শনিবার ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রিমান্ড শেষে কারাগারে সোনালী লাইফের বরখাস্তকৃত সিইও রাশেদ বিন আমান

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   438 বার পঠিত

রিমান্ড শেষে কারাগারে সোনালী লাইফের বরখাস্তকৃত সিইও রাশেদ বিন আমান

অর্থ আত্মসাৎ মামলায় দেশের পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের বরখাস্তকৃত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর রাশেদ বিন আমানকে একদিনের রিমান্ড শেষে আজ বুধবার দুপুরে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রাজধানীর রামপুরা থানায় দায়ের হওয়া মামলায় তিনি রিমান্ডে ছিলেন।

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পক্ষ থেকে করা অর্থ আত্মসাৎ মামলায় জামিনে ছিলেন রাশেদ বিন আমান। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আদালতে উপস্থিত হয়ে পুনরায় জামিন আবেদন করলে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কোম্পানির পক্ষ থেকে রাশেদ বিন আমান ও তার দুর্নীতির সহযোগীদের বিরুদ্ধে ৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ মোস্তফা গোলাম এমরান বাদী হয়ে রামপুরা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এতে মীর রাশেদ বিন আমানসহ কোম্পানির সাবেক সাত কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে অর্থ আত্মসাৎসহ হুমকি প্রদানের অপরাধে পেনাল কোড ১৮৬০ এবং দন্ডবিধির ৪০৮/৪২০/৫০৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয় (মামলা নং-৪ তারিখ ১১/০১/২০২৪)।

রামপুরা থানার পক্ষ থেকে রাশেদ বিন আমানকে রিমান্ডে দেওয়ার আবেদন করলে আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রাশেদ বিন আমানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিদেশে বাড়ি-গাড়ি কেনারও অভিযোগ উঠেছে। দেশেও কিনেছেন বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট। কোম্পানির কর্মচারীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজের পক্ষে কাজ করতে বাধ্য করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অন্যদিকে কোম্পানির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে (আইডিআরএ) অভিযোগ করেছেন বরখাস্ত সিইও রাশেদ।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ২৭ জুন মীর রাশেদ বিন আমান কোম্পানি থেকে অবৈধভাবে ১ কোটি ও ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিজ অ্যাকাউন্টে জমা ও আত্মসাৎ করেন। তদন্ত কমিটি আরও বলছে, মীর রাশেদ বিন আমান কোনো প্রকার বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই বেতনের বাইরে কোম্পানি থেকে নিজের বিভিন্ন ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ২০২০ সালে ৩ কোটি ৯৯ লাখ, ২০২১ সালে ৬ কোটি ৯৫ হাজার, ২০২২ সালে ১ কোটি ২১ লাখ এবং ২০২৩ সালে ৩ কোটি ৮ লাখ টাকা সরিয়েছেন। এ ছাড়াও সিইও হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর বিভিন্নভাবে কোম্পানির কোটি কোটি টাকা নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়েছেন মীর রাশেদ বিন আমান।

এসবের বাইরে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে মীর রাশেদ বিন আমানের বিরুদ্ধে ৭০টিরও বেশি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে রাশেদ বিন আমানের দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে আইডিআরএ কর্মকর্তারা জানান, তদন্ত চলমান কোনো বিষয় নিয়ে তাদের মন্তব্য করার কোনো সুযোগ নেই।

গত জানুয়ারি মাসে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে রাশেদ জানান, সাধারণ বীমা গ্রহীতাদের জমা করা প্রিমিয়ামের টাকা (লাইফ ফান্ড) নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের ব্যক্তিগত কাজে ইচ্ছা মতো খরচ করছেন সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস। পরিচালনা পর্ষদে থাকা তার পরিবারের সদস্যরাও একইভাবে নগদে ও চেকে অর্থ নিয়েছেন। এভাবে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার লাইফ ফান্ড থেকে অন্তত ৩০০ কোটি টাকা তছরুপ করেছেন তারা।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে নিবন্ধন পাওয়া নতুন প্রজন্মের জীবন বীমা কোম্পানি সোনালী লাইফের সারাদেশে ২০৫টি শাখা। কোম্পানিটির বীমা গ্রাহক সাত লাখের বেশি। এজেন্ট রয়েছে ৩০ হাজারের মতো, এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন প্রায় ৮০০ জন।

Facebook Comments Box
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

Posted ৯:১৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

bankbimaarthonity.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  
প্রধান সম্পাদক: মোহাম্মাদ মুনীরুজ্জামান
নিউজরুম:

মোবাইল: ০১৭১৫-০৭৬৫৯০, ০১৮৪২-০১২১৫১

ফোন: ০২-৮৩০০৭৭৩-৫, ই-মেইল: bankbima1@gmail.com

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: পিএইচপি টাওয়ার, ১০৭/২, কাকরাইল, ঢাকা-১০০০।