আন্তর্জাতিক ডেস্ক | মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল ২০২০ | প্রিন্ট | 374 বার পঠিত
নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধে জারীকৃত লকডাউন শিথিল করার সময় এখনো আসেনি বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার মতে, এখনই লকডাউন শিথিল করলে দেশটিতে দ্বিতীয় দফায় প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হতে পারে। আর তিনি এ ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। খবর রয়টার্স।
স্থানীয় সময় সোমবার বরিস জনসন নভেল করোনাভাইরাসকে রাস্তার অদৃশ্য অপরাধীর সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ব্রিটিশ নাগরিকরা এ শত্রুর বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই করেছে। গত ছয় সপ্তাহ ধরে দেশের মানুষ যে তীব্র ঐক্য ও সংকল্প প্রদর্শন করেছে, তা অব্যাহত থাকলে নিশ্চিতভাবে এ মহামারী পরাজিত হবে। তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, আপনারা আর একটু ধৈর্য ধরুন। কারণ আমার বিশ্বাস, আমরা এ সংকটের প্রথম ধাপের প্রায় শেষ প্রান্তে। এতদিনের সব কষ্টের শেষে সফলতা প্রায় হাতের মুঠোয় চলে এসেছে।
এদিকে লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি মারাত্মক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশটিতে দিন দিন বেড়ে চলেছে বেকারত্বের হার। দেউলিয়াত্বের ঝুঁকিতে পড়েছে বহু প্রতিষ্ঠান, দেখা দিয়েছে মন্দার শঙ্কা। এ বিষয়ে জনসন বলেন, তিনি পরিস্থিতি নিয়ে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল। এ অবস্থায় লকডাউন তুলে নেয়া কিংবা শিথিল করার বিষয়ে তিনি বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
এদিকে ব্রিটেনে এরই মধ্যে কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ। কিন্তু বরিস জনসনের মতে, দেশটিতে এখনো সংক্রমণ ও মৃত্যু চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেনি। ফলে এখনই তিনি লকডাউন শিথিল করার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চাইছেন না। তিনি বলেন, আমরা ঠিক এখনই বলতে পারছি না যে কত দ্রুত কিংবা ধীরে পরিবর্তন আসবে। কবে লকডাউন শিথিল করা হতে পারে তা-ও এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে আগামী দিনগুলোয় সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে নিয়মিত স্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরা হবে। তাছাড়া লকডাউন বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সরকার সর্বোচ্চ মাত্রায় স্বচ্ছতা বজায় রাখবে।
তার মতে, ব্রিটিশ জনগণকে অবশ্যই দ্বিতীয় দফার সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়টি বুঝতে হবে। দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ দেখা দিলে শুধু স্বাস্থ্য খাতেই বিপর্যয় নেমে আসবে না। একই সঙ্গে এরই মধ্যে সংকটাপন্ন অর্থনীতি আরো খাদের কিনারায় চলে যাবে।
মূলত কঠোর লকডাউন পদক্ষেপের কারণে ব্রিটেন বর্তমানে গত তিন শতকের মধ্যে সবচেয়ে গভীর মন্দার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ অবস্থায় বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি কবে নাগাদ কীভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরে যাবে, তা নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে বরিস জনসনের সরকার, দল ও উপদেষ্টাদের মধ্যেও।
জনসন প্রাথমিকভাবে লকডাউন ঘোষণার বিষয়ে একমত না হলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনেন। এরপর ২৩ মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হলেও তিনি বিরোধী দল ও কিছু চিকিৎসকের সমালোচনার মুখে পড়েন। তাদের অভিযোগ, ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বরিস জনসন সময়মতো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। একই সঙ্গে ভাইরাসে আক্রান্তদের শনাক্তকরণ পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা যন্ত্রের সরবরাহ না থাকার কারণেও তাকে সমালোচনার শিকার হতে হয়।
Posted ১০:৪২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল ২০২০
bankbimaarthonity.com | saed khan