাকায় ইমারত নির্মাণ অনুমোদনের জন্য নগর উন্নয়ন আইন, ১৯৫৩ এর ৭৭ ধারানুযায়ী রাজউক একমাত্র ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ। তাই এসব এলাকাসমূহে রাজউক ব্যতীত অন্য কোনো সংস্থা কর্তৃক নকশা অনুমোদন করা বর্ণিত আইন ও বিধিমালা পরিপন্থী।
এদিকে রাজউকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, রাজউকের আওতাধীন এলাকায় ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপের) গেজেট প্রকাশের আগে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন থেকে নতুন ভবন বা স্থাপনা নির্মাণে ছাড়পত্র দেওয়া হতো। অনেক সময় ওইসব ছাড়পত্র নিয়ে লোকজন মান সম্পন্ন ভবন কিংবা স্থাপনা নির্মাণ করা হতো না। এটা একটা বড় ধরনের সমস্যা। তিনি বলেন, গত ২৩ আগস্ট রাজউকের ড্যাপের গেজেট প্রকাশের পর প্রায় আড়াই মাস অতিবাহিত হয়েছে। এরমধ্যে যাতে ড্যাপের এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, নারায়নগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের এলাকায় আগের মতো নতুন ভবন বা স্থাপনা নির্মাণে ছাড়পত্র আর না দেয়। সে জন্যই রাজউক থেকে আগাম সতর্ক করা হয়েছে। কারণ নতুন ভবন বা স্থাপনা নির্মাণের আগে যাচাই বাছাই করে ছাড়পত্র দেওয়ার সক্ষমতা তো তাদের নেই। তিনি আরও বলেন, ড্যাপের প্রকাশিত গেজেটের অনেক ভাল পরামর্শ, শর্ত এবং নির্দেশনা রয়েছে। এসব পর্যালোচনা করেই নতুন ভবন নির্মাণের জন্য রাজউক থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে।
Posted ৮:২৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২
bankbimaarthonity.com | rina sristy