নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ১৪ মার্চ ২০২১ | প্রিন্ট | 456 বার পঠিত
মার্জিন ঋণের সুদ এক অংকে (৯ শতাংশে) নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ। পাশাপাশি মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ব্রোকারেজ কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান বরাবরে চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি এ. কে. এম. মিজান-উর রশিদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের বরাবরে পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে শুরু করে ২০২০ সাল পর্যন্ত পুঁজিবাজারে মহাধ্বসের কবলে পড়ে লুৎফর রহমান, মো. হানিফ, ঢাকার গোপীবাগের লিয়াকত হোসেন যুবরাজ, খিলগাঁয়ের আমিনুল ইসলাম স্বপন, বরিশালের মফিজ উদ্দিন, খুলনার সাইদুর রহমান, টঙ্গীর রনি জামান, চট্টগ্রামের গোলাম মর্তুজাসহ আমাদের জনামতে ৪৭ জন বিনিয়োগকারী কেউ গলায় ফাঁস দিয়ে, কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। বহু-বিনিয়োগকারী মার্জিন ঋণের সুদের কারণে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে। পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব হওয়ার অন্যতম একটি কারই হলো, উচ্চ সুদে মার্জিন লোন নিয়ে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা। মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলো অনৈতিক ভাবে উচ্চ সুদে মার্জিন লোন দিয়ে বিনিয়োগকারীদের সর্বশান্ত করেছে। মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে তৎকালীন বি.এস.ই.সি ফোর্স সেল না দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া সত্ত্বেও তারা ফোর্স সেল দিয়ে পুঁজিবাজারে আতংক সৃষ্টি করেছে এবং বিনিয়োগকারীরা সর্বশান্ত হয়েছে। কোন কোন হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক অনৈতিক ভাবে উচ্চ সুদে যেমন ১৭শতাংশ থেকে ১৯শতাংশ সুদে মার্জিন লোন দিয়ে বিনিয়োগকারীদের সর্বশান্ত করেছে। বিনিয়োগকারীদের লোভ দেখিয়ে, ভুল বুঝিয়ে ২০০শতাংশ থেকে ৩০০শতাংশ পর্যন্ত মার্জিন লোন দিয়েছে। পুঁজিবাজারে ধ্বস নামলে উচ্চ সুদের কারণে মার্জিন লোনধারী বহু বিনিয়োগকারীর ইক্যুইটি মাইনাস হয়ে যায় এবং ফোর্স সেলের কারণে তারা নিঃস্ব হয়। পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারিয়ে ফেলে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও বর্তমান কমিশন শেয়ার বাজার উন্নয়নের জন্য বহু প্রসংশনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য সরকার যেখানে ব্যাংকগুলোর সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিট (৯শতাংশ) নির্ধারণ করেছেন, সেখানে মার্জিন লোনের সুদ ১২শতাংশ কেন হবে? তাই সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মার্জিন ঋণের সুদ একক অংকে নির্ধারণ করার জোর দাবি জানাচ্ছি। দ্বিতীয়ত, সারা বিশ্বে ১৯৮৭ সালে শেয়ার বাজারে মহাধ্বসের পর মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো ব্রোকারেজ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে, কারণ পুঁজিবাজারে বার বার মহাধ্বসের মূল কারণই হলো মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর কর্পোরেট ম্যানুপুলেশন। তাই মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ব্রোকারেজ কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। আপনার কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে পুঁজিবাজারে ধীরে ধীরে আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। তাই ব্যাংক গুলোর সুদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পুঁজিবাজারে
বিনিয়োগকৃত মার্জিন লোনের সুদ ৯ শতাংশ করার জোড় দাবি জানাচ্ছি। এতে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং মার্জিন লোনে জর্জরিত বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে। পাশাপাশি মার্চেন্ট ব্যাংক গুলোর সকল ধরনের ব্রোকারেজ কার্যক্রম বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
উপরোক্ত বিষয় বিবেচনা করে পুঁজিবাজারের বৃহত্তর স্বার্থে মার্জিন লোনের সুদ এক অংকে (৯ শতাংশ) নির্ধারণ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সকল ধরনের ব্রোকারেজ কার্যক্রম বন্ধ করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।
সম্পাদনা: এম এ খালেক
Posted ১২:০৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৪ মার্চ ২০২১
bankbimaarthonity.com | saed khan