বৃহস্পতিবার ৯ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাসানচরে যাচ্ছেন আরো পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা

বিবিএনিউজ.নেট   |   বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২১   |   প্রিন্ট   |   235 বার পঠিত

ভাসানচরে যাচ্ছেন আরো পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা

তৃতীয় দফায় আরো পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচর যাবার প্রস্তুতি নিয়েছেন। দ্বিতীয় দফায় ভাসানচরে যাবার এক মাসের মাথায় বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার চার ভাগে তাদের ক্যাম্প ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

প্রথম ভাগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্প ছেড়েছেন কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে মানবিক আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের একটি দল। এমনটি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে রোহিঙ্গাভর্তি প্রথম ১৮টি বাস ট্রানজিট পয়েন্ট অতিক্রম করে বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।

পরে বিকেলে আরো ডজনাধিক বাস চট্টগ্রামের পথে বের হওয়ার কথা রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কেউ এবার এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না।

আগের মতো উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ এলাকা থেকে দিনে দুভাগে ভাগ করে বাসগুলো চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবার প্রস্তুতি রেখেছেন সংশ্লিষ্টরা। উখিয়ার মূল ক্যাম্প ছাড়াও পুরো ৩৪ ক্যাম্প থেকেই ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গারা ট্রানজিট পয়েন্টে বুধবার বিকেল থেকে আসতে শুরু করে।

বাকিরা বৃহস্পতিবার সকাল ও দুপুরে এসে পৌঁছায়। শুক্রবার যারা ভাসানচরে পথে বের হবে তারা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ও শুক্রবার ট্রানজিট পয়েন্ট আসবে বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতারা। দুদিনের যাত্রায় প্রায় ৮০টি বাস, একাধিক ট্রাক ও প্রয়োজনীয় অন্য যানবাহন প্রস্তুত রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এবারেও স্বেচ্ছায় যেতে রাজি হওয়া কমপক্ষে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পৌঁছে দেয়া হবে। বুধবার বিকেল থেকে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যেতে উখিয়া কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্টে রাখা হয়।

নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ক্যাম্পের মাঝিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দু’দফায় ভাসানচরে যাওয়াদের জীবন চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে এখন অনেকে আগ্রহী হয়ে অপেক্ষা করছে। এখন রোহিঙ্গারা ভাসানচরে যেতে নিজেরাই তালিকায় নাম লিখিয়েছে।

উখিয়ার তাজনিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘আমার বøক থেকে বেশ কয়েকটি পরিবার ভাসানচরে যাচ্ছে। তাদের কাউকে জোর করা হয়নি’।

কুতুপালং মধুরছরা ক্যাম্পের সাবেক মাঝি মোহাম্মদ নুর বলেন, এ ক্যাম্প থেকেও ১২টি পরিবার নোয়াখালীর ভাসানচরে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, যারা যাচ্ছে তারা বলছেন-‘ মিয়ানমার যে তালবাহানা শুরু করেছে তাতে স্বল্প সময়ে নিজ দেশে ফেরার কোনো সম্ভাবনা নেই। সেখানে পাহাড়ি ঝুপড়ির চেয়ে দ্বীপের সুন্দর দালান অনেক উত্তম। ক্যাম্পে একটু জোরে বাতাস হলে চালা উড়ে যাবার ভয়টা অন্তত থাকবে না’।

সূত্র মতে, নোয়াখালীর হাতিয়ায় সাগরের মাঝে ভেসে থাকা ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য সব ধরনের সুবিধা সংবলিত ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ঝড় জলোচ্ছ¡াস থেকে সুরক্ষায় রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থাও। বসবাসের যে ব্যবস্থা করা হয়েছে তা দেখতে গত সেপ্টেম্বরে দুই নারীসহ ৪০ রোহিঙ্গা নেতাকে সেখানে নিয়ে যায় সরকার। ভাসানচরের আবাসন ব্যবস্থা দেখে মুগ্ধ হয়ে তারা ক্যাম্পে ফিরে অন্যদের ভাসানচরে যেতে উদ্বুদ্ধ করে।

এর আগে ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় এক হাজার ৬৪২ আর দ্বিতীয় দফায় ৪২৮টি পরিবারের এক হাজার ৮০৫ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। দুই দফায় স্থানান্তরিত রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন তিন হাজার ৪৪৭। তারও আগে মালয়েশিয়া যেতে গিয়ে সমুদ্র উপকূলে আটক আরও তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সেখানে নিয়ে রাখা হয়।

কোনো বলপ্রয়োগ ছাড়াই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে যাওয়ার ইতিবাচক মনোভাব দেখে তাদের সেখানে পাঠানোর বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয় সরকার। রোহিঙ্গাদের প্রথম ও দ্বিতীয় দলটিকে নিরাপদে ভাসানচরে পাঠাতে পারায় আরও অনেক পরিবার সেখানে যেতে আগ্রহী হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রশাসনের এক দায়িত্বশীল সূত্র।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ১:৫৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২১

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।